আজ সকালে এলাকার প্রত্যেক
স্বামী একটা খাম পেয়েছেন পাঞ্জাবি বা শার্ট বা বারমুডার পকেটে। মুশকিল হচ্ছে, যে খামটা
খোলা যাচ্ছে না। কাগজের, অথচ টানো, ছেড়ো, উপড়ে ফেলো, অল আন-সাক্সেস্ফুল। খামটা পেয়েই নিজ
নিজ পত্নীকে তা বলাতে তারা হেসেই উড়িয়ে দিয়েছে। শুধু স্বামীরাই দেখতে পাচ্ছে খামটা।
নিজের ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে যে বাকিদের সাথে বসে এ নিয়ে কথা বলবে, তারও সুযোগ দিচ্ছেনা
বৌয়েরা। আজ একটার পর একটা কাজ চাপিয়ে যাচ্ছে। সব থেকে ভয়ঙ্কর ঘটনা হলো, মনে মনে গালাগাল
দিলে বৌ বুঝে যাচ্ছে আর উল্টে দশটা বৃহত্তর এবং জোরাল ঝাড়ছে। রাত্রেবেলা স্বামীদের
তখন কুকুরের মতো জিভ বেরিয়ে গেছে। এলাকার স্বামীদের মধ্যে জয়ন্তও একজন। রাতের বাসনগুলো
মেজে যখন আর শরীর চলছেনা, হঠাৎ ফোন।
-হ্যালো
-আমি রুদ্র, বাড়ির বাইরে
চলে আসুন এখুনি, অপেক্ষা করছি।
-আজ না আর পারছিনা বুঝলেন?
কে বলুনতো আপনি? ব্যাডমিন্টন ম্যাচের জন্য ফোন করে থাকলে বলে দি, আজ যা গেছে, কাল যদি
বেঁচে থাকি, তাহলে ফিল্ডে যাবো, না হলে আপনারা দেখে নিন। রাখছি।
-এখুনি আসবেন, না টেনে বাইরে
নিয়ে আসবো?
-আরেব্বাবা থ্রেট দিচ্ছেন
নাকি হে? কারোও কাছে কোনো ধার আছে বলে তো জানি না! সুদীপের কাছে একটা বিয়ার ডিউ আছে ব্যাস।
আপনি কে বলুনতো? ফোন রাখ ....... এই অব্দি
বলতেই হঠাৎ একটা ঝড়, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জয়ন্ত দরজার বাইরে। সৎবিৎ ফিরতেই জয়ন্ত দেখে
আশপাশের সব স্বামীরাও দাঁড়িয়ে, সব হতভম্ব। ঠিক তখনই-
-সরি, একটু ফোর্স করতেই
হলো, আপনারা থ্রেট আর নির্দেশের তফাৎ জানেন না। তাছাড়া একটু ব্যস্ত, তাই শক্তির
ব্যবহার করতেই হলো।
স্বামীরা হতভম্ব, এদিক ওদিক
চাইছে। শব্দ আসছে, কিন্তু কিচ্ছুটি দেখা যাচ্ছেনা। অথচ একটি সুপারপাওয়ারের ব্যাপারস্যাপার
তো আছেই মনে হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে আবার সেই কণ্ঠ
-আমাকে দেখার ঋদ্ধি তোদের
এখনো হয়ে ওঠেনি রে ছোকরার দল। খুব দরকারি যে কটি কথা বলতে এসেছি শোন। আজ তোরা সমস্ত
করেছিস, তোদের নিজের কাজের সাথে সাথে যা রোজ স্ত্রীয়েরা করে থাকে তাও। এই ট্রেলারটা যদি
রিপিট না হতে দেখতে চাস, তাহলে প্রতি শিবরাত্রিতে যে ড্রাম কে ড্রাম দুধ বইয়ে দেওয়ার
তোদের স্ত্রীয়েদের প্ল্যান তা বইয়ে দে পাশের বস্তির শিশুদের মধ্যে, মেয়েদের এক গ্লাস
বেশি দিস। আর ওর একফোঁটা দে আমার লিঙ্গে। এই ধরাধামে দুধের বন্যা নালায় না হয়ে হোক
রক্ত-মাংসের শরীরে। আর ভাবছিস, একথা একেবারে স্ত্রীয়েদের না বুঝিয়ে তোদের বোঝাচ্ছি
কেনো? সেটা তোরা জানিস। চলি।
**
উফফফ সবে সকাল সাড়ে ছয়,
ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো। বাপরে স্বপ্ন বটে। উফফফ। জয়ন্ত পাশ ফিরে বেশ তরিজুত করে আবার শুতে
গিয়ে দেখে মাথার পাশে, সেই খাম। ধড়াস করে উঠলো বুকটা। তাড়াতাড়ি খামটা খোলার চেষ্টা
করতেই খুলে গেলো। ভিতর থেকে বেরোলো একটা চিরকুট তাতে লেখা দুলাইন
“জন্ম আমার তাপ থেকে, অগ্নিচ্ছটা
থেকে।
তোদের মধ্যে রুদ্রোদয় হোক,
একে, একে।“