Monday, 28 January 2019

ব্যালান্সের চেষ্টা

- ডিভোর্স ছাড়া উপায় নেই রমিতদা। এ একেবারে নাজেহাল কেস। তুমিই ভালো আছো দিব্যি। আপেল খাচ্ছো। কামড়ে খাও, কেটে খাও। বাধা দেওয়ার কেউ নেই। আমার জীবনটা শালা কৈফিয়তের শপিং মল তৈরী হয়েছে।

- স্থির হও খোকা। সোমবার তো। চাকুরিজীবীদের দীর্ঘ্যশ্বাসে আকাশে বাতাসে একটু নেগেটিভ এনার্জি জেনারেট করেছে। এই নে, তুই ও একটা আপেল খা দেখি। কামড়ে খাবি খা। হুইস্কি বের করে ঢাল। দেখবি বেশ একটা স্বাচ্ছন্দ্যময় ওয়ার্ম ফিলিং আসছে। মনে হালকা চাপ তখনও থাকবে। তবে সেটা ব্যালান্সড।
এই যে আপেল এর হাঁকুপাঁকু মাটির দিকে ধেয়ে যাওয়া দেখে, স্যার নিউটন, ইউনিভার্স -এর প্রতিটি কণার মধ্যে এট্ট্রাকশন এর কথা বলেছিলেন। বিয়ে করেননি সারাজীবন। তাই মাখোমাখো আকর্ষণটুকুই দেখেছেন।

- তবেই বোঝো। শালা বিয়ে করেছো কি কেস খেয়েছো।

- বটেই। কিন্তু কেস ভালো। উইলিয়াম থমসন বিবাহিত। টেরটি পেলেন হাড়ে হাড়ে। গ্যালাক্সি-এর ডার্ক ম্যাটার খুঁজে পেলেন। বললেন রিপালশনের কথা। দিলেন বিকর্ষণ এর ব্যাখ্যা। ওদিকে আইনস্টাইন আবার বেলতলা গিয়েছেন দুবার। E=MC2 করতে করতে জিভ দেখিয়ে নেগেটিভ ম্যাসের থিওরি বলেছেন।

- হমমম।

- যেদিকে যাও, কন্ট্রিবিউট করে যাও। লক্ষ্য হবে, ব্যালান্স। আসবে না। তবু চেষ্টা করে যেতে হবে খোকা। থ্যানোস ও চেষ্টা করেছে অর্ধ্যেক এভেঞ্জআর দের হত্যা করে ব্যালান্স আনবে ইউনিভার্স-এ। পারেনি। ভূগর্ভে একটু এদিকওদিক হয়, ভূমিকম্প আসে, কিন্তু নড়াচড়া করে আবার স্থিতিশীলতা মাস্ট। উল্টিমেটলী ব্যালান্সের চেষ্টা। নইলে বাছা খেলাটা ভীষণ বোরিং।

- দাদা, ওই সংকটময় কৈফিয়ত ডিমান্ডের চাপের মুহূর্তে কি আর এসব তত্ত্বকথা মাথায় আসে!

- আনবে। আনতে হবে। আনা প্র্যাকটিস করবে। সময় খুব খারাপ মানি। গুগলে নিউটন সার্চ করলে এখন আর শান্ত-স্নিগ্ধ ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট দৃশ্য আসে না। রাজকুমার রাওয়ের আঁতকে ওঠা ছবি আসে। তা বলে হাল ছেড়ে দিলে হবে না। কণ্ঠ ও বেশি জোড়ে নয়। মনে মনে ভাবো "কফি উইথ করনে" বসে আছো। উস্কানি আসবে। ট্র্যাপ রেডি। পা দেওয়া যাবে না। গান গাও মনে মনে, আমি যামিনী, তুমি শশী হে। লিরিক্স টা মনে না পড়লে, মনে করার চেষ্টা কারো। একসময় দেখবে মেঘ কেটেছে। এইভাবেই চালিয়ে যাও ভায়া। আপেল কামড়ে বা কেটে।