Tuesday, 9 April 2019

ভবিষ্যতের ভূত

যে ভূতেরা দুষটু লোকেদের বধ করে, তাঁরাই ভবিষ্যতের ভূত। (ভবিষ্যতের কেন, বর্তমানের নয় কেন তা এখনো জানা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।)
কেন খামোকা এমন সমাজ সচেতনতা? সব ভূতেরা তো এতো সমাজ সচেতন হয়না। আদতে এঁদের ভূত হওয়ার পিছনে সেই সব দুষ্টু লোকেদের হাত ছিল। তাই রিভেঞ্জ।
গল্পের থিম এইটুকুই।
(এই গল্পটি দর্শকদের দেখানো হবে কি না তা নিয়ে একটি নাটক বাস্তবেই হয়ে যাওয়াতে) ভেবে নিতে অসুবিধা হয়না স্বাভাবিকভাবেই এখানে দুষটু লোক অর্থাৎ বর্তমান রাজনীতিবিদরা এবং ভূত অর্থাৎ সাধারণ মানুষ বা ভূতপূর্ব রাজনীতিবিদরা।
ইটস এ বর্তমান vs অল আদার্স-এর গপ্পো।

খুবই সরল-সুন্দর শিক্ষামূলক গল্প, শুরুতে অবশ্য যা ধরতে একটু বেগ পেতে হয়েছিল। গল্প -এ বেশ কিছু (অগুনতি) সাবগল্প ছিল। একটি অন্যটিতে এলোপাথাড়ি দৌড়োয় অবলীলায় দর্শকদের বেগ-আবেগের তোয়াক্কা না করেই। দর্শকরা পথভোলা-অবোলা-দিশাহারা।
সাবগল্পে কি নেই! রিয়ালিটি শোয়ের ছেলেখেলা, মোবাইল গেম-এর নাশকতা, সাংবাদিকতার ত্রুটি, ফিল্মজগতের জাল, নারীজীবনের দর্দ, বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ, যাত্রা কেন হাওয়া, হারমোনিয়ামে রবীন্দ্রসংগীত-এর ক্লান্তি আরও কত কি।
প্রতিটি সাবগল্প নিয়ে শ্রীজিৎদা চাইলে আগামী দশবছরে আঠাশটা সিনেমা নামাতে পারেন এক তুড়িতে। 
তবে যতই সাবগল্প থাক না কেন, প্রতিটিতেই উদ্দেশ্য ছিল কমন। তা হলো বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে একেবারে কোনঠাসা করে জীবাশ্ম বানিয়ে দেওয়া। তাতে একেবারে ম্যাজিকের মতো কাজ দিয়েছে। পথভোলা পাবলিক এতে দিশা পেয়েছেন, বলা যায় "খেয়েছেন"। জমিয়ে এনজয় করেছেন।
এইটে দিয়ে মোটামুটি দু ঘন্টা আর বাকি পনেরো মিনিট বর্তমানকে সান্তনা দিতে ভূতপূর্ব রাজনীতিবিদের নিয়ে উদাহরণ, সংহরণ, প্রহারণ, হৃদয়হরণ ইত্যাদি হয়েছে।
পুরো গল্পে প্রচুর ঐতিহাসিক এবং বর্তমান চরিত্রের স্পষ্ট, সিউডো স্পষ্ট এবং কখনো অস্পষ্ট ছোঁয়া।
গোটা কাস্ট এন্ড ক্রুএর কে প্রধান আর কে গেস্ট তা বোঝা মুশকিল।

সবটা শুনে গল্পটা ট্র্যাক করা যতটা বিভ্রান্তিকর মনে হচ্ছে, দেখতে গিয়েও তার থেকে বেশি মনে হবে।
কিন্তু আগেই বলেছি কোণঠাসার ম্যাজিকটা দর্শকদের সিট্ ছেড়ে উঠতে দেয়নি। তা সম্ভব হয়েছে সব্যসাচী, পরান, কাঞ্চন, সুমন্ত, কৌশিক, খরাজ এদের অসাধারণ টাইমিং, অনিক এবং উৎসব এর ডায়লগ -এর জন্য। এঁরা না হাসিয়ে, গোটা গল্পটাকে না ভালোবাসিয়ে ছাড়েনি।