Saturday, 17 December 2016

ভাষা-হামলা

-কিধার উতরেঙ্গে স্যার, জাগা কা নাম তো বাতাইয়ে
-আরে তুমি চলাতে রহ​, আমি বাতাবো সম​য় এলে ..... আরে আরে রোকে রোকে, আরে আগে আগে…
- ঠিক হ্যায়, চলা রাহে হ্যায়
-আরে আগে আগে, নট সামনে
- আরে আগে হি তো চলা রাহে হ্যায়
-আরে পিছনে পিছনে, আগের গলি চলে গেল তো, ধুর
-আরে পিছে ক্যায়া, আপ আগে আগে কর রাহে হ্যায়, ইসলিয়ে হাম তো আগে ভাগে

- তুমি তো আগে ভাগে, সাথে ভাষা গেল মায়ের ভোগে

সেলফি 3

ফ্রন্ট ক্যামেরা জিন্দাবাদ!.....

সেলফি তুলতে রাকা বৌদির ঝকঝকে ফ্ল্যাটের সামনে "ডাক-ফেশ" করে বেশ কটি ক্লিক ক্লিক করলেন দুই তন​য়া.

সঙ্গে সঙ্গে পোস্ট হ​য়ে গেলো ফেসবুকে. 
কিন্তু কমেন্টে সব "লল্" পেয়ে তন​য়াযুগল অবাক.......
রাকা বৌদির নেমপ্লেটটা " রাকা এ.” মাথার ওপর উজ্জ্বল!


ফ্রন্ট ক্যামারার দৌলতে সবাই যা দেখছে তা হল "এ কারা" ......

সেলফি 2


ফ্রন্ট ক্যামেরা জিন্দাবাদ!.....

ফেসবুকে পোস্ট হওয়া সেলফিগুলো নিয়ে মশগুল নাতনীরা. 
প্রথম শাড়ি প​ড়া সেলফি বলে কথা!

হঠাত পিছন থেকে ফিক ফিক আওয়াজ. তাকিয়ে দেখে দিদিমা ছবির দিকে তাকিয়ে হাসছে!


"শাড়ির উল্টা আচল!মাইয়াগুলান শাড়ি প​ড়াডাও ঠিকঠাক শেখল না!"

সেলফি

ফ্রন্ট ক্যামেরা জিন্দাবাদ!.....

-ভাই, ওটা কি দেখতাছি, সব কটা মাইয়া ফন লইয়া হাসে, টানাটানি করে, মুখটা অরকম ছুঁচামার্কা কেন্.

-দাদা, মুখটা ওরকম করে আছে, ওটাকে বলে ডাক-ফেস, নিজেদের ছবি নিজেরাই তুলছে, সেলফি


-বাবা গো, আর কত দেখাবি ভেলকি!

বিরিয়ানী--ঝুঁকি

বিরিয়ানীর দোকানে ঢুকে মাটন বিরিয়ানীর অর্ডারটা দিয়েই মনে প​ড়ল​, পকেটে ওনলি ওয়ান নোট তাও আবার পুরোনো পাঁচশটাকার! ড্যাম্!

-অর্ডারটা ক্যানসেল করব​? গালাগাল দেবে এত লোকের সামনে!

-চুপচাপ বেরিয়ে যাব, গালাগাল দেবে পিঁছনে! কর্মা বলেও তো কিছু আছে নাকি!

-খেয়ে নিয়ে তারপর বলব? যা হবে দেখা যাবে? নাঃ বাড়াবাড়ি হ​য়ে যাবে!

কি যে মুশকিলে পড়লাম! ঘাম ঝ​ড়ছে! বিরিয়ানী বলে কথা যতই হোক.
পাশেই ওয়েটারটা ঘুড়ছে!

"ওয়েটারদাদা, বলছি, মানে ইয়ে অর্ডারটা কি দেওয়া হ​য়ে গ্যাছে?"

"হ্যাঁ, দাদা"

"মানে ইয়ে বলছি দাদা, পাঁচশটাকা পুরোনো এই যে, এটাই মানে আছে"

"হ্যাঁ, দাদা, আমরা এখনো নিচ্ছি তো, প​রে দেবেন, খাবারটা খেয়ে নিন"


............চোখ ফেটে জল চলে আসছিল, মনে হল একে টুপ করে প্রনাম করে নি.....  

স্ব-নামকরন

ফেসবুকের প্রোফাইল নামকরনের পিঁছনে মেধার ঝলম অস্বীকার করা বাতুলতা. 
তা যেমন বৈচিত্র্যম​য়, তেমনি অনুপম. 
একা একা তা মনোরম তো বটেই, একে অন্যের সাথে মিলিত হলে তা চিত্তবিনোদনকর.

উদাহরনস্বরূপ:

"আফ্রিকার অরণ্য" বিকেম ফ্রেন্ডস উয়িথ "আইফেল টাওয়ার​"
"বিষ চাই" চেনজড হিজ প্রোফাইল পিকচার
"শুধু তোমারই জন্য​" বিকেম ফ্রেন্ডস উয়িথ "সবই মায়া"

আর

"অপছন্দ" লাইকস দিজ

"শুভ রাত্রি কমেন্টেড "শুভ সকাল"

ভালোবাসার ক্লাইমেক্স

গার্লফ্রেন্ড (হাত জ​ড়িয়ে ধরে-গদগদ গলায়​): 
"চল না পিটার ক্যাটে যাই. ডিনার করি. চেলো কাবাব বেশ টেস্টি শুনেছি"


একইসম​য় ........

বাল্য (এবং চিরকাল্য) বন্ধুর বিরতিহীন হোয়াটসএপ মেসেজ: 
"রাতে পার্টিটা অন, টনি আর রাজাও এসে গ্যাছে. তাড়াতাড়ি আয়, মটন রেজালা, রুমালি রুটি সাথে"  

শীত কবিতা

শীতকালে বাঙালী কুম্ভকর্ণ​.

ছ​-মাসের ঘুম থেকে জেগে উঠে বলে,

" জাগিয়াছি আমি, পরাক্রমশীল, পৃথিবী করিব জ​য়,
লাগাও কষে মুর্গি-মটন, রগরগে ঝোলে নাহি ভয়.
নভেম্বর হইতে মার্চ মূলত গলাধ:করণ,
এপ্রিল হইতে, নীরস গ্রীষ্মের সহিত অভিযোজন.
অতএব লইয়া আইস ফুলকপির সিঙারা, নলেন​-গুড়,

বাঙালি রসনা শান্ত হউক দ্রুতবেগে, যুদ্ধজ​য় অত:পর"

টিট ফর ট্যাট


রাত তখন দুটো.

রাতুলের বার্থডে পার্টিটা বেশ জমে গ্যাছিল, ধুর অনেক রাত হ​য়ে গেল​.এই রাস্তা ধরেই যাই, শর্টকাট হবে.......

আরে এত কুকুর কোথা থেকে এল​.... চারটে.... আরে ওদিক থেকে কতগুলো ছুটতে ছুটতে আসছে.... কি মুশকিল.... পাশ কাটিয়ে যা.... একি আমার চারিধারে চলে এসেছে..... কাছে চলে আসছে.... কেন এরকম করছে....হুশ হুশ যা যা য্..... কার আওয়াজ যেন .. কে কথা বলছেন.... জোড়ে বলুন.... আমাকে বাঁচান....প্লিজ


"হে হে কে বাঁচাবে! আমরা কথা বলছি হে ছোকরা! আমাদের দেখে রোজ ঢিল ছোড়া, পালিয়ে যাওয়া, আর এখন কান্নাকাটি! কতবার তো মুখ বুজে স​ড়ে গেলাম! কতবার তো কাঁদলাম, তখন চোখে জল দেখিসনি? যা করে এতদিন মজা পেলি, এবার সে মজা আমাদের একটু পেতে দে! হাঃহাঃ.. দেখি তোরা কি আনন্দ পাস…"

"বিয়ের নিমন্ত্রণ"- কে কি ভাবছে



"বিয়ের নিমন্ত্রণ" পেয়ে পুরুষ কি ভাবছে

***বিড়িয়ানি হবে মনে হ​য়, না হলে তো যাওয়াটাই মাটি
***মটন করবে কি?মেনুটা জিগ্গেস করে নেব​? নাঃ অভদ্র ভাববে!
***ম্যারেজ​-হল টা কোথায়, ওপেন এয়ার না হলে আবার মাঝে মাঝে হাওয়া নিতে যেতে হবে তো!
***গোলাপজামটা শ্রীহরি থেকেই অর্ডার দিলে ভালো করতে, মানে সবাই যখন খাবে হে হে, ভালোটাই খাক.
***পকোড়া-টকোড়া খাবোনা বাবা, মুখ মেড়ে যায়. একেবারে মেন আইটেমেই হামলা করতে হবে.
***রেট্রো-স্টাইলটাই এখন পাবলিক খাচ্ছে! ধুতি ই প​ড়ব​.

***বিয়েবাড়িতে প্রেম ব্যাপারটা চিরকালই থ্রিলিং. ট্রাই নিতে হবে.

"বিয়ের নিমন্ত্রণ" পেয়ে মহিলা কি ভাবছে

***কার্ডে কার কার নাম?
***বরযাত্রীতে বলবে আশা করি. না হলে ভীষন রেগে যাবো.
***কাছাকাছি হচ্ছে বাবা, সোনার কিছু পরা যাবে!
***চুলটা গ​ড়িয়াহাটের পার্লার থেকেই করাতে হবে. রুমা-ডলি ওরাও যাচ্ছে, রিস্ক নেওয়া যাবেনা.
***বেনারসিটাই প​ড়ি, সেই বিয়ের পর থেকে প​ড়াই হ​য়নি. আর একটা সপ্তাহ বাকি! আজই সব ইস্ত্রি করতে দিতে হবে!
***গিফ্ট কি দেওয়া যায়? বাজেট ম্যাক্স সাতশ. আমার রনির বিয়েতে তো কি একটা জঘন্য শাড়ী দিয়েছিল​!
***তাড়াতাড়ি জেতে হবে, পলি কি ড্রেস পরলো দেখতে হবে. আর কফিটাও শুরুতেই খেয়ে নেওয়া ভালো, পকোড়ার সাথে খেলে ভীষন এসিডিটি হ​য়

Wednesday, 7 December 2016

আজ উৎস, কাল সক্রিয়


"জিও কাকা, গুরু দেবের গান, টুনি সাউন্ডটা বাড়া, শুনি"
দাদু ভাবেন " গুরুদেব, ভগবানের গান! বাহ, নাতিটির তো বেশ ভক্তি!”
কাকিমা ভাবেন "উত্তমকুমারের গান মনে হ​য়, কানটা একটু পাতি",
"ভজ গৌরাঙ্গ লহ গৌরাঙ্গ" শোনা গেল নাতির অনুরোধের গানটি.
কাকিমার হৃদয়ভঙ্গ হল বটে, কিনতু দাদু বলেন উঠলেন “আহা”!
তবে কলিযুগের কেষ্টরাধা ডিস্কঠেকে করে ডান্স" শুনে দাদু এক্কেবারে হা!
“ছিঃ ছিঃ, ওরে ভগবানকেও ছাড়লি না রে তোরা!”
“আরে কামঅন দাদু, গুরুদেবকে নিয়ে কোন কথা হবেনা!”
“আমরাও সিনেমা-গান শুনেছি বাপু, পৃথ্বীরাজ কাপুর! আঃ কি জাদু!”
“ধুর! এখন ফাস্ট ডিজিটাল যুগ! প্যানপ্যানানি আজকাল আর চলেনা দাদু!”
একাল-সেকালের চিরকালীন এই বিদিত দ্বন্দ্ব,
আমি তবে কোন দলের, ভাবি আমি, মধ্যবয়স্ক!
পৃথ্বীরাজ কাপুরের মুঘল​--আজম অতুলনীয় বটে,
রয়্যাপ, জ্যাজ, ডীস্কোনাচ সমৃদ্ধ ছবি বেশ মজার লাগে.
আধুনিক গল্প​-কবিতায় যেমন জাগরণ হ​য় সমাজসচেনতা.
তেমনি মাইকেল-রবীন্দ্রনাথ না ড়লে আত্মজ্ঞানে ভাটা,
চিঠিতে ছিল প্রতীক্ষার আমোদ, শব্দে শব্দে অনুভূতি.
ইমেল কেমন সুলভ, বৈশিষ্ট্যপূর্ণ​, এবং দ্রুতগতি.
প্রযুক্তির উন্নতিতে গোটা পৃথিবী যখন আঙ্গুলের ডগায়,
সাবেকি প্রথা রীতিনীতি প্রাণবন্ত, নস্টালজিয়া হৃদয়ে.
সেকাল পঠিত-অনুভূত, একাল প্রতীয়মান-সমক্ষ,
সেকাল নম্র-আত্মবাদী, একাল দ্বিধাহীন উন্মুক্ত.
একাল যদি সক্রিয়, সেকাল তবে উৎস,

আমি দুয়েতেই, একাল-সেকাল সত্য সত্য সত্য.

আস্থা


জন্মকথা


উল্লাস


উত্তাপ


প্রতিফলন


উল্লাসে লেবু চা


বাঙালি-সকাল, এক কাপ চা, চুমুক দেওয়া যেই, 
চোখ কপালে, মুখ বেঁকিয়ে, হারিয়ে গেল খেই.
তীব্র উলোঙ চায়ের চাপে, বাঙালির রসভঙ্গ,
তাতে কি? হাল ছাড়তে নারাজ রসে-বসে-বঙ্গ.
লেবুপ্রজাতি! সেই ত্রাতা, টুপ করে পরলো কাপে,
উল্লাসে চা-প্রান-বঙ্গচিত্ত তখন তা ধিন তা নাচে. 


একলা চলো রে


ইন্দ্রধনু


হাসি থেকে লল্


দুর্গা কথা 3


দুর্গা কথা 2


দুর্গা কথা1


সুপ্রভাত


পচা, পা ...লা...

হ্যালো হ্যালো, মাইক টেস্টিং, টেস্টিং হ্যালো হ্যালো হ্যালো, মাইক টেস্টিং মাইক টেস্টিং
বিকেল 5:00
আঃ আচ্ছা আজ সন্ধ্যায় আপনাদের সামনে উপস্থিত হবেন বিখ্যাত শিশুশিল্পী অমুক কুমার.টেলিভিশনের বিখ্যাত সিরিয়ালের মুখ্য অভিনেতা অমুক কুমারকে দেখতে সুষ্ঠভাবে দাঁড়ান, হুড়োহুড়ি একদম করেবেন না.
সন্ধ্যা 6:30
আজ সন্ধ্যায় আপনাদের সামনে উপস্থিত হবেন বিখ্যাত শিশুশিল্পী অমুক কুমার.টেলিভিশনের বিখ্যাত সিরিয়ালের মুখ্য অভিনেতা অমুক কুমার শিশু হলেও ইতিমধ্যেই তার জনপ্রিয়্তা দিকে দিকে. আর কিছুসময়ের মধ্যেই তিনি উপস্থিত হবেন আমাদের সামনে. একটু ধৈর্য্য ধর্.... এই আপনারা একটু পিঁছিয়ে যান, দড়িটা ছিঁড়ে যাবে যে!
আরও সন্ধ্যা
আর কিছুসময়ের মধ্যেই বিখ্যাত শিশুশিল্পী অমুক কুমার উপস্থিত হবেন আমাদের সামনে. এতক্ষন যখন ধৈর্য্য ধরেলেন, আর একটু ধৈর্য্য ধরুন. ছোট্ট অমুক খুব তারাতারি আসবেন, ওনার শুটিং চলছিল, তাই দেরি.... এই ভাই তুমি ঘুরে যাও, এদিকটা খালি রাখ.
রাত 9:30

(কাঁপা কন্ঠে....) আপনাদের সামনে উপস্থিত হবেন বিখ্যাত শিশুশিল্পী অমুক কুমার.টেলিভিশনের বিখ্যাত সিরিয়ালের মুখ্য অভিনেতা অমুক কুমার এই... এসে গ্যাছেন এসে গ্যাছেন, সরে সরে. পুস্পস্তবক নিয়ে আয় পচা দৌড়ে. এই হলেন অমুক কুমার, সাথে মা-বাবা এসেছেন, অমুক কুমার আপনি একটু হাত নাড়ান. সবাই ক..র..তা..লি.. দি..ন.. উচ্ছাস চারিদিকে, এই একি হল, একি হল, পরে গেলেন কেন, যাঃ কি হল, এসিডিটি? বিরিয়ানি খেয়ে! মাথা ঘুড়ছে?
যাঃ পচা, ভিতরে নিয়ে যা, তারপর যে দিকে দু-চোখ যায়, সেদিকে পালা, পা ...লা.........

বাবুরা ফোনটা ধরো না গো

বাবুরা বল্লেন কাল থেকে এক হপ্তা রোজ সকাল ৬টা থেকে দাঁড়াতে হবে গেটে.
কাঁটায় কাঁটায় ৬ টাতেই রাজু পৌছল গেটে, দেখে দরজার সামনে লাইন. সে লাইন বাবলু চায়ের দোকান পেরিয়ে আরও কতদূর! সে দেখাই যায় না.

গেট খুলতে যাবে যেই, হৈ হৈ করে ঝাপিয়ে পড়ল লাইনের সামনের কয়েকজন. রাজুর মাথা ঘুরছে, চোখ অন্ধকার. কানে এল "মামার বাড়ির আবদার যেন, শালা আমাদের টাকা নিয়ে এখন ..... ATM টা কি শালা দেখার জন্য রেখেছ.....মার মার ...."
চোখ যখন খুল্লো, রাজু তখন সরকারী হসপিটালে.
বাবুদের ফোন করেই চলছে, কেন যে ফোন গুলো unreachable?

ভাগ্যিস দ্বিতীয়টি ছেলে

প্রথম সন্তান, মেয়ে, যেন এক দায়। ভাগ্যিস দ্বিতীয়টি ছেলে!

ইংরিজী মিডিয়ম স্কুল, দুটো বাড়তি রসগোল্লা, পুজোতে খাসজামাটি আর অতিরিক্ত আদরটুকু দ্বিতীয়টির জন্যই।

ছেলে ফ্ল্যাট কিনে চলে গেল​, গৃহপ্রবেশে নিমন্ত্রণ করেছিল বটে!
আজকাল তাইবা কজন করে!
বাবার চোখে ছানি, মেয়ে লোন নিয়ে ছানি কাটালো।
চোখের ছানি তো কাটলো, সাথে মনের ধুলোও!

অনুতাপে বাবামা-র চোখভরা বিরামহীন জল।

একবার বলো, "ভালোবাসা মিথ্যে"

বিয়েটা স্থির হতেই একরাশ স্বপ্ন এলো,মেয়েটা একটা একটা করে বুনলো স্বপ্নের রাজমহল। সত্যি যেন রাজকুমার​।
মনে পড়লেই কাটাঁ দিত সর্বাঙ্গে।

বিয়ে হল​।

একটা করে দিন যায়,স্বপ্নজালক আলগা হতে শুরু করে।
চাকরি মিথ্যে,মিথ্যে ফ্ল্যাট,ছবি আঁকা মিথ্যে,গান গাওয়া মিথ্যে।
বার বার জিজ্ঞাস করে মেয়েটা, "কেন? কেন​?"
তাতে আরও মিথ্যে।
সবাই মেয়েটাকে বোঝায়, "সম্পর্কটাই তো মিথ্যে।বেড়িয়ে আয়"।

মেয়েটা বেড়িয়ে আসতো যদি মিথ্যে রাজকুমার একবার বলত, "ভালোবাসা মিথ্যে"।

এখন আর স্বপ্ন নেই, শুধু অপেক্ষা!

অসম্পূর্ণ কাহিনী

সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বন্ধুত্ব নন্দিনীর সাথে রনির।
যেদিন নন্দিনী রনিকে হ্যাঁ বললো, রনি সেটা ফলাও করে লিখলো সেই সাইটে! নন্দিনী ভারি লজ্জা পেল! মনে মনে খুশীই হলো!

কিন্তু ওদের ঝগ​ড়া, একান্ত নিজস্ব মুহুর্ত, তাও যখন বন্ধুদের সাথে ভাগ হতে থাকলো, নন্দিনী কষ্ট পেল, খুব কষ্ট​!
সেই কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে চাইলো নন্দিনী!
রনি তার উত্তর দিল ওই সাইটে, নির্দ্বিধায়, অভব্য শব্দে!

নন্দিনী এই প্রথমবার ঠিক করলো শুধু বন্ধুদের ন​য়, পুরো দুনিয়াকে জানাবে নন্দিনী রনির কাহিনী.

নন্দিনীর হাতে ঘুমের ওষুধ!

অগ্নিপরীক্ষা

কণা প্রথম যেন কবে পার্লারে গেছিলো! যেবার ন​য়না বললো, "স্বামীকে রেখার থেকে দূরে রাখার এটাই শেষ উপায়". তারপর এতটা মাস, যেন অগ্নিপরীক্ষা! গত রাতে স্বামী কণাকে বলেছে, কণাকে ছাড়া ও বাঁচবে না!
তবু কেন অস্থিরতা কমছেনা, সারারাত ঘুম আসছেনা. শেষরাতে হঠাৎ যেন সমাধান মিললো!
কণা স্থির করল, কাল আবার পার্লারে যাবে.
কাল থেকে নিজেকে সাজাবে শুধু নিজের জন্য, নিজের মত করে.

নস্করবাবু লাকি

"ভাগ্য করে ছেলে-বৌমা পেয়েছেন নস্করমশাই, ভাবছেন কেন বলছি! আরে ফেসবুকে আপনার পুত্র-পুত্রবধূ আপডেট দিয়েছে যে "ফাদার ইজ দা বেস্ট থিং ইন দা ওয়ার্ল্ড"!"

নস্করবাবু মনে মনে হাসলেন. ছেলে-বৌমা দলিলটা পেয়ে সত্যই খুব খুশী.

ছ্যাঃ

বাঙালি ভুঁড়িতে হাত বুলিয়ে বলবে," বড্ড বাড়ছে", তবু মাটন ছাড়া বিরিয়ানী? ছ্যাঃ
বাঙালি ছানার জিলিপি মুখে পুড়ে বলবে,"সুগার চেক করালাম, ৪৬০" তবু বিজয়া সম্মিলনীতে ওনলি নোনতা? ছ্যাঃ
বাঙালি রাশভারী গলায় বলবে,"গসিপ মানুষকে পঙ্গু করে" তবু বিকেলে হাবলুর চা দোকানের বদলে ছেলেকে অঙ্ক করানো? ছ্যাঃ
বাঙালি স্ত্রীর এডভেন্চারে রাজি হ​য়ে বলবে,"পুজোতে এবার দার্জিলিং", তবু ফিরে এসে হাবলুর চা দোকানে বসে বলবে .... ছ্যাঃ

দোষ কার?


  • মিলিদি, একটা কথা বলবো?
  • কি রে? বেশ সাসপিশাস ব্যাপার মনে হচ্ছে! প্রেম পেয়েছে? 
  • হমমম....
  • এ! সেকিরে সত্যি? তাড়াতাড়ি বল, কে সে, কোথায় আলাপ, কবে থেকে?
  • আজ সকালে
  • এ! আজ সকালে? দেখা হল আর সাথে সাথে প্রেম? কি হল তোর? কোথায়? কে?
  • তখন সবে ঘুমটা ভেঙেছে 
  • মানে রাত কাটিয়েছিস?
  • লেপের ওপর....
  • মানে?
  • আরে জয় গো...
  • জয়!! 
  • হমমম.... গোস্বামী! আমি জয় গোস্বামীর প্রেমে পাগল হলাম! যদি দোষ দিতে হয়, দোষ দিও লেপের ওপর জাপটে থাকা ভোরের রোদটাকে!

চোখ দিয়ে যায় চেনা

ইস! কি নোংরা, এইজন্য আজকাল বাস, অটো, মেট্রো ব্যবহার করাই যায় না! না প্লিজ প্লিজ না, ধু…র সেই আমার ঘাড়ের কাছেই এসে বসলো! যা…তা ধুর্, ভাল্লাগে না! আবার কনুইটা ঠেকছে, উফ, আবার নোংরা ব্যাগটা কোলে তুলেছে! কোথায় যে নামবে ছাই! দেখেই মনে হচ্ছে, কোন ক্লাস নেই. এখুনি ভাড়া-নিয়ে-ঝগড়া-করবে টাইপ.
একি! কি ভাষায় কথা বলছে, হিন্দী! মানে? গাড়ীর চাকা থেকে জামাতে কাঁদা লেগে গ্যাছে! ওঃ আহারে বেচারা! মুম্বাইতে থাকে, প্রথমবার কোলকাতা! আহা আহা! ইস! দেখোদেখি কি কান্ড, নতুন জায়গায় এসে কি বিপত্তি! ওমা কি ফর্সা রঙ, ভাগ্যিস পাশের ভদ্রলোক রুমালটা দিলেন! বাহ ভারী মিষ্টি! আমার শুরু থেকেই মনে হয়েছিল, "খুব উচ্চ বংশ"!

ওল্ড মঙ্ক

বাঙালির কবিতা-ওস্কানি বর্ষা আর বিলাসী শীত না থাকা আনফেয়ার, মিত্র কাফের মটন কবিরাজী ঠান্ডা খাওয়ার মত. যেন তেজ হারানো ওল্ড মঙ্ক. না, সুরার শুড় না ধরেই "ওল্ড মঙ্ক", মানে আক্ষরিক.

তবে স্বাতন্ত্রিক এবং সাম্প্রতিক উঠতি বাঙালিগুচ্ছ যারা এদিক-ওদিকের মাঝে আটকে, তাদের কাছে এ প্যানপ্যানানি বাঙালিগিরি. তাহলে আর কি! ওই "ওল্ড মঙ্ক" ই ভরসা.

মূলোত্পাটন

মশা বিশেষত মাছি মারা একটা আর্ট বলে মনে করেন প্রেমচাঁদবাবু. মারার পরে মুখ সিঁটকানো স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে বেশ স্টাইলে ফুঁ দিয়ে "ব্যাপারটা"কে উড়িয়ে দেন. আজ মর্নিং ওয়াকে কানুবাবু রোজের মত আবার শুরু করলেন নিজের ফ্ল্যাট, ফোন, গাড়ি, এমনকি তোষাখানার দৈনিক বিজ্ঞাপন. আজ আবার এর সাথে জুড়েছে ছেলের বৌয়ের গুণপণা-কথা সাথে শ্যামবাবুর ছেলের অযোগ্যতা.
তখন থেকেই একটা মশা কানের কাছে ভনভন করছে. যদি চোখে দেখা যেত একবার.......

অসাম্য

রাহুল ভীষন মার খেয়েছে আজ বাবা-মা র কাছে!
মার খেতে খেতেও রাহুলের শুধু মনে প​ড়েছে, রাহুলের নতুন ঢিলেঢালা স্পোর্টস সুটা বিজ​য়ের ফাঁটা পায়ে কিরকম সুন্দর ফিট করে গেছিলো, যেন ওর জন্যই বানানো!
ওটা পায়ে দিয়ে বিজ​য় যখন বিজ​য়ীমুখে বাড়ীর দিকে হাঁটছিল​, রাহুল ওর চোখে জল দেখে অবাক হ​য়েছিল​, কিন্তু ওর মুখের প্রাণোচ্ছল হাসিটা ......

সাধা"রণে"র সাদাধন!

এটিমে লাইন বাড়ে। সংবাদ মাধ্যমের রোজগার বাড়ে। ঘরেতে গোলাপী নোটের সংখ্যা বাড়ে।
তবু
বাবলুহকারের খদ্দের কমে, কালুচাঁচার সব্জী পঁচে, জবার বিয়ে পিঁছোয়.
কারণ
সাধারণের সাদাধন!

স্ব​-সাধপূরণ​

"বুড়ো, আজ তোর বাবার জন্মদিন, তুই আর বৌমা একটু জা না, বাবাকে প্রনাম কর. কোনোবারই তো করিসনা" "আঃ মা, এখন সম​য় নেই, পরে পরে" অফিসে পৌঁছে অবশ্য ফেসবুকে লিখলো বুড়ো, "হ্যাপি বার্থডে বাবা"!
বৌমা তাতে কমেন্ট করলো "ফিলিং ব্লেস্ড্"!

ফেসবুকের আলো থেকে শতদূরে থাকা বাবা-মার কাছে এ বার্তা পৌঁছলনা! ঘরে রান্না করা পায়েসই চিরাচরিত দিনটাকে স্বতন্ত্র করে তোলে.

শীত-কথা 1


"শীত, বাঙালীর বিলাস" এ নিয়ে কোন দ্বিধা-তর্ক বাঙালী সোজামুখে মেনে নেবে না. এ বাঙালীগত অধিকার. এর মধ্যে শীতের সকাল আর তা যদি রবিবার হ​য়, একেবারে "সেরেনডিপিটাস্"!

"এহেন দিবস কাটাইতে" একটা জব্বর প্ল্যান না হলে বাঙালী নামে ইয়ে .....

যাই হোক প্ল্যানটা কিছুটা এইরকম:
প্রাতরাশ সারিতে হইবে ফ্লুরিজে, পিষ্টক সহিত,
হাটিতে হাটিতে পৌঁছিব নিজাম, কাঠি রোলে মোহিত.
ল্যাদ খাইয়া, মেট্রো কর্তৃক, অভিমুখে উত্তর কলিকাতা,
গোলবাড়ির কসা মাংসে, মধ্যাহ্নভোজ, সহকারে পরোটা.
জোড়াসাঁকোয় গুরুদেবকে প্রনাম করিয়া, মিত্র কাফে,
ব্রেনচপ, কবিরাজি গলাধ:করণ করিয়া, হৃত্স্পন্দন হাঁফে.
শান্ত করিতে তারে বারিধারা প্রয়োজন,
পুনরূজ্জীবন অর্জিতে অলিপাবে গমন.
দৈবক্রমে অকৃতদার আমি, দিলখুসার কাটলেট পকেটে,
নতুবা হৃদয় চূর্ণিত হইত, কাটলেট খণ্ডাংশের সহিতে.
মেজাজে,গোল্ডফ্লেক-প্র​য়োগ, নিদ্রাভিমুখী পশ্চাতে,
শির নিকট ছানার জিলিপি, স্বপ্ন সুন্দর সম্ভাব্য তাহাতে.


বিশেষ দ্রষ্টব্য****
দিস ইস ডান বাই এক্সপার্টস, ডু নট ট্রাই দিস এট হোম (বাঙালি-রক্তে সে ভ​য় নাই, শুধু এন্টাসিড পকেটে চাই)