Monday, 28 August 2017

সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপর নাই

"সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই"
- য়্যা? কে বললো?
- ইয়ে আমি
- আমি কে?
- আমি ক্রো, ব্রো।
- (ভুঁরু উঁচিয়ে) অ তুমি? তা আমি কারো ব্রো নই। তবে আপাতত তুমি আমার লেফ্ট আই ব্রোয়ের ওপর থেকে ঠোঁটটা সরাও বাছা। 
- উপস সরি। বলছি আপনিই কি সেই? মানে দি অলমাইটি? দি খ্ৰীষ্ট।
- মমম সেই রকমই তো জানতাম। তো হঠাৎ এই ভর দুপুরবেলা, আমাকে বাটারিং? কি চাই হে?
- ধুস, কি যে বলেন, খ্ৰীষ্টদা। একটা প্রশ্ন খুঁজতে খুঁজতে সেই দূর নিকো থেকে ইকোতে এসে হাজির।
- বটে। নিকো আর এমনকি দূর? ওই তো সেক্টর ফাইভ …
- আরে আমি কি আর ওলা-উবের করে এসেছি? এর কাঁধে, ওর মাথায় ভর করে, নৌকো চড়ে, সাঁকো বেয়ে তবে না....
- আচ্ছা হয়েছে।, এবার প্রশ্নটা বলে ফেলো।
- সেরকম কিছু না, তবে আবার সেরকমই। মানে যার কাছে যেরকম। তো উইদাউট মাচ বকমবকম, প্রশ্নটা হলো,"সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই", ইহা কি সত্য?
- বটে। কলকাতার ঘাম চ্যাটচ্যাটে দুপুরবেলা হিসেবে প্রশ্নটি নিতান্তই বিরক্তিকর। তবে ক্রোয়ের মুখে এরকম প্রশ্ন আগে থ্রো হতে দেখিনি। তাই আমি যাইপরোনাই আপ্লুত। তা হ্যা কথাটি সত্য হে।
- ও মানে একেবারেই মিথ্যা করা যায়না? সেই ঈশপের সময় থেকে ছেলেপুলে আমার রেফারেন্স নিয়ে নিয়ে ডাক্তার-ইঞ্জি হয়ে গেলো। আর আজ এতো ওপরে বসেও আমায় শুনতে হবে সবার ওপরে ওই ওরা?
- দেখো হে, এটাই বলবো তুমি ভায়া অনেক সেফ।
- সেফ?
- ইয়েস। ওপথে মোটেই পা বাড়িও না। দেখছো না "সবার ওপরে মানুষ সত্য" শুনে পাবলিক গুলোর হাল কি হয়েছে? খেলা শুরু করেছে নিজেদের মধ্যে। কে সত্য, কে ওপরে, সেই নিয়ে লাঠালাঠি শুরু করেছে। ওই ওই দেখো সমস্ত রকম অস্ত্র নিয়ে নেমে পড়েছে। সাহিত্য? লালিত্য? বাচস্পত্য? পাণ্ডিত্য? সব নিয়ে। তার চেয়ে বরং এই ওপর থেকে সেফ খেলা দেখে যাও ভায়া।
- ওরে ব্বাবা। তাই তো। আপনার ওপর এই এদের দ্বায়িত্ব ভেবে আমার নিজেকে বেশ ফ্রি বার্ড লাগছে। মানে সেটাই ছিলাম। আরও ফুরফুরে লাগছে। এখন মনটা বেশ হালকা লাগছে। বেশ একটা উপলব্ধি হচ্ছে।
সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপর নাই,
আর

বেশ উঁচু স্ট্যাচু পেলে, আমি টপ ভিউটা পাই।
 

Friday, 18 August 2017

প্রতিযোগিতার নাম হলো .....

আরে ভায়া, বিকেলে পারফরম্যান্স, হ্যা হ্যা অন স্টেজ। তা সেলেব্রিটি সময়ের একটু আগেই এসে পড়েছেন। এসেই লাজুক মুখে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে একটু রেস্ট নেওয়ার প্রস্তাব রাখলেন। একে তো ওই এত্তোওওওওও বড়ো সেলিব্রিটি তায় আবার জাস্ট একটু "বিউটি স্লিপ" এর রিকোয়েস্ট। কোনো অসুবিধা তো হয়ইনি। বরং আগে এসে পড়াতে স্টেজে ওনার সঠিক সময়ে উপস্থিতি নিয়ে কোনো রকম চিন্তাই রইলো না। আপ্লুত হয়ে ক্লাব একটা বেঞ্চ ইসিলি এরেঞ্জ করলো। উনিও দিব্বি ওতেই ভালোভাবে এডজাস্ট করে নিলেন। একটু রেস্ট চাই বৈকি। যতই হোক পারফরমান্সটা তো তাতে আরও জমবে, কারণ শুনেছি ঘুমলে নাকি উনি নাকি আরও বিস্তারিত হন! সেও চাক্ষুষ দেখার সুযোগ রইলো। মানে একেবারে জমে দই .... মানে হতো। জাস্ট একটা মাইনর প্রব্লেম। উনি যখন সবেই বেঞ্চে নিজেকে বেশ কমফোর্টেবল করে, হেমা মালিনীর মতো ড্রিমগার্ল চোখটা বন্ধ করবেন, ব্যাস ..... ওনার মালিক হাজির! ভাবুন, ওই এত্তোওওওওও বড়ো সেলিব্রিটি হয়েও ওনার ওপর হম্বিতম্বি করার এক মালিক আছে। কি দুঃখের কথা বলুন তো। তবে কি, ওনার এই এত্তোওওওওও বড়ো সেলিব্রিটি হওয়ার পিছনে ওনার মালিকেরই সমস্ত অবদান। তাই কিছু বলারও নেই। সেলেব্রিটির পুষ্টি-তুষ্টি-ইস্টি এমনকি সেলেব্রিটির সৃষ্টিও ওই মালিকেরই দয়ায়। তাই আর মুষ্টি বাগিয়ে ধরা হয়না মালিকের ওপর। মালিক লোকটা এমনি ভালো, কিন্তু এই সময় বিশেষে নিজেকে এমন প্রাধান্য দেন যে ওই সেলেব্রিটি ব্যাটাকে একদম পাত্তা দেননা। এমনিতে মালিক-সেলিব্রিটি এক আত্মা এক প্রাণ। কিন্তু কোথাও পৌঁছনোর ক্ষেত্রে সেলেব্রিটি আগে পৌঁছন। তা এই যে সেলিব্রিটি রেস্ট নিতে যাবেন বেঞ্চে, মালিক দেরীতে পৌঁছলেন। পৌঁছেই মালিক উইদাউট নকনক, ঠেলে গুঁতিয়ে ওই জায়গা নিজে দখল করলেন। বেদম ঠেলা খেয়ে সেলিব্রিটি বেচারা চোখ খুলে হড়কে একেবারে ঝুলে পড়ে-পড়ে। ভাগ্যিস ক্লাবের মেম্বারদের মধ্যে একজন ঘটনাটা একদম সঙ্গে সঙ্গে দেখতে পেয়েছে, সে তাড়াতাড়ি এসে সেলিব্রিটিকে দুহাতে তুলে ধরে। কিন্তু এভাবে আর কতক্ষন বসে থাকবে। চিল চিৎকার করতে বাকিরাও এসে পড়ে। ওর ওই অবস্থা দেখে চটপট একটা তক্তা জোগাড় করে। তাতে এইযাত্রা রেহাই। আপাতত ওটাই ঠেকিয়ে রাখা। মালিক তো ততক্ষনে বেঞ্চে স্বপ্ন-সাগরে। গোলু-সেলিব্রিটি তক্তায়। ক্লাবের উদ্যোক্তারা আপাতত বিকেল অব্দি পর্যায়ক্রমে টহল দিচ্ছে। তক্তা সরলেই মুশকিল। মালিক-সেলিব্রিটি তো নিশ্চিন্তেই আছেন মনে হচ্ছে। ও আপনাদের প্রতিযোগিতার নামটাই বলা হয়নি, নাম হলো "ভুঁড়ি কত ভারী"।

Monday, 7 August 2017

"রাখী" তে কেউ "গুলজার" হচ্ছে না

আগের দিন যে চঞ্চল হাত গুলো "বাড়িয়ে দাও তোমার হাত আমি আবার তোমার আঙ্গুল ধরতে চাই" জানিয়েছিল, আজ তারা অদৃশ্য। অদ্ভুত তো!
"রাখী" তে কেউ "গুলজার" হচ্ছে না।
"রাখী" শুনলেই কেউ "পল পল দিল কে পাশ" ধর্মেন্দ্র হচ্ছে না।
উল্টে ছেলেগুলো সব ভাইরাস-এর মতো একেবারে নিকেশ হচ্ছে।
জন্মমাত্রই যদিও "রাখী" এন্টিভাইরাস-সম! ওই যে সংস্কৃত-তে রাখী শব্দের অর্থ "বন্ড অফ প্রটেকশন"। তাই .....
তা সে তো দুশমন-দমনে। শিষ্ট-দের ভয় কিসের? তারা পালাচ্ছে কেন?
ইতিহাস অনুযায়ী "রাখী" যত্রতত্র সুবিধা অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়েছে। এই যেমন ধরুন যুদ্ধ বাঁধলো রাজা-স্বামীর সাথে অন্য রাজার। স্ত্রী টিং টিং টি টিং করে বুদ্ধি বাতলে ফটাং পাঠিয়ে দিলেন "রাখী", ব্যাস বরফ গলে জল। (কে বলে, বাঙালিরাই শুধু ইমোশনাল। শুধু নিজেদের ভাও বাড়ালে হবে, হে বাঙালি?)। তা সেসব তো সব ওই উত্তরভারতে। পূর্ব-পুরুষদের ওসব কান্ড দেখে তারা আজকাল জোরকদমে "ভাইয়া-মেরে রাখী কে বন্ধন কো নিভানা"। বেশ কথা।
কিন্তু দি গ্রেট বেঙ্গলে যারা রবি-ঠাকুর বলতেই মূর্ছা যান, তারাও কি করে তালে বেতাল হয়ে পড়েন শুনি? যেখানে রবিগুরু হিন্দু-মুসলিম বন্ড-এর উদ্দেশ্যে রাখী-বন্ধন উদযাপন করছিলেন, সেখানে? অবশ্য যতই তিনি করে থাকুক না কেন, তা তখনই বিভাজন রুখতে পারেনি। আর আজ তিনি যখন শুধুই বাঙালির বসার ঘরের "টেগোর" হয়ে আছেন, তখন আর .... উহু কোনো শক্ত শক্ত কথা নয়। সোমবার এমনি বড়ো একগুঁয়ে। তাই আল্টিমেটলি "রাখী" একটা বন্ড। জেমস বন্ড। মজবুত জোর। টুটেগা নাহি।
অতঃপর ছেলে-মেয়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই রাখী কিনুন, রাখী পড়ান। শুধু ভাই-বোন কেন? আজ ওই রিক্সা-চালককে রাখী পড়ান না কেন? পাশের বাড়ির ঠাম্মাকে রাখী পড়ান না কেন? বয়-ফ্রেন্ড, গার্ল-ফ্রেন্ডকেও পড়ান। বাবা-মা, ছেলে-মেয়ে কেও পড়ান।
শর্ত একটাই।
কব্জির এপাশ ঘুরিয়ে সুতো ওপাশে নিয়ে যাবার সময়, জোরে জোরে বলুন, "ভালো থেকো, শুভ হোক"।
#রাখীবন্ধন #রাখী