Monday, 5 November 2018

রঙ্গমঞ্চ

কালীপুজোর পাড়া-ভোজন।
প্রথমদিন আমিষ। দ্বিতীয়দিন নিরামিষ।
অবাধ খাবার আয়োজন, তার ওপর আমিষ। পাড়ার রিকশারাজু থেকে ডাক্তার হাজরা, মণ্ডপে সবার হাজিরা।
বাঙালি কে কোন শ্লা অসময়নিষ্ঠ বলে?
বেলা বারোটায় রান্না রেডি, খাবার লোক নেই। ঠিক একটা বাজতেই, জনজোয়ার। সব বাঙালির একসাথে খিদে পায়। ফ্রি -এর খাবার পেতে এবার লাগা লাইন। খিদে এবার পেট থেকে মাথাতে। পুজোর দিনে, মণ্ডপে গালাগাল দিলে, দেবীর কোপে পড়ার ভয়। ঢোক গেলা ছাড়া নো উপায়। ইতিমধ্যে পেট ভরপেট করে দাঁত খুঁচতে খুঁচতে বেরিয়ে আসা লোকজন-এর "জিতে গেছি কাকা" টাইপ বাঁকা চাহনি। গোদের ওপর বিষফোঁড়া। এ যেন যুদ্ধ। লাইনে দাঁড়িয়ে মাথার ঘাম পায়ে পড়ে পড়ে মিনি-পুকুর। লাইন এগোয় অনুপমের কাছিমের মতো। "গুটি গুটি পায়ে আর এগোতে পারে না"। শেষে পুকুর উপচে পড়ার আগেই এক ঠেলাতে একেবারে ফ্রাইড রাইস এর কাউন্টারে। তারপরে স্বপ্নের মতো ফিফটিন মিনিটস। ততক্ষনে পেট দয়াভিক্ষা করে ক্লান্ত। তুবড়ির মতো একটা জম্পেশ ঢেঁকুর দিতেই এ হে হে ...... ফিফটি পার্সেন্ট মাল হড়হড়িয়ে বাইরে। আসলে গলার নিচে ডাউনস্ট্রিম ফ্লো করবে, সে সময়টা পায়নি বেচারা। ঢেঁকুরটা চিরকালই অবাধ্য। আইটেমগুলোকে পেটে স্টে ই যদি না করানো গেলো, তাহলে তো যুদ্ধ-এ ফেল। যাক কেউ দেখেনি। মুখ-টুক ধুয়ে বেরিয়ে পড়লেই বাঁচোয়া। আরে ওদিকে কি? ভিড় কেন? পান-সুপারি টা মিস হলো নাকি? আরে এ হে হে, এতো আরেকজন বমি টমি করে ......
তাহলে এখন বাঙালির টাইম টু এক্ট এস এ শুভানুধ্যায়ী
"আরে কেন এতো খাস? ফ্রি এর মাল দেখলেই হামলে পড়বি? একটু বুঝে খাবি তো নাকি ..... মণ্ডপের এখানে এ হে হে কি ময়লা" ....... এবার কব্জি গুটিয়ে বেরিয়ে পড়া যাক মানে মানে। হে হে সবই "এ মায়া প্রপঞ্চময় ভব রঙ্গমঞ্চ মাঝে"।

No comments:

Post a Comment