Thursday, 21 February 2019

বাংলাভাষা ফ্রীজে রাখা রাবড়ি

বাংলাভাষা ফ্রীজে রাখা রাবড়ির মতো, চরম শান্তি এই ভেবে, যে সে আছে, জানি সাথে আছে, এক্কেবারে আমার। এ স্বাদের ভাগ হলে স্বাদ সাড়ে সাতাশ গুন বাড়ে। পাস্তা-কাবাব-নিজামের রোল জিভ-এর সারপ্রাইস গিফ্ট। কিন্তু আদতে জিভের যে অপেক্ষা, বাংলাভাষা তাই। সবাই জানে। কিন্তু বাড়িতে মায়ের আদরের মতো ওটা কিরকম একটা "আছেই তো" টাইপের হয়ে যায়। একবার বাংলার বাইরে বেশ কিছুদিন কাটিয়ে নিলেই,, এসিডিটিটা অনুভব করা যায়। তখন কো-বাঙালি খুঁজে অক্সিজেন টানার চেষ্টা চলে।
**মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বসে খেলার ম্যাচের ওই নির্ণায়ক মুহূর্তে, হাত কচলানোর সময় আপনার মুখ দেখে যে কেউ বলবে, আপনি হাওড়া।
**প্যারিসের পকেট ফাঁকা করা হোটেলে ঢুকে যখন দেখলেন, পাশবালিশ নেই, দুটো গালাগাল বেরোনো বাঙালি অধিকার।
**স্প্যানিশ প্রতিবেশীর গিটার প্র্যাকটিস বেশ লাগে, একদিন সেই সুরে রবি ঠাকুর পেতেই প্রথম গিয়ে আলাপ করলেন।
**পোল্যান্ডের গ্রামে বাঙালি রেস্তোরাঁ নেই, শুধু বাড়ির খাবার পেতে আপনি বিয়ে করলেন।
**আইসল্যান্ডে পৌঁছে অব্দি বাঙালি মুখ খুঁজছেন, যদি একটিবার পাওয়া যেত।
**ঠান্ডা রুমে ঢুকে রুম হিটার অন করতে করতে বুকের ভিতর থেকে দলা পাকানো কান্না বেরিয়ে আসতে চাইছে, কিন্তু ব্যর্থ চেষ্টা তাকে আটকানোর। কি মুখে কাঁদবেন? মায়ের "খেয়ে নে" ঘ্যানঘ্যানানি আর প্যাঁচপ্যাঁচে গরম থেকে পালাতেই তো এদেশে।
আরও হাজারো হাজারো অনুভূতি চারিদিকে। বাংলা শুধু ভাষা নয়. প্রতি শব্দে রয়েছে একটা একটা অভিব্যক্তি। ভূল হোক বাংলা লিখতে, হাজার বাংলার মধ্যে দুটো ইংরিজি আসুক। মন জানে বাংলা কি। মন সব জানে বাংলা আমার কাছে কি।

No comments:

Post a Comment