Tuesday, 18 February 2020

ডেথ ড্রাইভ

ধরে আছে? নাকি ছেড়ে দিতে চাইছে?
এসব ভাববো না কল করবো পুলিশ? ইমিডিয়েট হেল্প?
বেশ কিছু লোকও ততক্ষনে জড়ো হয়েছে আসে পাশে। সবাই হা করে ওপরে তাকিয়ে। সবার মুখে ভয় আতঙ্ক। এদিক ওদিক দেখছেন। কেউ কি কল করেছে অলরেডি পুলিশে? হেল্প কি আসছে? কেউ কেউ চিৎকার করে বলছে, হেই। আর ইউ ক্রেজি? হোল্ড অন। ডোন্ট ডোন্ট ডোন্ট ডু দিস ম্যান। একজন বয়স্ক মহিলা বিড়বিড় করছেন। বোধহয় ঈশ্বরকে ডাকছেন।
হঠাৎ একজন হেসে উঠলো। সাথে সাথে একটা চাপা হিসহিস, ফিসফিস। আর ছোঁয়াচে হাসি একটু একটু করে সবাইকে কব্জা করলো। আরে ফাইবারগ্লাসের একটা স্ট্যাচু যে।
আজ্ঞে। চেকরিপাব্লিকের প্রাগ শহরের স্টেয়ার মেস্তো অর্থাৎ ওল্ড টাউনে এই স্ট্যাচুটি আসলে ট্যুরিস্টদের জন্য একটা চমক।
----------------------------------------------------------------------------------------------
সিগমান্ড ফ্রেউড ছিলেন একজন সাইকোএনালিস্ট। সাইকোএনালিসিস্ শব্দটির জন্মদাতা এই ব্যক্তি নানা চিকিত্সাবিদ্যাগত আবিষ্কার করেছেন মানুষের সাইকিক নেচারের নানা ক্ষেত্রে যেমন বিষাদ, ইগো, স্বপ্ন এমনকি থানাটোস অর্থাৎ মৃত্যুর চালক ইত্যাদিতে। নিউরোলজিতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। প্রায় আশি বছর বয়সে তিনি যখন জীবনের শেষ পর্যায়ে, তখন তাঁর খ্যাতি এবং জন্মসূত্রে ইহুদি সংযোগ ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। মানসিক-শারীরিক অত্যাচার সহ্য করেন। তাঁর নিজের লেখা মূল্যবান তথ্য পুড়িয়ে দেওয়া হয় চোখের সামনে। নিরুপায় হয়েই পালিয়ে যেতে হয় লন্ডনে। শেষের সে দিন তখন ভয়ঙ্কর রিফুজি অবস্থায় কাটছে যখন, ধরা পড়লো ক্যান্সার বীজ শরীরে জাঁকিয়ে বসেছে। সমস্তটা জীবনে নানা মানুষের আতঙ্ক, সাবকন্সসিয়াস মানসিক অবস্থা নিয়ে এনালাইসিস করা ব্যক্তি নিজেও ভয় পেয়েছেন বহুবার নিজেকে নিয়ে। আতঙ্কে থেকেছেন। মনে হয়েছে জীবনকে ধরে রাখবেন নাকি হাল ছেড়ে দেবেন। শেষে যখন অসুস্থতা চরমে, খাওয়া বন্ধ হলো, কথা বলাও, নিজের মৃত্যুর ভয়ে প্রতিদিন মরছিলেন পলে পলে। সিদ্ধান্ত নিলেন মরফিনের হাই ডোসে মৃত্যুবরণ করবেন তাঁর ডাক্তার বন্ধুর সাহায্যে। হলোও তাই। প্ল্যান মাফিক কাজ।

প্রাগের মূর্তিটি তাঁর ওই মানসিক অবস্থাকে উৎসর্গ করেই, ধরে রাখবেন নাকি জাস্ট ছেড়ে দেবেন!

No comments:

Post a Comment