Friday, 20 September 2024

কাকু হাঁকুপাঁকু

 - হ্যালো

- কি রে? ঘুমোচ্ছিস?
- এ? না মানে? হ্যা। কি? মহিষাসুরমর্দিনী শুরু হয়েছে?
- ধুর শেষ হয়ে গেছে।
- ওহ যাহ। শোনা হলো না তো।
- ঠিক আছে। ইউটুবে দেখে না। শোন্ না। খুব দরকার
- কি হয়েছে? কাল খাওয়াবো তো বললাম।
- ধুস।
- তাহলে? ও চিনি ফোন করেছে? বলেছিলাম ও তোর প্রপোসাল ফেলতে পারবে না। দেখলে তো? হে হে
- আরে ধুর। তোর বাবা মানে কাকু ....
- কি? তোকে ফোন করেছে? কিছু বলিসনি তো? আমি মদ খেয়েছি কেউ বোঝেই নি কাল। তুই কেস খেয়েছিস নাকি?
- আরে এ কি রে। বলতে দে না।
- বলছিস না তো। বল না।
- কাকু ছাদে, বসে বসে কাঁদে।
- এয়া? মানে?
- আমাদের ঘুড়ি কেটে তোদের ছাদে পড়েছিল। চিৎকার করে কাকুকে ওটা পাস করতে বললাম। ভালোমানুষ কাকু হাঁকুপাঁকু করে আমাদের ঘুড়ি দিতে গিয়ে কোথাও খোঁচা খেলেন। ধুতি আঁটকে গিয়ে হড়কে উনি বড়ির ওপর ধপাস। ছাদে শুকোতে দিয়েছিলো বোধহয় কাকিমা। কাকুকে একটু সামলা। আমরা বাড়ির নিচে দাঁড়িয়ে।
- কি বলছিস রে! সেকি।
- আরে চিন্তা করিস না। কাকু ঠিক আছে।
- ধুস অটো বড় শরীরটা ওই কোমল বড়ির ওপর পড়েছে। আর একটাও কি আস্ত আছে? তোরা যা বাবাকে সামলা। আমি বরং মা কে সামলাই। বাড়িতে ১০ বছর পরে বড়ি হলো! বড়ির দুঃখ মা যেন সামলে ওঠে।



Friday, 6 September 2024

খিচুড়ির অভিমান

 টেকনিক্যালি খিচুড়ি হলো সারভাইভাল ফুড। নিতান্তই উপায় নেই অথচ জিভকে চটানো যাবেনা, এহেন পরিস্থিতিতে, খিচুড়ি। চালে-ডালে তালে-দুলে বেশ। আর বর্ষাকালে খিচুড়ি খাওয়াটা? ওটা ওই রাস্তাতে চলতে চলতে মন্দির দেখলেই হাত মাথাতে চলে যাওয়ার মতো। অভ্যেস। নাহলে রসিয়ে কষিয়ে জমিয়ে পোলাও-মটন ছেড়ে, নিদেনপক্ষে লুচি-মাংস ছেড়ে খিচুড়ি?

এহেন তাচ্ছিল্য দেখে খিচুড়ির খানিক অভিমান জাস্টিফায়েড। খিচুড়িঅশ্রু উপচে বেরিয়ে গঙ্গা বেয়ে পদ্মা পৌঁছলো। "পানি নোনা লাগে ক্যান"
...... ইলিশটিম ব্যাকস্ট্রোক দিতে দিতে গঙ্গা হয়ে বর্ষার কাঁদাজলে হালকা ঠেলা-গুঁতো খেয়ে একেবারে বেহালা মার্কেটে।
রসিকবাবুর পেটে মিলন হলো খিচুড়ি-ইলিশের। কাঁদাজলের ঠেলা-গুঁতোতে টেস্ট নাকি আরও খোলতাই হয়েছে বলে রসিকবাবুর ধারণা।
পুনশ্চ: রসিকবাবু আগামী বেশ কিছুদিন পটি করবেন না, দাঁত মাজবেন না।



Wednesday, 4 September 2024

বাঙালির হাইজিন

 বাঙালির হাইজিন কন্সসিয়াসনেস লুই পাস্তুরকে দস্তুর মতো ঘায়েল করতে পারে।

প্রি-ভোজন দশাতে পেটের অবাধ্য আচরণে মন নিমন্ত্রণ বাড়ির বেসিনের উল্টোদিকে বুফে-কাউন্টারে ছুটে যায়।
পোস্ট-ভোজন দশাতে পেট যখন হাত তুলে দিয়েছে, "মিসন একমপ্লিশড" বাঙালি দলে দলে বেসিনের কাছে ধায়।
কচ্লে কচ্লে হাত ধোয়।
গাল টোপলা করে, আগোলম বাগোলম করে।
পিচিক পিচিক জল বেসিনে অল্প, বেসিনের বাইরে বাকিটা ছড়ায়।
পিছনে লম্বা লাইন অনুভব করেও "জাস্ট চিল" তৃণজ্ঞান করে।
এবং পুরো কসরতটি সাড়ে আটবার পুনরাবৃত্তি করে।



Tuesday, 3 September 2024

সিটি অফ জয়

 - ফাইনালি আমরা কলকাতায়! উহুউউ। ওয়েলকাম টু মাই রুটস।

- হ্যাঁ, যেখানে তুই নিজেই জীবনে প্রথমবার এলি আর টেনে নিয়ে এলি আমাকে।
- নাচারালি দোস্ত। দুজনেই আমরা মাইগ্রেটড বাঙালি, ইটালির গ্রামে বসে পিৎজার বদলে ভাত খাই, বাঙলায় আমরা পরিষ্কার কথা বলি, ঘরে রবীন্দ্রনাথ থেকে শিবরাম মজুত, প্লেলিস্ট এ কোল্ডপ্লের সাথে মান্না দে। আর আমাদের দুজনকেই ছোটবেলা থেকে বাড়ীতে "কলকাতার দুর্গাপুজো" , "সিটি অফ জয়"
নিয়ে এত্ত এত্ত এডভার্টাইসমেন্ট হজম করতে হয়েছে।
- এডভার্টাইসমেন্ট বলিসনা বরং, "তোরা আর কি জানিস দুর্গা পুজোর..... " মার্কা রাগিং বল।
- আগ্রিড। রাগিং ইট ওয়াস। আর তাই আমাদের মত দুটো পারফেক্ট রাগিং ভিকটিমকে নিজেদের রুট খুঁজে কলকাতা তো আসতেই হতো রমা রায়। তাই না? এবার বল, তোর দম আছে এখনও নাকি আজ একটু রেস্ট নিবি।
- হান্ড্রেড পার্সেন্ট দম আছে। তোর গ্রানির বাড়ী যাবার প্ল্যান সেই কবে থেকে। এখানে পৌঁছে নো রেস্ট। এখুনি চল। কিন্তু তার আগে প্রচণ্ড খিদে পেয়েছে। ফ্লাইটের মিল এভয়েড করেছি। এখন প্লিজ কিছু খাওয়া, তোর কলকাতার স্পেশাল কিছু।
- ডোন্ট ওরি ম্যাডাম। হোটেলে যাই, ব্যাগ রাখি, ফ্রেশ হই। চল তারপর কফি হাউস যাই। ওখান থেকে গ্রানির বাড়ী টু মিনিটস।
......
- গুগল ম্যাপস এ এই স্ট্রীট টাই বলছে রে। লেটস গো মলি, অলমোস্ট রিচড..... ইএই এই বাড়ী টাই তো। ইয়স অ্যাড্রেস মিলে গেছে। দ্যাখ বাবার ছবিটার সাথে মিলিয়ে? রংটা কিরকম বদলে গেছে..... কিন্তু ছাতের কোণার ওই ডিজাইন..... দ্যাখ একদম এক। ভাগ্যিস প্রোমোটার এখুনি কাজ শুরু করে দেয়নি। মলি, এই কর্ণার ইস ভেরি স্পেশাল। এখানে বসে বাবারা সবাই গাঁজা খেত, হা হা হা হা হা!
- ওয়াউ। আর ইউ সিওর, তুই ফার্স্ট টাইম এসেছিস এই বাড়ী!
- হাহা। এতদিন এত ডিটেইলড গল্প শুনেছি, সব আমার ছবির মত মুখস্ত। এই পাড়ার সরস্বতী পুজোর প্যান্ডেলের পিছনে বাবা মাকে প্রথম দেখেছিল। এদিকে এদিকে ইয়েশ ..... এই ঘরটা ছিল গ্রানির। আর একটা ফানি ইনসিডেন্ট। একদিন সকালে গ্র্যান্ড পা দেখলেন, শুকোতে দেওয়া বাবার আন্ডারওয়ার, ওই ওখান থেকে উড়ছে।
- এ্য?
- হ্যাঁ। কাকে উড়িয়ে নিয়ে নাকি সামনের ইলেকট্রিক তারে নিয়ে ফেলছে। প্রবাবলি তারটা ছিল এই দিকে।
- lol রনি, বাই দা ওয়ে ওইটাই কি তারটা? ওই তারে এখনও কি একটা ঝুলছে! ইস ইট ইউর ফাদার্স?
- ধুস। আর ইউ ক্রেজি? হ্যাং অন। হোয়াট! মে বি। মানে! ৪০ বছরের আন্ডারওয়ার এখনও!?
- হা হা হা হা রনি। এত সত্যিই "সিটি অফ জয়"। শোন, তুই ভালো করে চেক কর। কল অ্যান্টি। যদি এটা সত্যি হয়, আই এম ইমপ্রেসড রে। এত রোদ বৃষ্টি সহ্য করে যেভাবে ওটা টিকে আছে। কোয়ালিটি তো লা জবাব। তুই কয়েকটা সেট কিনে নিয়ে ফিরিস কিন্তু। হা হা।