সকাল ৪ টে নয় মশাই, মাঝরাত ৪টে। ঐসময় ঘুম থেকে ওঠার মোটিভেশন শুধু লুচি আলুরদম ছাড়া অন্য কিছু হয় না, হতে পারে না, হওয়া অন্যায়। কিন্তু হলো। কারণ আগেরদিন ঠিক হয়েছিল সবাই মিলে যাওয়া হবে উদ্যেশ্য হীন গন্তব্যে। বড় সহজেই আগেরদিন মুখ ফস্কে কোনও কথা দেওয়া। বড় কঠিন মাঝরাতে, সে কথার দাম রাখা। অ্যালার্ম আর ফোন কল বেজে বেজে যখন মাথার মধ্যে হ জ ব র ল করছে, নিজেকে সামলে যুদ্ধে নেমে পড়লাম। নানা মুনির মত এ গুতো খেয়ে শেষে ভোট প্রসেসে যে যে জায়গা যাওয়ার প্ল্যান হলো, তার সবকটাতেই গিয়ে দেখা গেলো হয় সে জায়গা আপাতত বন্ধ বা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বা নেহাতই ভুল সিদ্ধান্ত। ঠিক হলো জমিয়ে কিছু খেয়ে নেওয়া যাক যাতে মনে মলম মালিশ হয়। খিদের কথায় "খিদে" মাথায় ছাইয়া ছাইয়া করতে শুরু করল। আকাশ মেঘলা। গাড়ি চলতে শুরু করল পার্ক স্ট্রিটের দিকে। বিদ্যাসাগর সেতুতে উঠতেই ক্লাচ ক্লা ক্লা করে কলা দেখিয়ে হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল। এগোয় না। পিছিয়ে পড়ে ঢাল বেয়ে। কোনরকমে গাড়ি বন্ধ করে নিজেদের ঢলে পড়া থেকে বাঁচানো গেল। এবার? গাড়ি ক্ষেপে উঠেছে। রেসকিউ গাড়ি, গারাজ সবাই নারাজ। সবার মুখে বিপবিপ, বুকে ঢিপঢিপ, চোখ করুন, অবস্থা পিতামহ ভীষ্ম। পাশ দিয়ে প্রচুর গাড়ি ছুটছে স্যাট স্যাট। বাস থেকে উৎসাহী জনতা ব্রিজ দেখছে আর আমাদের দেখছে। দুটোই তাদের কাছে বেশ নতুনত্ব, বেশ আজিব। আমরা আটকে।
দুটো কাকও এল। এদিক ওদিক দেখল, কিন্তু আমাদের দেখল না। চুমু খেল একজন আরেকজনকে। আর তারপর উড়ে গেল। একটা ছেলে মেয়ে বাইক নিয়ে এলো, আমাদের দেখল না। জড়িয়ে সেল্ফি তুলল, তারপর চলে গেল। একটি ছেলে বস্তা মাথায় চলতে চলতে একটু দাঁড়াল, রেলিং ধরল, কি একটা ভাবল, তারপর চলে গেল।
এমন সময় রেসকিউ গাড়ি থেকে কল করল, "দাদা আপনারা কোথায়। হ্যাজার্ড লাইট জ্বলছে তো? আর মিনিট পাঁচেক।" সূর্য বেশ জ্বলজ্বল করছে।
No comments:
Post a Comment