Wednesday, 30 April 2025

বসলো এসে মুখোমুখি

 বাইরে তখন কালবৈশাখী,

টুকটুকে ওই লাল পাখি,
বসলো এসে মুখোমুখি,
বললো হেসে, "ভালোবাসি"।
ভালোবাসা, অসামান্য,
জানি তুমি চঞ্চল, বন্য,
তবু এই ভালো বাসা,রাখা রইলো তোমার জন্য।
মন ভরে ডাকবো যখন, এসো প্লিস, হবো ধন্য।

৩০ এপ্রিল ২০১৯ 



তখন আমি উড়ছি পাখা না ঝাপটে

 তখন আমি উড়ছি পাখা না ঝাপটে,

তখন আমি সুটটা টানি গলির খাঁজে,

তখন আমার দুপুর কাটে মেঘ-নকশায়,

সেদিন তোমায় প্রথম দেখি ওই জানলায়,

তখন থেকে তুমি আমার ঘড়ির কাঁটায়,

প্রথম চিঠি ঠিক করেছি দেব তোমায়,

বুকপকেটে বোমা নিয়ে পৌঁছে দেখি,

রুমাল দিয়ে মুছছো বুঝি তোমার আঁখি?

মনে হলো, কাঁধ আমার শক্ত নয়,

তোমার চোখের ভার কমাবো সাধ্য নেই।

ফিরে এলাম, উড়িয়ে চিঠি, পুড়িয়ে বুক,

প্রথম চিঠি টুকরো হয়ে খুঁজুক সুখ।

২৯ এপ্রিল ২০১৮ 




লাঞ্চ বাক্স

হঠাৎ কখনো রাস্তায় দেখা না হয় নাই হলো,

দুম করে রেস্তোরাঁতেও নয়।

আমাদের যে পছন্দের জায়গা ছিল,

পাহাড়,

তার ধারের ওই চেয়ারতাতেও হয়তো নয়।

ফোন নম্বর বদলেছে জানাই আছে,

হোয়াটস্যাপ, ফেসবুকের বালখিল্য কবেই ভ্যানিশ।

শুধু আজও লাঞ্চ বাক্স খোলার সময়,

বুক দুরু দুরু।

হার্ট বিট নব্বই।

শ্বাস রুদ্ধ।

যদি চিরকুট খুঁজে পাই।

নাহয় মিরাকেল হোক,

ভুতুড়ে কারসাজি।

শত যুক্তি দিয়ে তাকে মেলানো দুস্কর হোক।

রূপকথার গল্প বলে বলুক লোকে।

চিরকুট তবু আসুক লাঞ্চ বাক্সে।

শিরশির করে তরঙ্গ হয়ে বয়ে যাক উপর থেকে নিচে।

নাহয় একমুহূর্তের জন্যই হোক।

কখনো কখনো মনে হোক না একটা স্বপ্ন।

তবু লাঞ্চ বাক্সের চিঠি চাই।

আপোষের সীমারেখা যা কিছু,পড়ে থাক বাক্সের লক্ষণরেখার বাইরে।


২৯ এপ্রিল ২০২০ (ইরফান খান স্মরণে)




Friday, 25 April 2025

চিঠি বলতে আমি শুধু প্রেমের বুঝি

 চিঠি বলতে আমি শুধু প্রেমের বুঝি।

যাতে বেশ করে রসিয়ে ভাব বর্ণনা করা যায়।

একটু থেমে জানলার দিকে তাকালে ভাবে রস বাড়ে।

বাকি ঝগড়া-তর্কের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা উল্টো।

কাগজে ওসব লিখতে গেলে রাগ-রোষ-ক্ষোভ এর ইনটেনসিটি হ্রাস পায়।

পেতে পেতে তলানিতে ঠেকে, শেষে আবার ভাব রসে মিলে যায়।

মানে রোষ থেকে রস।

তাই আমার মনে হয়, মুখ থাকতে হাতে কেন!


২৫ এপ্রিল ২০২০ 



Thursday, 24 April 2025

কফি আর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

কফি আর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।
আর তারপর
১. বত্ৰিশ সেলসিয়াসের প্যাচপ্যাচে ঘাম উধাও।
২. কাকের গলায় সুর, কিরকম যেন কোকিলি-লতা।
৩. ফেসবুক-টুইটার-ইনস্টাগ্রাম!! শব্দগুলো চেনা। কিন্তু খায় না মাথায় দেয়?
৪. চড়াইদুটো এক-একটা উইন্ডস্ক্রিন ওয়াইপারে বসে। গাড়ির মালিক জেনে বুঝেই ওগুলোকে নামিয়ে রাখেনি হয়তো। এই মুহূর্তে চড়াই দুটোর চোখে-চোখে খেলা। নির্লজ্জের মতো প্রেম শুরু করবে ঠিক, দেখিয়ে দেখিয়ে। ওদের দায় নেই সমাজের বখে যাওয়া নিয়ে। আচ্ছা প্রেমে কি কেউ বখে যায়?
৬. বাজার? রান্না? পেন্ডিং এক্সেল ফাইল? নিমন্ত্রণ-রক্ষা? ডাক্তারখানা? নাহ কিছু নেই আজ। শুধু ল্যাদ।
৫. উত্তরের জানালায় গ্রীকদেব নোটস গুড মর্নিং জানিয়ে ফুঁ দিয়ে পাঠালেন দক্ষিনি হাওয়া।
৭. কফিতে মল্ট হুইস্কির মৃদু নেশা। দেবী এম্ব্রোসিয়া। দক্ষিনি হাওয়ায় কানে ফিসফিস করে বলে গেলেন, এ কাজ তারই।
৮. চিৎকার করে বলে উঠি,"আমি উন্মাদ, আমি উন্মাদ, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ"
১০. চোখের সামনে দেখি, ছাতিমতলায় বসে গান গায় কেষ্ট বাউল,"মন চলো রূপের নগরে"
৯. বাড়ির পাশে পলাশগাছ ছিল বলে জানতাম না তো। সে ফুলের মালা হাতে উত্তম কুমার!! পরিয়ে দিচ্ছে পাহাড়ি সান্যালে।
১১. বৃষ্টি আসছে। মনে। ধীরে বৎস তিষ্ঠ ক্ষণকাল তিষ্ঠ ক্ষণকাল। বৃষ্টির ঠিক আগে ঋত্বিক ঘটকের মেঘে ঢাকা তারা উঁকি মারবে। সেটা দেখে তবে এ নেশা যেন কাটে।
এরকম সব ঘটছে না ঘটবে? নাকি ঘটেছিলো কোনো কালে? আজ মনে পড়েছে? সংখ্যা গুলো গুলিয়ে গিয়েছে না চারের পরে ছয়? হয়?
নাহ কাল থেকে কফি আর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় নিয়ে বসা যাবে না। বরং কফি আর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় নিয়ে বসবো। 


২৩ এপ্রিল ২০১৭ 



Thursday, 10 April 2025

শরীর সর্বস্ব


নিন্দুকেরা বলে পশ্চিমি দেশগুলো নাকি শরীর সর্বস্ব। ভালোবাসা নাকি ততদিন, যতদিন শরীরের টান। নিদেনপক্ষে মনের টান থাকলেও নাকি তার মেয়াদ স্কুলের গরমকালের ছুটির থেকে কিছুমাত্র বেশি নয়। আমাদের সহমরণের দেশের সাথে নাকি তাদের তুলনায় চলে না। লম্বাটে সুদীর্ঘ প্রসারিত জীবৎকালব্যাপী দুটি মানুষের একসাথে কাটানোর গল্প, তা সে যতই লাথি-ঝ্যাটা খাওয়াই হোক না কেন তাকেই তো আমাদের দেশ "আহা কি ভালোবাসা দ্যাখো" বলে হা হা করে। কিন্তু ভালোবাসাকে শুধুই কি লম্বাতে মাপা যায়? বরং চওড়াতেই তো তার কদর একান্তই বেশি বলে মনে হয়। আর তাই যদি হয়, পশ্চিমি দেশ আমাদের থেকে ভালোবাসাকে যে কিছু কম বোঝে না, তা বলাই বাহুল্য। আমাদের দেশে রবি থেকে চন্দ্র (বিন্দু) নানাভাবে প্রেম-ভালোবাসাকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। রবি ঠাকুর প্রেমকে জিজ্ঞেস করেছেন, "ওই যে যারা দিনরাত্রি, অলো-হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী, গ্রহ তারা রবি, তুমি কি তাদেরি মতো সত্য নও", "সুদূর নীহারিকা" র সাথে তুলনা করেছেন, যত্নে, সামলে।চন্দ্রবিন্দু "নায়াগ্রা" দেখিয়েছে, প্রেমিকাকে "তুমি লোড শেডিংএ চাঁদের আলোর সর, তুমি জ্বরের শেষে সূর্য ধোয়া ঘর" বলেছেন।

রবি ঠাকুরের শব্দে হারিয়েছি। চন্দ্রবিন্দুর শব্দে ধেড়িয়েছি।

আর যখন শুনি ম্যাথিউ মোল বলছেন,"তুমি ক্ষুদ্র জলাশয়, কর্দমাক্ত খোঁয়াড়-এর ন্যায় আমার জীবনে", আমি অবাক হয়েছি। এই লাইন যখন গান হয়ে এসেছে, স্মুথ এন্ড সুথ মিউজিকে, একবার একবার করে বারবার শুনেছি।

ইউটুবে একেবারেই বাকিদের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়া ম্যাথিউ মোল-এর ফোক গান শোনবার অনুরোধ রইলো।

১১ এপ্রিল ২০১৯ 




গাইয়ে হবু জামাই

 এক রবীন্দ্রভক্ত, বাঙালি ঘরের জামাই হবে, এ আর এমন কি কথা ভাই?

--------------------------------------------------------

বেশ অনেকদিন থেকেই শোনা যাচ্ছিলো মেয়ে কমলা নাকি প্রেম করছে, তাও আবার এক গাইয়ে বাউন্ডুলের সাথে। মেয়ের বাবা ডেকে পাঠালেন গাইয়েকে। ইন্টারভিউ টাইম উইথ প্রবাবল-হবু শ্বশুরমশাই।
---------------------------------------------------------
-কতদিন ধরে চলছে এসব?
-পুরানো সেই দিনের কথা, হায় ও সেই, চোখের দেখা প্রাণের কথা .....
-থাক থাক ওকি গান শুরু করলে কেন? বলছি যে, কিছু করা হয়? নাকি বাবার হোটেলেই....
-হা-আ-আ-আই। নাই কাজ নাই। দিন যায়, দিন যায়। আয় আয়, আয় আয়। হাতে কাজ নাই॥
- ও বাবা তারমানে লবডঙ্কা!
-তোমরা যা বলো তাই বলো, আমার লাগে না মনে,আমার যায় বেলা, বয়ে যায় বেলা কেমন বিনা কারণে ....
-কি জ্বালা! আরে বাপু কি খাওযাবে আমার মেয়েকে?
- আমার ভুবন তো আজ হল কাঙাল, কিছু তো নাই বাকি, ওগো নিঠুর, দেখতে পেলে তা কি ....
-কি কপাল, মা কমলা আর কোন ছেলে পেলে না মা, শেষে এই? তা ছেলে, তোমার বাবা-মা কি বলছে?
- হায় গো, ব্যথায় কথা যায় ডুবে যায়, যায় গো--সুর হারালেম অশ্রুধারে....
- বটেই তো, তা হবে না, এ ছেলের জন্মমাত্রই মা-বাবার এই হাল বলে আমার মনে হয়! বাপে তাড়ানো মায়ে খেদানো কেস, তা কি আমার ঘাড়ে পড়বার পরিকল্পনা নাকি?
- হৃদয়-আবরণ খুলে গেল তোমার পদপরশে হরষে ওহে দয়াময় ....
- জানতাম আমি, এ সব কেস কি করে ঠিক করতে হয় আমি জানি.
- হৃদয় মোর কোমল অতি, সহিতে নারি রবির জ্যোতি, লাগিলে আলো শরমে ভয়ে,মরিয়া যাই মরমে॥
-- (মাথায় হাত দিয়ে)হে ভগবান ....
-- (ইন ঘরে-বাইরে-সৌমিত্রচ্যাটার্জী স্টাইল) শাসনে যতই ঘেরো আছে বল দুর্বলেরও, হও-না যতই বড়ো আছেন ভগবান।


১০ এপ্রিল ২০১৭ 




Sunday, 6 April 2025

পাখিদের ঠেক

 পাখিদের নিজস্ব ঠেক থাকে। প্রতিদিন একবার সেখানে দেখা মিলবে তাদের। বুড়োদের আলাদা, জোয়ানদের আলাদা। তবে পছন্দের মানুষ পেয়ে গেলে অবশ্য জোড়ায় জোড়ায়। যদিও কর্মস্থানে ঝিনচ্যাক কাউকে দেখলে বন্ধুত্ব পাতানোর চেষ্টা করে, ঠেক ঘুরে আসে, বন্ধুদের সাথে হ্যাংআউট করে। তবে বিকেল হলে স্ট্রেইট বাড়ি। মাঝে মাঝে মুড হলে বর বৌ মিলে লং ফ্লাই করে অচেনা অলি গলি ঘুরে নতুন গাছে নাইট আউট করে। খুব আহ্লাদে ঠোঁট দিয়ে গা চুলকে নেয়।

সেদিন রসিকবাবু সিঙ্গারা খেতে খেতে বললেন, পাখিদের কখন হাসতে দেখেছ? দেখনি? আরে ভায়া, যেই মুখটা দেখছ ওটাই ওদের হাসি মুখ। হাসি কমিয়ে মুখ গম্ভীর করার প্রয়োজন ওদের হবে কেন হে!!!!


(Purono lekha)