Wednesday, 26 July 2017

এ জগতে হায় সেই বেশি চায় যার আছে ভুরি "ভুঁড়ি"

পূজোতে পুরুষদের জামাকাপড় কেনা? তার দ্বায়িত্ব ওনাদের। বৌ-দিদি-বৌদি মিলে চললেন শপিংএ। "XL" এ জাত যাবে। "L" তাদের কাছে তবু সহনীয়। কিন্তু ওই বিবাহিত পুরুষদের মধ্যপ্রদেশ যে মাত্রায় প্রভাবশালী, তাকে কি আর ওই এল-ফেলে আয়ত্তে আনা যায়?

জাস্ট একটা গর্ভাশয়! জাস্ট! ঐটা নেই বলেই যত তাচ্ছিল্য? দিলেই কি তা গর্ব ভরে গর্ভে স্থান দিত না পুরুষ? বীর হবার চান্সটুকুই দেওয়া হলোনা পুরুষদের। কিন্তু তবু নিজের শুধুমাত্র নিজের একান্ত পরিশ্রমে যে পরিমান মাল-মশলা ঠুসে টুসটুসে ভুঁড়ি টুকু বানিয়েছে তাকে একেবারেই পাত্তা না দেওয়া এবং রীতিমতো হেয় করা কি ভালোমানুষের কাজ? "L" মার্কা জামা-কাপড় কিনে এনে একেবারে বোল্ড এন্ড উন্ডারলাইন করে দেখানোর মধ্যে যে মানসিক অত্যাচার, তা কি সুন্দরীদের মানায়? সবথেকে দুঃখের কথা হলো, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও সময়মতো ঠুকে দিয়েছেন, এ জগতে হায় সেই বেশি চায় যার আছে ভুরি "ভুঁড়ি"। কি আর চাইলো পুরুষ! সবই তো চাওয়ার আগেই নারী হিসেবে টপাস ছাদনাতলাতে।
সেই নারীরাই এক হলে বরের ভুঁড়ি নিয়ে তোলপাড়।
আর ব্যাপারটা শুধু কি মানসিক-এই?
পার্থবাবুকে রোজ সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে ওঠানো? সেটা? জগিং করতে গিয়ে ওনার ওই ইয়ে টা যে ক্লিয়ার হয়না, সেইটা কে বোঝে?
ত্রিলোকবাবুকে কি একটা মেশিন এনে দেওয়া হয়েছে, সেটা বেল্টের মতো জাপ্টে নিতে হয়। তারপর সুইচ অন। তখন মনে হয় যেন কেউ ওনার সাথে "রজনীকান্ত" "রজনীকান্ত" খেলছে। আর রমেনবাবুর? ওনার গল্পটা শুনে যান। লুচি আর রসগোল্লা গিলে রমেনবাবু শুয়েছেন। হঠাৎ পেটের ওপর হেব্বি চাপ। ঘাড় উঁচিয়ে দেখেন, বৌ পেটের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন চারটি খন্ডস অফ রবীন্দ্ররচনাবলী, তারপর রেখেছেন নিজের বাহুবলী। ওই অবস্থায় যখন রমেনবাবু শুধু মুখ হা করে কিছু বলার চেষ্টা করছেন, বৌ ওনার দিকে তাকিয়ে ভারতনাট্যম চোখ নাচাচ্ছেন। ভেবে দেখুন অবস্থাখানা।

Wednesday, 19 July 2017

পোচ্চন্ড নেশা

এসেছি ..... আমি এসেছি .......দূর থেকে বহুদূরে- পথে পথে ঘুরে ঘুরে আমি এসেছি।
নেশা নিরাময় করাতে চাই ডাক্তারবাবু। পোচ্চন্ড নেশা আমার। গাঁজা-চরসের নেশা নয়। ওসব তো সেই বাচ্চাবেলার জিনিস। আর ড্রাগ শুনলেই ড্রাগনের ভয়। সেই একবার ড্রাগন-ওয়ার্স দেখতে গিয়ে সিনেমাহলে বন্যাপরিস্থিতি তৈরী হলো, সেই থেকে ড্রাগ-ওনে অনীহা। হেরোইনটা মমমম না ঠিক নেশা বলবোনা। ওটাও আয়ত্তে। আসলে আমার হিরোইনে নেশা। পোচ্চন্ড। তা সে যেকোনো হিরোইনই হোকনা কেন। সে নেশা বলবো কি মশাই, কি দুলুনি কি দুলুনি। সিনেমাহল থেকে আর বাড়ি ফিরতে পারি না। এই মনে হয় সামনে নূতন। আপনি কি নতুন পড়লেন? উফফ আপনাদের এতো তাড়াহুড়ো না। নতুন নয়, নতুন নয়, নূতন, নূতন। ওই "দিল কা ভমর করে পুকার", পাড়ায় হুল্লোড় করেছিলাম, সারা পাড়া বালতি নিয়ে জল ঢালতে তবে সৎবিৎ ফেরে। আবার কখনো মনে হয় সামনে দীপিকা, ওই পাদুকোন। হ্যাঁ। "কাশ্মীর ম্যা, তু কন্যাকুমারী", নেশার চোটে সেবার তো ফুলদাদুর বিয়ের ধুতিই পড়ে পাড়া মাত করেছিলাম। তবে সেবার নাকি সবাই মজাই পাচ্ছিলো। ওই যেই ধুতিটা গুটিয়ে হাঁটুর ওপর তুলতে গেছি, ব্যাস "ও বাবাগো" বলে আবার জলের বালতি। পরশু একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। করিনার ওই রিকুয়েস্ট আর ফেলতে পারিনি। হ্যা মশাই কাপুর। ওনার ফটো কিনে বুকে চিপকে নিয়েছি নেশার ঘোরে। সে অব্দি তবু ঠিক ছিল। ফেভিকলটা যে পকেটেই সে খেয়াল ছিলোনা। ও নিয়েই বসে গেছিলাম কোমোডের ওপর। ব্যাস। আঁটকে গেছি। কিছুতেই উঠতে পারিনা। সেবার আর জল ঢালতে হয়নি। ওই ল্যাজে গোবড়ে কেসে নেশা এমনিই কেটে গিয়েছিলো।
তাই মনে হলো সিম্পটম গুলো সিরিয়াস। কেস বেশ ম্যাচুওর্ড। তাই প্রফেশনাল হেল্প নিতান্তই দরকার বলে মনে হচ্ছে। তা বলছি যে, আপনার স্পেশালাইজেশন বোধহয় মদ-এর ওপরেই। ওই পি কে তারপরই আপনার বিশ্বাস। আর তাছাড়া ডার্ক রেড, বোল্ড লেটারে "মদ ছাড়ান" .... তাই দেখেই গেস মারলাম। কিন্তু আমার কেসটা তবু আপনাকেই নিতেই হবে। আপনি পারবেন। আমি জানি।
কেন?
1. আপনার নামে আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস।
2. লোকেশনটাও বেশ সুইট্যাবল। গেস্ট হাউসে নিরিবিলি-বিবৃতিতে বেশ দ্বিধাহীন বোধ করবো।
3. বৃহঃবার টাও সুবিধাজনক। ঐদিন আমার নেশা লাগে না। শুক্কুরবারে নতুন রিলিজ থাকে যে।
খুব সমস্যায় আছি মশাই। বাঁচান।

ইমোজি না ইমোবাবু

- মে আই কাম ইন? 
- ইয়েস। সিট্ ডাউন প্লিস। আপনার বায়ো-ডাটা তো খাসা মানে বেশ ইম্প্রেসিভ। 
- বলছেন? ওই ইয়ে সবই ন্যাচারাল-ট্যালেন্ট বলতে পারেন। 
- সে আর বলতে। বলছি এখুনি একটু হেসে দেখাতে পারবেন? ওয়েট। যে সে হাসি নয় কিন্তু। ওমরেশ পুরি টাইপ?
- কি আর বলবো স্যার? হে হে ওটা তো আমার বাথরুম স্টান্ট। 
- য়্যা? সেকি? আর উৎপল দত্ত "হীরক রাজা" মার্কা?
- হে হে ঐটাও। খুবই সহজ। মুখ আধ-চাপা, বেরিয়ে থাকবে দাঁত শুধুমাত্র ওপর পাটির চারটি ইন্সাইজর। ব্যাস।
- বটে? আর কানন দেবী কান্না?
- একটু ডিফিকাল্ট ছিল শুরুতে, ডুকরে কান্না টাইপ তো, তা এখন করে ফেলতে পারি ঐটাও। আসলে শুধুই তো এক্সপ্রেশন। ভয়েসের ব্যাপারটা নেই বলেই ব্যাপারটা সহজ আর কি। সুচিত্রা সেন "সপ্তপদী" মানে চোখ ছলছল কিন্তু গাম্ভীর্য্য, মাধবী "ছদ্মবেশী" মানে মুখ বন্ধ এক গাল হাসি, রবি ঘোষ "ধন্যিমেয়ে" মানে উচ্ছে-তেতো মুখ করা পুরোহিত। এই গুলোও রপ্ত।
- আপনি তো মশাই ফাটিয়ে দিয়েছেন। এতো ট্যালেন্ট নিয়ে এতদিন কোথায় ঘাপটি মেরে ছিলেন? আপনার আগের জনেরা, যারা সব ইন্টারভিউ দিতে এলো, সব কটা যেন হিমেশ রেশমিয়া, পাথরের সাথে কম্পেটিশনেও হেরে যাবে। যাক গে যাক। শুনুন চাকরি আপনিই পাচ্ছেন। আপনার গাল গুলো একটু শুধু ভরাট করতে হবে এই যা। সে একটা ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিতে হেল্প করবে আমাদের টীম। এখন অনেক কাজ। আপনার সব ইমোশন প্রিন্ট করতে পাঠাতে হবে। আমাদের সোশ্যাল নেটওয়র্কিংএ লঞ্চ করতে হবে। সে নিয়ে একটা প্রমোশন ইভেন্ট এরেঞ্জ করতে হবে। টু মাচ ওয়ার্ক। ফেসবুকের সাথে কম্পিটিশন বাবা, যে সে কথা! তবে বাঙালি এক্সপ্রেশন-এর সাথে ওরা পাল্লা দিতে পারবে না। হে হে হে হে। ও আর একটা কথা, আপনার নামটা ....
- ইমোজি। বা স্মাইলি।
- উহু। বদলাতে হবে। বাঙালি এক্সপ্রেশন্স। বাঙালি ভাব-আবেগ থাকবে আর নাম ধার নেবো নর্থ ইন্ডিয়ানদের থেকে? ইমো "জি"? ওসব "জি" "ফি" চলবে না। বাবু চলতে পারে। ইমোবাবু? বা ইমো-মশাই? শর্ট-এ ইমোশাই। শব্দে বেশ একটা লাজুক ব্যাপার আছে। কি বলেন?

জাগ্গা জাসুস

বলছি, বয়স কত? হাড়ের নয়। মনের? কিভাবে মাপবেন?
"জাগ্গা জাসুস" দেখে আসুন।
*****প্রথমেই বিধিমূলক সতর্কীকরণ, এলেখা মুভি রিভিউ-টিভিউ নয়। একে বলা যায় "ধিতাং" লেখা।
"এহেড অফ টাইম" "নট ইভেন ইন্টেলেকচুয়াল" "বোগাস" "বিলো অ্যাভারেজ" ইত্যাদি শুনেই বা পড়েই গিয়েছিলাম "জাগ্গা জাসুস" দেখতে।
ফোর্থ ডে, লাস্ট শো।
ছবির শুরুতেই একটি বাচ্চার গলা, গানের মাধ্যমে জানাচ্ছে ডু'স এন্ড ডোন্ট'স। ওই মোবাইল-ফেসবুক ইত্যাদি বন্ধ রাখা, নাহলে ফিল্মে যা খিচুড়ি হয়েছে, সেটা গুলিয়ে যেতে পারে ইত্যাদি। শুনে মুচকি হাসি এসেই গেলো অজান্তে। আরে সিরিয়াসলি। অনুরাগ বাসু আমার খুড়তুতো কাকুর জ্যাঠতুতো জ্যেঠুর মামাতো মামা বলেই কি বলছি নাকি? সিরিয়াসলি এলো। চুপচাপ ইন্টারনেট অফ করলাম। মোবাইল সাইলেন্ট করলাম।
ক্যাটরিনা গল্পকার, বাচ্চাদের কমিক বই থেকে গল্প শোনাচ্ছেন। কখনো কথা কখনো গান। গল্প নিয়ে যাচ্ছে এক সেট থেকে অন্য সেটে। সেখানেও গান-নাচ। বুনিয়াদে আসলে রহস্য উদ্ঘাটন। নামেই সেটা স্পষ্ট। "জাসুসি" তো থাকছেই। মোট তিনটে অনুসন্ধানী বা গোয়েন্দা গল্প, পাশাপাশি জাগ্গা-গোয়েন্দার নিজস্ব জীবন কাহিনী নিয়েই এই মুভি। মোটামুটি সবাই এটিকে "মিউজিক্যাল ফিল্ম"ই বলছেন। কারণ সংলাপ-এর বেশিরভাগই গানে গানে। তিন ঘন্টার সিনেমাতে তাহলে কত গান হতে পারে, কল্পনা করুন। অদ্ভুতভাবে অসংখ্য সে গানের সবকটাই আমার কাছে সামঞ্জস্যপূর্ণ। অদ্ভুত নয়? কন্সিস্টেন্সি রাখতে পারাটা কি চাট্টিখানি কথা?
তা হঠাৎ খামোকা সব গানে-ভুবন-ভরিয়ে-দেব কেন? লজিক হ্যায়। "জাগ্গা জাসুস" তোতলা, মানে একটু নয়, বেশ ভালো রকম। গানে গানে কথা বললে ব্যাপারটা নাকি স্মুথ হয়ে যায়। ওই মিউসিক ডিরেক্টর প্রীতমের নিজস্ব এক্সপেরিন্সও তাই। ওর ইন্টারভিউতে এ কথা বহুবার শুনেছি।
যদিও খুব কম জায়গায়, তথাপি, "গলতি সে মিস্টেক" হয়েছে। "জাগ্গা জাসুস" ভুলে গেছে সে তোতলা আর ফ্লুয়েন্টলি কথা বলে ফেলেছে। আমি ব্যাপারগুলো ইগনোর করেছি। এ ঘটনা এক্সসাইটমেন্টে হতে পারে বলে ধরেছি। হয় জগ্গার এক্সসাইটমেন্ট বা হয়তো অনুরাগ বাসুর।
হাতি-জিরাফ-বাঘ-গুহা- হিরোর চুলের স্টাইল সবই এলো পর্দায়। তাতে একটু বেশ টিনটিন এ ফিরে যাওয়া হলো। পুরুলিয়া, আসাম হয়ে, মরক্কো পৌঁছলো। আসামের বিহু হলো। "নাইফ থ্রো" হলো। "গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা। কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা" হলো। "শুন্ডি" হলো। কলকাতার "ইয়েলো ট্যাক্সি" হলো। “শাশ্বত-রজতাভ” হলো। মানে বাঙালিদের জন্য এক্সট্রা মাখো-মাখো, যেটা অনুরাগ বাসুর মুভিতে না পেলেই বরং মন খারাপ, সে সব একদম জোরকদমে ছিল। আর সেই একই কারণে অবাঙালিরা বেশিরভাগই গালি দিয়েছেন। গানে গানে গল্প বলে অনেকেই হাই তুলেছেন। হাতির মাথার ওপর চেপে বিয়াল্লিশ তলা থেকে ঝাঁপ মেরে আবার লাফ দিয়ে গার্লফ্রেন্ডকে কাঁখে করে সোজা বিয়ের মণ্ডপে পৌঁছে যাওয়া টাইপ "সিম্পল" সিনেমাটিক কিছু নেই বলেছেন। তার ওপর আবার বাঙালিদের নিয়ে বাড়াবাড়িটা, "আগুনে ড্রপিং ফ্রেশ ঘি"। আমার কথা হচ্ছে, আইডিয়াটা এদেশে নতুন। সেইটা মানতে হবে ভায়া। শুধু একটাই ইয়ে ইয়ে ব্যাপার। বেশ কয়েকবছর আগে একটি হলিউড মিউজিক্যাল ফিল্ম "দি সাউন্ড অফ মিউসিক" দেখেছিলাম। সেটি সাধারণ একটি গল্পকে অসাধারণ করে তুলেছিল শুধুমাত্র মিউসিক ছিল বলে। মিউসিকের সব লিরিক্সের মানে বোঝা না গেলেও গল্পটা সিম্পল বলে কোনো ঠোক্কর খেতে হয়নি। এবার "জাগ্গা জাসুস" যেহেতু ডিটেক্টিভ তাই প্রতিটি শব্দ-বাক্য পরিষ্কার শোনা বা বোঝার প্রবল চেষ্টা ছিল, তা যাচ্ছিলোনা মিউজিকের জন্য বা ছন্দের জন্য বা স্পীডের জন্য বা আমার ব্রেনের সিগন্যালের জন্য। ঐটাই যা.... কিন্তু তা রসে ব্যাঘাত ঘটায় নি। বরং দুটো গান বেশ মনে ধরেছে। সোশ্যাল মেসেজ দেওয়া,"কিষান সুইসাইড কর রাহা হ্যায় তো হামারা কিয়া, হাম তো নিম্বু মির্চি লাগাকে সেফ হ্যায়।" অন্যটি,"জিনা তো উনহিকা জিনা কাহালায়া, জোভি বিনা চু চা কারকে, খাকে-পিকে চলে গায়ে।"
না না এতো কিছুর পরেও এটা মুভি রিভিউ-টিভিউ নয়। আসলে লোকজন বলছে প্রচুর জায়গা থেকে নাকি কপি-টপি হয়েছে। আমার কাছে যুক্তিগুলো একেবারেই ধোপে টেকার মতো না। বাঙালির ইমোশনগুলোকে ইঙ্গিতে রেখেছেন সারা সিনেমা জুড়ে, হ্যা তা বলতে পারেন। তাতে তো বাঙালিদের খুশিই হওয়া উচিত। বাঙালিমুভির যা হাল ৮০-এর পর থেকে, এই অনুরাগ, প্রীতম এরাই তো আবার একটু হাল ধরছেন। বাঙালিদের তাতেও প্রব্লেম। রাবণের চেয়ে বিভীষণ মার্কেটে বেশি। যাই হোক রিস্ক নিয়ে এতো সুন্দর একটা প্রজেক্ট করার জন্য পুরো টীমকে হৃদয়মার্কা ইমোজি।
আর ইয়ে সৌরভ শুক্লা ভদ্রলোককে আবারো প্রণাম।

Tuesday, 4 July 2017

জিরো

 -কিরে মুখটা ওরকম করে আছিস কেন?
- মামা, পাউট প্র্যাক্টিস করছি। এ এ এ মমম ঐটা হলো পাউট। সেলফি নিতে লাগে, আবার উত্তমবাবুর মতো গোল গোল ধোঁয়া ওড়াতেও লাগে।
- তোদের পাউটে ইয়ে..... ও সব জিরোর খেলা।
- জিরো? সেটা কোথা থেকে এলো।
-তুই একটু জিরো বাবা। আমি বোঝাচ্ছি। উত্তম বাবুর মুখ থেকে কি বেরোচ্ছে? জিরো, মানে শূন্য. বুঝলি?
- ও।
- ইয়েস ও। জানিস কি আদিম টাইপরাইটার-এ দেয়ার ওয়াস নো জিরো। জিরোর কোনো লিখিত গুরূত্ব সেখানে নেই। ইংরিজির o দিয়ে কাজ হয়ে যেত তো।
- ও। তা আজকাল তাহলে জিরোর আলাদা বাটন কেন?
- অভিমানী জিরোর আইডেন্টিটি ক্রাইসিস হওয়াতেই..... তাছাড়া o কিরকম ওয়েইট গেইন করেছে দেখেছিস? ক্যালোরি নিয়ে ওর চিন্তাই নেই। ওদিকে জিরোকে ওসব নিয়ে ভাবতে হয়। পৃথিবীর শুরু এবং শেষএর মাঝে আছে শূন্য। সাংঘাতিক রিস্কে। তাই তো একটা স্লিম o হিসেবে জিরো। আবার অঙ্কের হিসেবে যা নাল, পাতি ভাষায় বাতিল।
-মানে কোনো দাম নেই?
-আছে। দৃষ্টিভঙ্গির বদলে। এই যে দূরদেশে ফোন করবি? শুরুতেই একটি শূন্য ছাড়া সে নম্বর ডায়াল করা অসম্ভব। মানে জিরো হলো শুরু। আবার হিমাঙ্ক হিসেবে দেখ। শূন্যতেই তরল থেকে কঠিনে পরিণত হওয়া। মানে ঘুরে দাঁড়ানো অন্যায়ের বিরুদ্ধে।
-মানে পসিটিভিটি?
-মমম মানে নেগেটিভিটির আগের অবস্থা। যেমন অণু-পরমাণুর খেলা। নিরপেক্ষ, প্রশমিত, উদাসীন। এক তুরি নয়, ওই এক শূন্যমার্কা ফুঁ ই দিতে পারে সব লন্ড-ভন্ড করে। এই যে কথায় কথায় "ও" বলছিস। মানে সম্মতি। আবার সভ্যতার ভাষায় সম্পর্কশূন্যতাসূচক অবস্থার ঠিক আগের মুহূর্ত। মানে একেবারে নেই তা নয়, আছে। আবার মুহূর্তে তা নেই হযে যাওয়ার সম্ভাবনাও আছে। ওই সম্ভাবনা। ঐটি হলো শূন্য। শূন্য মানে সম্ভাবনা।