Wednesday, 12 September 2018

একটি অদ-ভূত

গল্পের প্লট:
একটি গ্রাম, গ্রামে অন্ধকার, গ্রামে বন-জঙ্গল, গ্রামের ভীতু গ্রামবাসী, গ্রামের ভীতু গ্রামবাসীর কুসংস্কার। অর্থাৎ যুগ যুগ ধরে হেজিয়ে দেওয়া অতি পরিচিত ভূত-ভূত প্লট।

গল্পের অদ-ভূত:
একটি মহিলা।

ওনার বৈশিষ্ট্য:
লাজুক মহিলা যার মুখের অর্ধাংশই ঘোমটা ঢাকা। ইনি ওড়েন। হাত-পা না নাড়িয়েই, জাস্ট উড়তে পারেন। ওনার টার্গেট মূলতঃ পুরুষ। তবে আচমকা নিরীহ পুরুষদের ওপর চড়ে বসেন না। যথেষ্ট সতর্কীকরণ বার্তা জানিয়ে তারপরই হামলা করেন। প্রথমে ফিসফিসিয়ে তার নাম ধরে ডাকেন। তারা সাড়া দিলে ধাঁ করে কাঁধের কাছে পৌঁছে যান। এবং তখন সময় দেন। পুরুষটি যদি মুখ ঘোরায়, তবেই তাকে উনি সম্মতি বলে ধরেন। নচেৎ কি করেন, তা জানা নেই। কারণ এযাবৎ ওনার ডাকে সাড়া না দিয়ে কেউ থাকেনি। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিধারণকারিনী এই মহিলা ভূত এরপর লেসার পয়েন্টার লাইট ফেলেন ছেলেটির চোখে। ব্যাস। কোথায় যাবে। পুরুষটি আন্ডার হার কন্ট্রোল এন্ড টেকেন ইনটু হার ডেরা। এই ভূতের বিশেষত্ব হলো, ইনি নিজে চব্বিশ হাত কাপড়ে ঢাকা থাকলেও শিকার নেওয়ার সময় পরিবেশের প্রতি যথেষ্ট সচেতনতা দেখান। তাই পুরুষটির জামাকাপড় রিসাইক্লিং -এর জন্য ওখানেই ফেলে শুধু শিকারটিকেই বগলদাবা করে কেটে পড়েন।

ভূত তাড়ানোর উপায়:
গ্রামের সবাই এই মহিলা ভূত এবং তার পদ্ধতি-প্রণালী সম্পর্কে অবগত। তাই তারা প্রত্যেকে বাড়ির দেওয়ালে দেওয়ালে, ওই মহিলাকে না আসার অনুরোধ জানিয়ে দেওয়াললিখন করে রাখে। লক্ষণরেখা কনসেপ্ট। মহিলা ভূতটি শিক্ষিত, শিষ্টাচার-সমৃদ্ধ এবং ভদ্র বাধ্য। দেওয়াললিখন থাকলে উনি সে বাড়ির পুরুষদের বাড়িতে থাকা অবস্থাতে শিকার কনসিডার করেন না। কিন্তু রাস্তাতে হাতে নাতে ধরেন।

কেসটা কি:
"স্ত্রী"।
বাড়ির পুরুষদের বিনা কাপড়ে গায়েব করা ভূত তাড়াতেই হবে। এই বেমক্কা রাস্তা-আক্রমণ রুখতে এবং এই অদ-ভূত চিরতরে তাড়াতে যে পরিস্থিতি পরিবেশ তৈরী হয়, তাই নিয়েই সিনেমা "স্ত্রী"। এক বালতি পপকর্ন শেষ করেও গল্পের শেষে মাথা চুলকোতে চুলকোতে হল থেকে বেরোলেন। গল্পের “হরর” হড়হড় করে মাঝপথেই মুখ থুবড়ে পড়ল। "কেসটা কি হলো" এই নিয়েই কো-অডিয়েন্সের সাথে আলোচনা করতে করতে ওলা ধরে বেহালা পর্যন্ত পৌঁছে গেলেন। কিন্তু কিছুতেই শেষে কি হলো, কেন হলো, গভীরে গেলেন, আরো গভীরে গেলেন, কিন্তু কেসের তল খুঁজে পেলেন না।
এই হলো "স্ত্রী"।



পুনশ্চ: রাজকুমার রাও, অপারশক্তি খুরানা, অভিষেক ব্যানার্জী এবং পঙ্কজ ত্রিপাঠি একসাথে এই অদ-ভূতকে আউট এন্ড আউট কমেডি করে তুলতে পেরেছে। ওদের অভিনয় দুর্দান্ত। ডায়ালগ রাইটারকে স্যালুট।

No comments:

Post a Comment