Wednesday, 14 February 2024

এসব নাটক আর কতদিন

 'আমরা নতুন যৌবনের দূত' অর্থাৎ এএনজেডি এবং 'আমরা সবাই রাজা' অর্থাৎ এএসআর, এই দুটি ক্লাবের ঝগড়া ধারাবাহিক। এতটাই, যে এবার ইতিহাসের পাতায় নাম উঠল বলে।

কালীপুজোতে এএনজেডি এএসআর-এর একটি ছেলের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলো। এএসআর পরের দিন এএনজেডি-র ক্লাব হানা করে চারজনকে থ্রেট দিয়ে আসে। এএসআর-এর একজনের মনে হয় খেলাটা এক-এক হয়নি। তাই সে রাতের অন্ধকারে এএনজেডি-র ক্লাবে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় এক সদস্যকে আধমরা করে। এবার খেলাটা বেশ এক-এক হয়। পরের রাউন্ডে এএনজেডি তৈরী হচ্ছে। এএসআর রাতের পর রাত বসে ছক করছে আক্রমণ সামলানোর। সরস্বতী পুজোর আগের দিন, এএনজেডি এএসআর-এর ক্লাবে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাড়ার সবাই বিরক্ত। পাড়া প্রায়ই টেনশনে থাকে, এই বুঝি আবার ঝামেলা। পাড়ার মাথারা মধ্যস্থতা করেছেন বহুবার, বহুবার সমঝোতার চেষ্টা হয়েছে, ফল জিরো।
মোহনবাণী শোনালেন দাদু। দাদু বলেন, এই এক-এক খেলা একটা অসভ্যতা। প্রতিশোধের স্পৃহা মানুষকে অসভ্য করে তোলে। চোখের বদলে চোখ নিলে পৃথিবী অন্ধ হয়ে যাবে।
এসব শুনে এএসআর ক্লাব এই আগুনের পরের চাল নিয়ে আলোচনায় বসে। ঠিক করে কোনও মারামারি নয়, পাড়ার কেউ যেন এএনজেডি-র সরস্বতী পুজোতে না যায়। এভাবেই তাদের শাস্তি দেওয়া হোক। এড়িয়ে যাত্তয়া যাক। দেখা যাক কী হয়! উত্তম প্রস্তাব। পাড়ার সকলে এই উদারতার রায়ে ধন্যধন্য করে ওঠে।
কেউ এএনজেডি-র সরস্বতী পুজোতে যায়নি। কেউ না!
সত্যি? কেউ না?
পাড়ার কয়েকজন গিয়েছিল। বেমালুম গিয়েছিল! শুধু যায়নি, জমিয়ে আড্ডা মেরে, লেচে-গেয়ে রীতিমতো যাকে বলে এনজয় করে এসেছে।
তাতে এএনজেডির সাহস কয়েক লিটার বাড়ে আর এএসআর-র বুক ফাটে। কী হল এভাবে এড়িয়ে গিয়ে। দুশমন এখন কলা দেখাচ্ছে। আর এদিকের লোকজন যারা সৎ হয়ে পুজোয় গেল না, মাথা নিচু করে চলছে।
পাড়ার হারু ডাক্তার পুরো ব্যাপারটা শুনে বলেন,ধুস। মন খারাপ কেন। ভালোই হল তো! ক্যান্সার চিনে নাও। ওই যারা একবার এদিকের খেলেন আবার ওদিকেরও ফেললেন না।
দাদু বললেন, ঠিক তাই। এই বিভীষণ চেনাও বিরাট বিষয় খোকা। আগে তাদের অন্তরাত্মাতে কড়া পড়ুক। তারপর বাইরের শত্রু। ওদের বাড়ি সরস্বতী পুজোর স্পেশাল প্যাকেট পাঠানো হোক, সঙ্গে ফুল, 'গেট ওয়েল শুন'
পাড়ায় পোস্টার পড়ল:
'এসব নাটক আর কতদিন, ভাবের ঘরে চুরি,
গান্ধীও এবার স্বর্গ থেকে, এগিয়ে দেবেন ছুরি।'



No comments:

Post a Comment