Thursday, 27 March 2025

রঙ্গমঞ্চ

 মশাই, আজ বিশ্ব নাট্য দিবস।


নাট্য বলতেই রঙ্গমঞ্চ আর রঙ্গমঞ্চ বলতেই সেই আনন্দ-ডায়ালগ,"Babu moshai, Hum sab to rangmanch ki kathputliyan hain" আর এই ডায়লগ-এ মন ফিলোসফার।

নাট্য বলতেই রঙ্গমঞ্চ আর রঙ্গমঞ্চ বলতেই তালিয়া আর মেল্পমেনে -এর মুখোশ। তালিয়া হাসির আর মেল্পমেনে কান্নার প্রতীক।

নাট্য বলতেই রঙ্গমঞ্চ আর রঙ্গমঞ্চ বলতেই দমবন্ধ কষ্টগুলোকে প্যান্ডোরার বাক্স থেকে বার করা।

নাট্য বলতেই রঙ্গমঞ্চ আর রঙ্গমঞ্চ বলতেই HASO JIYO MUSKURAO......KYA PATA ....KAL HO NA HO।

নাট্য বলতেই রঙ্গমঞ্চ আর রঙ্গমঞ্চ বলতেই "পর্দা উঠে গেছে, অডিয়েন্স হা করে তাকিয়ে, ইট্স টাইম ফর অ্যাকশন"

(ছবিটা: গ্রীক থিয়েটারে ব্যবহৃত প্রবীণতম মুখোশ।)


২৭ মার্চ ২০১৮ 


তৃতীয়

 

থ্রি ইডিয়টস বা থ্রি মাস্কেটিয়ার্স এর মতো বন্ধুত্বে "তৃতীয়" ব্যাপারটা সর্বদাই উপাদেয়।

প্রেমের ক্ষেত্রে "তৃতীয়" একটু স্পীড ব্রেকারের মতো আচরণ করে বটে, তবে সেটা আছে বলেই এ ধরাতে ভুরি ভুরি প্রেমকাব্য-এর প্রোডাকশন।

অলিমিপিক্সে "তৃতীয়" একটি সম্মানজনক স্থান বটেই।

ভূতের রাজাও দুয়েতেই খেল খতম করতে পারতেন তবু তিনের মাধুর্য্য বুঝে, দিলেন তিন নম্বর বর ঠুকে।

বেশ।

তবু কোথাও যেন ওই এক আর দুয়ের উত্তেজনা-আবেগ-হুজুক, তৃতীয় ব্যক্তি অব্দি পৌঁছতে পৌঁছতে কেমন ম্লান হয়ে যায়।

যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়েও অসামান্যদের ভিড়ে ন্যূনতম।

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র তো আর ক্রিকেটের মাঠ নয়, যেখানে তৃতীয় একজন আম্পায়ার এবং উনিই শেষ কথা।


২৭ মার্চ ২০১৯ 



Tuesday, 25 March 2025

হাওয়ার শনশন টু ঝনঝন

 - এই হ্যাল্লো।

- বলো

- বলছি যে, জানো আমি এখন ছাদে। কি ভালো লাগছে জানো ......

- সেকি কালবৈশাখী হচ্ছে শুনলাম।

- সেইজন্যই তো।

- মানে! কালবৈশাখীতে ছাদে!

- আসলে তোমার কথা ...

- আমার কথা!

- হ্যাঁ গো! তোমার কথা মনে করতেই মনে ঝড় উঠলো। দেখি বাইরেও তেমনই অবস্থা।

- হা হা।

- ঝড় উঠতেই ছুটে এলাম। এই যে হাওয়া ... উড়িয়ে নিয়ে আমাকে তোমার কাছে পৌঁছে দিক এই মুর্হুতে।

- তাই বুঝি! 

- আমি পাখির মতো উড়তে...এএ ... উড়তে...এএ... হাওয়ার শনশন শনশন শনশন ....... এ একি! একি!

- কী হলো?

- এএই কিসের ঝনঝন ...... এ এই এ হে হে ...... এ হে

- কী হলো, কী হলো ... কী বলছিলে আমার কথা মনে করে ঝড়  ...

- ধুস রাখো তো ..... আমার সব বাসন পত্তর পড়লো গো ...... এ হে হে

(কালবৈশাখী ক্লাসিক)

২৬ মার্চ ২০১৯ 




Sunday, 23 March 2025

ইটস নাথিং লাইক গঙ্গার হাওয়া

 সন্ধ্যের আকাশটাতেই তোমার সাথে,

গঙ্গার ঘাটে, বেশি, অনেক বেশি মানায়।

মানাবে যে,তা জানতাম যাওয়ার আগেই,

গিয়ে দেখি, রংটা ঠিক যেমন ভেবেছিলাম।

আংটি বদল, নকল নকল, খেলা খেলা,

স্ট্রিটলাইট, জলের শব্দ, সন্ধ্যেবেলা,

ভালোলাগা দুম করে ভালোবাসা হওয়া,

সত্যি বলছি ইটস নাথিং লাইক গঙ্গার হাওয়া।


২৩ মার্চ ২০১৯ 




বলি আবহাওয়াটা কেমন? আবহাওয়া?

বলি আবহাওয়াটা কেমন? আবহাওয়া?

রাত্তিরেতে চাদর আর দিনে রোদের তাওয়া।

ঝালে-ঝোলে-মশলা মটন?

পাকস্থলীর খারিজ করে দেওয়া।

যথারীতি ট্রাফিক আর ভ্রূকুঞ্চিত কপালে চারিদিক ছাওয়া।


বলি আবহাওয়াটা কেমন? আবহাওয়া?

কবির নামে এফআইআর, ধর্ম বাঁচানোর দাওয়া।

সবার চাই পাব্লিসিটি, নেতিবাচক হলোই বা, ওটাই "মেওয়া"।

নিজের মধ্যে অবিশ্বাসের মাল্টিস্টোরিড তৈরী হওয়া।


বলি আবহাওয়াটা কেমন? আবহাওয়া?

আকাশ এখন আর সে নীল নেই, ধূসর রং থেবড়ে যাওয়া।

ফাল্গুন ঠেঁটা, চৈত্র বেয়াদব, তাতে বরং একটু স্বস্তিই পাওয়া।

নিয়ম এখন কষ্টদায়ক, মানুষজন অনিয়মেতেই সওয়া।


আর আবহাওয়া? শশশসসসস আবহাওয়া?

সে আজকাল তৈরী হয়, মেশিন যায় পাওয়া।

যার যেমন ইচ্ছে বুঝলেন?

নগদের মাপকাঠিতে পুষিয়ে দেওয়া।


২৩ মার্চ ২০১৭ 

আজ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস (World Meteorological Day)



Saturday, 22 March 2025

সেই মহামারীর সময়


মহামায়া কাকিমা সকাল থেকে অবাক। বুক ধড়ফড় আজ অনেক কম। বাসবী বললো, ওই যে গাড়িঘোড়া রাস্তাতে সংক্ষিপ্ত। হর্ন ও কম। তাই .....।

টিভি টা আজ অনেক মাস পরে কাজে লাগছে দত্তবাবুর।

গৃহবন্দি আসামীর কানা মামা।

রাকা আজ রান্না করবে! যেমন তেমন নয়, পোস্তর বড়া। বাড়ির লোক হা।

রসিকবাবু আজ বহুবছর পর গিন্নীর সাথে বসে দাবা খেললেন।

শরণ্যা পুরুলিয়া যেতে পারলো না, আবার ঘুরতে যাওয়া ক্যান্সলড হলো। কাল সারারাত কান্নাকাটি। মা বলেছে, আজ স্পেশাল চিংড়ি বানাবে। তোড়জোড় শুরু। সকাল থেকে তাই পুরুলিয়ার দুঃখে সাময়িক বিরতি।

পিউ আজ প্রায় ৭ বছর পর হারমোনিয়াম বের করলো, ধুলো ঝাড়ল, শুধু কি তাই? "আকাশ ভরা সূর্য তারা" শুরুতে একটু হোচট খেলেও, পরে সহজেই বাজাতে পারলো।

চঞ্চল আজ বাবার সাথে লাঞ্চ করলো এক টেবিলে বসে, আফটার এ লং ইলেভেন ইয়ার্স গ্যাপ। নাহয় জোর করেই, দুজনেই ভিতরে ভিতরে এক আজলা স্বস্তি নিশ্চয় অনুভব করেছে।এই এই রে ....... কি হলো।

পলাশ প্রিয়া চিৎকার করছে ছাতে? পড়ে গেলো নাকি! কি বিপদ হলো রে বাবা। কি হলো? হ্যাঁ? বসন্তবৌড়ি এসেছে বুঝি, হ্যাঁ হ্যাঁ ওই আম গাছের ওই ডালে। হা হা হা হা। পলাশ প্রিয়ার ক্যান্সার স্টেজ ৫ এ প্রতিটা মুহূর্ত যখন তাড়াতাড়ি হুড়োহুড়ি করে চলে যাচ্ছে, বসন্তবৌড়ি আজ গুপীর গানের মত হঠাৎ সব থামিয়ে দিল।

খুব সহজেই ভীষণ রকম স্পেশাল হয়ে উঠলো "আজ"।


মাঝে মাঝে সব কিছুই বড্ড ভালো লাগে। ইন্দ্র বলবে, লজিক আছে নিশ্চয়। ধুস, ভালো লাগছে ব্যাস। কোনো কারণ থাকুক বা না থাকুক। ভালো লাগছে।


২২ মার্চ ২০২০ 



Friday, 21 March 2025

কোভিড

বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাতাসে NO2 শার্প ফল করেছে।

রাস্তাতে লোক কম, গাড়ি কম।

প্রকৃতি রিকভার করছে। দম নিচ্ছে।

প্রকৃতির এই ষড়যন্ত্র করা ছাড়া বোধহয় আর উপায় ছিল না।

মানুষের অত্যাচার থামছিল না শত হিন্টসেও।

কথা বলতে পারেনি, গলা তুলতে পারেনি, ঘুষি মারতেও না।

প্রকৃতি একটু রিকভার করে নিক।

খেলাটা তারপর সামনে সমানে হবে।

২১ মার্চ ২০২০ 



Thursday, 20 March 2025

বাঙাল-ঘটি, আমি কি?

 ‘মোহনবাগা …................…ন’

পাশের বাড়ি থেকে হঠাৎ চিৎকারটি দমকা এল,
কিছু একটা ভাবছিলাম, চিৎকারে তা গুলিয়ে গেল!
ওই বোধহয় ম্যাচ আজকে, গোল দিল মোহনবাগান,
তবে তো শুরু হল বলে পাশের বাড়ির বাঙাল-স্লোগান!
বাঙালিদের চিরকালীন বাটি-ঘটি ঠোকাঠুকি,
ইলিশ্-চিঙড়ি, পাতুরি-পোস্ত, ঝাল-মিশ্টি টুকিটাকি.
“বাঙাল? হদ্দ নোঙরা! ঝগরুটে!
শাক-লতা-পাতা দিব্বি খায় চেটে-পুটে!
বিঘা-বিঘা জমিদারির গপ্পো! শুধু ওদের বুকনি,
আমাদের দেশে এসে আমাদেরই চোখ রাঙানি!"
"ঘটি! আলু-পোস্ত আর চিঙড়ি এ ছাড়া কিছু বোঝে,
আতিথেয়তা জানে? শুধু কিপটেমিটাই আছে!
পায়রা ওড়ানো বাবুয়ানার দল আমাদের বলে ঝগরুটে?
ওরা তবে কি? স্বার্থপর-হিংসুটে!”
পরিচিত মতবিরধ, চেনা তর্ক অনন্তকালের,
ভাবি বসে একান্তে, অমি তবে কোন দলের?
চিঙড়ি মাছের মালাইকারি আমার লাগে বেশ!
চুনো মাছের পাতুরি এক নিমেষে শেষ!
লুচি-ছোলার ডাল, ইলিশ মাছের ভাপা,
নকুরের জলভরা আর পাটি-সাপটা!
শুনেই চোখ চকচক, জিভে জল ভাসে,
বাঙাল না ঘটি, তখন কি মনে আসে!
"আমাগো দেশে আমার বাপের বিঘা-বিঘা জমি সিলো,"
"নুচি-ছোলার ডাল করেছি, খেয়ে বাপু এঁটো পেড়ে নিও."
উত্তমকুমার আহিরিটোলা, সুচিত্রা সেন পাবনা.
বাঙাল- ঘটির এই জুটিটি সিনেমায় আনলো রেনেসাঁ.
‘মাসিমা মালপো খামু’ ভানু ব্যানার্জির কির্তি,
আর রবি ঘোষের বিখ্যাত ‘গল্প হলেও সত্যি’!
রবি ঠাকুর যদি গীতাঞ্জলি, জীবনানন্দ তবে বনলতা,
অমর্ত্য সেন-সত্যজিৎ বাঙাল-ঘটি পেরিয়ে বিশ্ববিজেতা.
এরা সবাই আমার প্রানের, এরাই আমার বাঙালিয়ানা,
বাঙাল-ঘটির মিশ্রনে আমি তবে বাঘ একখানা.
২০ মার্চ ২০১৭  







Wednesday, 19 March 2025

ঘুম স্টেশন

ঘুমের ঘোরে বোঝা যায়নি,

ঘুম স্টেশন এসে গেছে।

ঘুমন্ত রায় বললেন,

লন্ডনে ghum নামে,

একটি punk rock মিউজিক ব্যান্ড আছে,

তাঁর গান শুনলে ঘুম উড়ে যাবে।

উড়ে কোথায় যাবে?

গভীরতা হালকা হলে পাঞ্জাবের ঘুমান এ।

আর যদি অন্তরের ডাক আসে,

তবে হিমালয়ের ঘুম monastery তে পড়বে ঝপাং করে।


১৯ মার্চ ২০২১ 




Tuesday, 18 March 2025

ঢুলু ঢুলু সন্ধ্যে

 ঢুলু ঢুলু সন্ধ্যে।


গ্লাস ফুল যাদের চোখে পড়লো, দেখে এড়িয়ে গেলো।

কেউ একটা টু-শব্দ করেনি।


গ্লাস হাফ যাদের চোখে পড়লো, দেখে থমকে গেলো।

"রাম" নাম জপতে লাগলো।

ফুল গ্লাসে তিনি দিব্ব্যি মিস কোলা,
হায়,
হাফ গ্লাসে লোকে রটালো "রাম-লীলা"।

সন্ধ্যের আলো মাতালের চোখে লাগে?
নাকি মাতালের তালে সন্ধ্যে নেচে ওঠে?


১৯ মার্চ ২০১৮ 



Tuesday, 11 March 2025

ভালো করে ঘুমোও, ঘুমোলেই ঠিক হয়ে যাবে

 "ভালো করে ঘুমোও। ঘুমোলেই ঠিক হয়ে যাবে।

ঘুম থেকে উঠলে রাগ কমে যাবে।
ঘেন্না মিলিয়ে যাবে।
দুঃখ ভুলে যাবে।"
একবারে রক্তপাত না হলেও ভিতরে ভিতরে কিছু চিড়চিড় করছে।
একটা ধারালো কিছু বিঁধছে।
বাইরে কিছু নোংরা পচছে। ভীষণ দুর্গন্ধ।
একটু পরে সবাই সে গন্ধ পাবে।
গলার কাছে রাগ দলা পাকিয়ে।
মাথা ঘুরছে। চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে।
গলা ফাটিয়ে।
এমন এক চিৎকার, যাতে পুরো শহর কয়েক সেকেন্ড থমকে যায়।
অতর্কিতে। কাঁদতে ইচ্ছে করছে।
বঙ্গোপসাগর আর আটলান্টিক এক করে দেওয়া কান্না।
গিলে ফেলার নাটকে ক্লান্তি বড়ো।

"ভালো করে ঘুমোও। ঘুমোলেই ঠিক হয়ে যাবে।
নেশা করো নেশা। তাতে ঘুমঘুম হবে।
ঘুম থেকে উঠলে রাগ কমে যাবে।
ঘেন্না মিলিয়ে যাবে।
দুঃখ ভুলে যাবে।"

ইউটোপিয়ার বাউন্ডুলে

 

কান্না নেই, ঘেন্না নেই,

কষ্ট আবার কাকে বলে!

ইচ্ছে নেই যাচ্ছেতাই,

ইউটোপিয়ার বাউন্ডুলে।


শুধু পূর্ণিমাচাঁদ ওঠে যেই,

সবটা কেমন গোলমেলে,

একটা ঘুমঘুম ট্যাবলেট,

ইউটোপিয়ার বাউন্ডুলে।


১২ মার্চ ২০১৯ 


Monday, 10 March 2025

রোববার বিকেল মেনু

 রোববার বিকেল মেনু:

গরম চা
তেলে ভাজা
মুড়ি
কোহলি না সচিন
মটনের দাম বেড়েছে
সিকিম টা এবারও মিস
গরমটা এবার ভালোই পড়বে
অফিসের বসের অযৌক্তিক দাবি
আশেপাশের নন ইন্টেলেকচুয়েল বকওয়াস
পুরোনো প্রেমটা
রান্টাক না জেলুসিল
হোয়াটসঅ্যাপ চুটকি
মুড়ি
তেলেভাজা
গরম চা 

10-mar-2019



Friday, 7 March 2025

সাতজন্মের বন্ধু

আমার যখন তোর সাথে মেলে,
সবটাই আদ্যোপান্ত মেলে।
গাই, হাসি, শুনি, ভাবি, বলি,
কোথাও এতটুকু হোঁচট নেই।
ঠিক যেন সিনেমা একটা,
লোকজন বলে, স্ক্রিপ্টেড।
আর যখন মালিন্য হয়,
মন অচেনা অচেনা ঠেকে,
তখন সহজ কথা, নরম সুর,
হার্ড মেটাল হয়ে যায়।
নতুন করে চেষ্টা করি তখন,
বোঝাতে চাই "আমার" কথা।
তুই তখন বোঝাতে চাস তোরটা,
বেতালে সবটা ঘেটে যায়।
কথার পর কথা হয়ে যায় শুধু,
শেষটায় সব যায় গুলিয়ে।
চিৎকার, ছটফট, অশান্তি,
হাঁসফাঁস গুমোট লাগা,
ভয়ানক বুক চিনচিন,
এক মুহূর্তে সাতজন্মের বন্ধু,
তাকলামাকানের পরদেশী।
পালিয়ে যেতে চাই, যাইও।
দমবন্ধ কাটতে না কাটতেই
প্রচন্ড মিস করি তোকে।
তুইও বোধহয় ফোনে আমার
মেসেজের অপেক্ষা করিস।
ফের দুজনে চেষ্টা করি,
নতুন করে টিউন করতে।
তুই আবেগ গোলা "সরি"
বললে, আমি কেঁদেই ফেলি।
মাথা ঝাঁকিয়ে তোকে বলি
"কেন যে এতো দেরি করলি"।

০৭ মার্চ ২০২০ 



Wednesday, 5 March 2025

কবিতা বললো

 কবিতা বললো,"আর পারছিনা, রাস্তা দিয়ে চলা দায়, থিক থিক করছে গল্প"

গল্প বললো,"কবিতার হেবি ঘ্যাম। পাশ দিয়ে গেলে এমন ভাবে তাকায় যেন গিলে খাবে"
উপন্যাস বললো,"আমার মাথা তোলবার সময় নেই, সবে ৪০০০০ হলো, ছুটছি আমি, অনেকটা পথ বাকি"

পাঠক কখনো সন্তর্পনে পা টিপে টিপে, কখনো এদিক-ওদিক দেখে, কখনো ছুট্টে পৌঁছে যায়।

কোথায় পোঁছায়?

ছাতিমতলায়।



সাড়ে চুয়াত্তর মণ

- কন্যে, বলো কি করতে পারি তোমার জন্যে। পরশু তোমার হ্যাপি বাডডে।
- ধুস বাদ দে।
- সেকি? কেন?
- বানান ভুল ওয়ালা ঢাউস কেক আনবি প্রতিবারের মত। এর চেয়ে বরং ডেট টা ভুলে যা। সারপ্রাইজ হবে ওটাই।
- কি জ্বালা। লোকে ডেট ভুলে যায় বলে কত গালি খায় আর আমি মনে রাখি তাই খাই। দামী গিফ্ট তুমি নেবে না বলে সাশিয়ে রেখেছ কত ছয় জন্ম। কেক হল স্রেফ .....
- সেফ। জাস্ট সেফ খেলা। তুই বরং আমাকে একটা রোমান্টিক চিঠি দে দেখি।
- পত্র? প্রেম? বাংলা?
- অবভিয়াসলি। বাংলা এন্ড উইথ নো স্পেলিং মিসটেক।
- এর থেকে বরং তোকে মাঝরাতে হুগলির লাইট হাউস এর উপরে উঠে আই লাভ ইউ বলবো? দই এর সর টা তুই খাস? মশারি আমিই টাঙানো র দায়িত্ব নিলাম এক্সট্রা ওয়ান উইক? কিন্তু পত্র! আমার হাতের লেখা দেখলে তুই যে তোর মানসিক স্থিতি হারাবি সোনা। এ রিস্ক নিস না।
- পত্র অ্যান্ড ওনলি পত্র। এ ছাড়া নো নত্রচত্র। আর চিঠির সামনে মিষ্টি করে লিখে দিবি "সাড়ে চুয়াত্তর".
- তুলসী বাবু, মলিনা দেবী, ভানু?
- হমমম সাথে পদ্মাবতী, আলাউদ্দীন খিলজী আর জহরব্রত
- মানে?
- চিঠির সামনে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ সংখ্যাটি লিখে রাখা মানে প্রাপক ছাড়া অন্য যে ব্যক্তি এই গোপনীয় চিঠিটি খুলে পড়বে তার ভাগ্যে সাড়ে চুয়াত্তর মণের নির্মম অভিশাপ নেমে আসবে।
-সাড়ে চুয়াত্তর মণ?????
-আলাউদ্দীন খিলজী চিতর আক্রমণ করলে, রাজ্যের পতনে নিজসহ প্রাসাদের নারীদের আত্মসম্মান রক্ষার্থে রাণী পদ্মিনী জহরব্রত করে মৃত্যুবরণ করল। সাথে কিছু সৈন্যও মৃত্যুবরণ করলো। এই আত্মহত্যা করা সৈন্য ও রাণীদের ছাইভষ্মের ওজন নাকি ছিল সাড়ে চুয়াত্তুর মন!

সেই থেকে শুরু গোপনীয় চিঠির সামনে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ সংখ্যাটি লিখে রাখা। যাতে চিঠির প্রাপক বাদে অন্য কেউ সেই চিঠি খুলে না পড়ে। অন্য কেউ সেই চিঠিটি খুলে পড়লে তার ভাগ্যে “সাড়ে চুয়াত্তর মণের অভিশাপ” নেমে আসবে। শুরুতে সম্ভবত যে কোনো গোপনীয় চিঠির জন্যই এই প্রথা চালু ছিল, পরে মূলত প্রেম পত্রের সামনে লেখা থাকত সাড়ে চুয়াত্তর। রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশ থেকে ক্রমশ এই প্রথাটি ছড়িয়ে পড়ে ভারতে এবং স্বাভাবিকভাবে অবিভক্ত বাংলাতেও।
- তুলসী বাবু কে তাই ওই ভোগান্তি পোহাতে হল। এবার বুঝলাম। 


০৫ মার্চ ২০২০