‘মোহনবাগা …................…ন’
পাশের বাড়ি থেকে হঠাৎ চিৎকারটি দমকা এল,
ওই বোধহয় ম্যাচ আজকে, গোল দিল মোহনবাগান,
তবে তো শুরু হল বলে পাশের বাড়ির বাঙাল-স্লোগান!
বাঙালিদের চিরকালীন বাটি-ঘটি ঠোকাঠুকি,
ইলিশ্-চিঙড়ি, পাতুরি-পোস্ত, ঝাল-মিশ্টি টুকিটাকি.
“বাঙাল? হদ্দ নোঙরা! ঝগরুটে!
শাক-লতা-পাতা দিব্বি খায় চেটে-পুটে!
বিঘা-বিঘা জমিদারির গপ্পো! শুধু ওদের বুকনি,
আমাদের দেশে এসে আমাদেরই চোখ রাঙানি!"
"ঘটি! আলু-পোস্ত আর চিঙড়ি এ ছাড়া কিছু বোঝে,
আতিথেয়তা জানে? শুধু কিপটেমিটাই আছে!
পায়রা ওড়ানো বাবুয়ানার দল আমাদের বলে ঝগরুটে?
ওরা তবে কি? স্বার্থপর-হিংসুটে!”
পরিচিত মতবিরধ, চেনা তর্ক অনন্তকালের,
ভাবি বসে একান্তে, অমি তবে কোন দলের?
চিঙড়ি মাছের মালাইকারি আমার লাগে বেশ!
চুনো মাছের পাতুরি এক নিমেষে শেষ!
লুচি-ছোলার ডাল, ইলিশ মাছের ভাপা,
নকুরের জলভরা আর পাটি-সাপটা!
শুনেই চোখ চকচক, জিভে জল ভাসে,
বাঙাল না ঘটি, তখন কি মনে আসে!
"আমাগো দেশে আমার বাপের বিঘা-বিঘা জমি সিলো,"
"নুচি-ছোলার ডাল করেছি, খেয়ে বাপু এঁটো পেড়ে নিও."
উত্তমকুমার আহিরিটোলা, সুচিত্রা সেন পাবনা.
বাঙাল- ঘটির এই জুটিটি সিনেমায় আনলো রেনেসাঁ.
‘মাসিমা মালপো খামু’ ভানু ব্যানার্জির কির্তি,
আর রবি ঘোষের বিখ্যাত ‘গল্প হলেও সত্যি’!
রবি ঠাকুর যদি গীতাঞ্জলি, জীবনানন্দ তবে বনলতা,
অমর্ত্য সেন-সত্যজিৎ বাঙাল-ঘটি পেরিয়ে বিশ্ববিজেতা.
এরা সবাই আমার প্রানের, এরাই আমার বাঙালিয়ানা,
বাঙাল-ঘটির মিশ্রনে আমি তবে বাঘ একখানা.
২০ মার্চ ২০১৭
No comments:
Post a Comment