Wednesday, 19 April 2017

পকেটমারাটা কোয়ালিফিকেশন নয়?

পকেটমারাটা কোয়ালিফিকেশন নয়? কোয়ালিফিকেশন নয় পকেটমারাটা?

কোন পকেটটা টার্গেট, দূর থেকে সেটা পরিমাপ করা। বাসে-ট্রামের দুলুনি সহ্য করা, লোকের ঘাম-বগলের গন্ধ সে সব তো ছেড়েই দিন। লোকজন নাকি ডিও মাখে। ধুর ধুর খুব খারাপ কোয়ালিটি। ডিও কোম্পানিগুলোর উচিত আমাদের থেকে রিভিউ নেওয়া।

সে যায় হোক, পকেটমারের ঝক্কি জানেন? পকেটের পিছনে সুড়সুড়ি দিয়ে মানুষকে কমফোর্ট দেওয়া। ভিড়ে ওই মসাজ খেয়ে যখন তারা মোটামুটি নিরূপদ্রব নিয়ন্ত্রণাধীনে, তখন বকশিস হিসেবে ঐটুকু আর এমন কি। তাতেও তো ঠকে যাই, মশাই। একে তো ওই মানিব্যাগগুলো সব চাইনিজ মাল, তার মধ্যে ক্যাটরিনা কাইফের দাঁত কেলানো ছবি, দশ টাকা, দাঁত খুচানোর কাঠি। এই সব দেখলে মটকাটা একেবারে.... একবার তো পেলাম পাঁচশো টাকা। পেয়েই মনে হলো, যাক আজ পিঙ্কিকে নিয়ে আটটা-এগারোটার একটা শো ঠুকে দেব। শ্লা, জানলাম টাকাটাই নাকি এখন অচল। সে টাকা ভাঙাতে লাইন-টাইন দিয়ে মাইরি, খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি হয়ে গেলো। মোবাইল ফোবাইল ছুঁই না। ও সব সালটানো খুব মুশকিল। মেয়েদের ব্যাপারেও হেভি রিস্ক। তাই ওব্যাপারে কোনোদিনই সাহস করিনি। তাছাড়া ওদের গলায়-কানে আজকাল যা সব আইটেম, ও সব দেখে ওদের জন্যই মায়া হয়। এক একবার মনে হয় ডেকে বলে দি, "দিদিমনি গলা-ঘাড়টা তো আপনার কালো হয়ে যাচ্ছে, ওসব বাজে কোয়ালিটির মাল পড়বেন না". তবে মেয়েদের মুডের ঠিক নেই তো, কিসে কি হয়, সেই ভেবে আর সাবধান করতে যাইনি।

আচ্ছা সবই কি খারাপ করি বলুন? এই মানিব্যাগগুলোর যা একেবারে জরাজীর্ন অবস্থা, পকেটমার হওয়ার পর যখন ভদ্রলোক নতুন আরেকটা কেনেন, মনটা কিরকম খুশি খুশি লাগে বলুন তো? সেদিন তো মানিব্যাগের সাথে একটা চিঠিও পেলাম। মাফ করবেন, পড়ে ফেলেছি, হে হে। ওতে যা পড়লাম তাতে বুঝলাম, বৌয়ের হাতে ওই টিনা-ময়নার চিঠি পড়লে, ভদ্রলোক খবরের কাগজের হেডলাইন হতেন। ভদ্রলোকটিকে কিরকম মারাত্মক বিপদ থেকে বাচালাম, বলুন। হয়তো, ওই ভদ্রলোকের খুব তাড়াতাড়ি ডিভোর্স হয়ে যেত, সে রাতে বাড়ি ফিরে পকেটমারির গল্প করতে করতে, বৌয়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লেন, তখন হয়তো আর ডিভোর্সের কথা ভাবতে ভালো লাগছে না তাদের।

আর এদিকে আমার কাছে বরং চিঠিটা সেফ। পিঙ্কিকে চিঠি লেখার একটা ইনস্পিরেশন কপি হিসেবেও রইলো। আমার তো আর কাব্য ফব্য আসে না। এইসব লিখলে পিঙ্কি হয়তো খুশি হয়ে উঠলো। সারাদিনের ঘাম, দুলুনি, ঠেলাঠেলি, মার্ খাওয়ার টেনশন, এসবের পর শুধু ওই ওর হাসি মুখেতেই তো সব জমা-খরচ ডেবিট-ক্রেডিট মিলে মিশে কিরকম যেন .... মম..... কিরকম যেন লাল-মার্কা তীর-চালানো-দিল হয়ে যায়।


No comments:

Post a Comment