নতুন বিয়ের পর অনেক কিছু
পরিবর্তন হবে, এই সাবধান বানীর অন্ত ছিল না. বিয়ের পর তাই যা কিছু পরিবর্তন তার সাথে মোটামুটি একপ্রকার সমন্বয়সাধন করা গিয়েছিল.
মদ্যপানের সাথেও.
এমনিতে বৌ আমার অপর্না সেন, শুধু ওই .. মানে .. মদ্যপান নিয়ে একটু ছায়াদেবী গোছের.
আমি আবার লুকিয়ে চুড়িয়ে কিছু করে বৌয়ের কাছে কেস খেতে নারাজ. তাই চ্যালেঞ্জটা নিয়েই
ফেল্লাম.সুযোগ বুঝলেই শুরু করলাম এলকোহলের গুরুত্ব-প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ছোট বড় অনুচ্ছেদ
ব্যাখ্যা. মুখ ঝামটা, রবিবার সকালের আধসিদ্দ আলুর দম, রাতের মশারি টানানোর বিরক্তিকর
ডিউটি সব মুখ বুঝে হজম করলাম. এট লাস্ট একদিন বৌ বলে ওঠে, "এনোতো দেখি একটা ওয়াইন,
কাল বিউটিশিয়ান রিনা টিভিতে বলছিলেন ওটা খেলে নাকি স্কিনে গ্লো আসে!" ইয়াহু উ
উ উ উ চাহে কোই মুঝে জঙলি কাহে..... ওয়াইন জিনিসটাতে আমিও তখন সেভাবে অভ্যস্ত নই যদিও,
লেকিন কুছ পরোয়া নেই.....বিউটিসিয়ান রিনাকে চুমু খেতে ইচ্ছে করলো। না মানে ধন্যবাদজ্ঞাপন হিসেবে। যাই হোক পরের দিনই একটা রেড ওয়াইন নিয়ে হাজির হলাম.. উত্তেজনায় ঘেরা
সন্ধ্যেতে গদ গদ গলায় বল্লাম, কি গো খুলবো? গিন্নীর ঘাড় নাড়া ওয়িথ মুচকি হাসি দেখে
আমি তো তখনই মাতাল. ওপরের প্লাস্টিকটা খুলতেই, দেখি বোতলের মুখে কর্ক. বুঝলাম যত সাধ্য
সাধনা এর আগমনের জন্য, আগমনের পরবর্তী বন্দোবস্তের প্রতি অবহেলা হয়েছে, মানতেই হবে.
কর্কস্ক্রু নেই বাড়িতে! ঠুকঠাক-দুমদাম-টানা-হ্যাঁচড়া যন্ত্রবিজ্ঞানের যাবতীয় কৌশল
প্রয়োগ করে যা দেখা গেল, হিতে বিপরীত হয়েছে, কর্ক আর ও ভিতরে ঢুকে গেছে! বৌয়ের ভুরুযুগল কাছাকাছি আসছে, মানে
আসন্ন ঝড়ের সংকেত. ওদিকে কর্কও বিপরীতমুখী. রাত তখন একটা. বৌ ইতিমধ্যে যুদ্ধের অভিপ্রায়
ত্যাগ করে হাই তুলছে আর ধীরে ধীরে গা এলিয়ে দিতে দিতে বলছে,"হোলো, বোতল খোলা?"
কথাটা স্ট্রেইট ছবি-বিশ্বাসী-অভিমানী-হৃদয়ে হিট করল. করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে. দৌড়ে রান্নাঘরে
গিয়ে পাতি বাঙলা আইটেম মানে সাঁড়াশি নিয়ে দিলাম এক বাঙালি ঠোকা কর্কের ওপর, ব্যাস কর্ক
আত্মসমর্পণ করে টুপ করে পরলো বোতলের মধ্যে, সাঁড়াশি ই ই ই, তোমায় কুর্নিশ..... বৌ, বোতল এট ইওর সার্ভিস.....
চিয়ার্স…
পুনশ্চ: বৌ গ্লাস হাতে নিদ্রালু
চোখে জিজ্ঞাসা করেছিল,"বোতলের ভিতরে ওটা কি ভাসছে যেন".... আমি বলেছিলাম,"
ও আমাদের প্রেম গো, ওই রূপরাশি আপনা বিকাশি. রয়েছে পূর্ণ গৌরবে ভাসি"
No comments:
Post a Comment