Saturday, 8 December 2018

টিকালো নাক

টিকালো নাক বড্ডো ওভাররেটেড বুঝলেন। সুন্দর মুখের ওয়ান অফ দি এলিমেন্ট হিসেবে টিকালো নাক ধরা হলেও নাকানিচোবানি কম খেতে হয়না। ফিজিক্স স্যার তো চুম্বকের বিপরীত মেরুর ধর্ম বোঝাতে, উদাহরণ দিলেন ক্লাসের টিকালোমোষ্ট নাক হোল্ডার পটার। ফুটবল, দেওয়াল, দরজা ইত্যাদির সাথে পটার টিকালো নাকের সম্পর্ক যেমন। পটা চুমু খায় চোখ খুলে। যতবার চোখ বন্ধ করে চুমু খেতে গেছে, গার্লফ্রেন্ডের মাথা স্ট্রেইট হিট ওন টিকালো নাক। মাথা ভোঁ ভোঁ। রোমান্সের সাড়ে সব্বোনাশ।
রসিকবাবুর কাছে দুঃখপ্রকাশ করতে রসিকবাবু বলেন, "যেমন বাজপাখির মতো তোমার নাক ....."
রসিক গিন্নি কনুই মেড়ে রসিকবাবুকে থামিয়ে বললেন,"বাজপাখি নয়, টিয়াপাখি। তোমার তো কোনোদিনই কান্ডজ্ঞান নেই ..... পটুবাবু তুমি ওসব বাজে কথাতে কান দিও না তো। কি সুন্দর লম্বা নাক তোমার ....."
রসিকবাবু,"হে হে নাক গলাতেও সুবিধে। হে হে ...... উফফ তুমি আবার চোখ পাকাচ্ছো কেন গিন্নি!! আমি বলছি টিকালো নাক ভালোই। এই দেখো না অটোগুলো। একটা চাকা ওরকম টিকালো নাকের মতো এগিয়ে থাকে। মার্সিডিজ-ফেরারিকে কেয়ারই না করে, হালকা নাক গলিয়ে দিলেই ব্যাস কেল্লা ফতে। পটে, নাকের গুরুত্ব কাছে বটে। মাঝে মধ্যে খুড়োর কল হিসেবে ব্যবহার করবে কিনা ভেবে দেখো তো খোকা? তবে চুমুটা চোখ খুলেই খেও।"

Friday, 30 November 2018

অশ্বিনীকুমার

রসিকবাবুর পেট ব্যাথা।
কখনো পেটের ডানদিকে, কখনো পেটের বাঁদিকে, আর কখনো একবারে সেন্টার অফ মাস।
সকাল থেকেই থেকে থেকে পেটে হাত দিয়ে,"ওরে ওরে ওরে" করে উঠছেন।
গিন্নী স্পাইডারম্যানের মতো হাত বাড়িয়ে এন্টাসিড সাপ্লাই দিচ্ছেন। বিকেলে "ওরে ওরে ওরে" র ভলিউম সঙ্কটজনক লেভেলে যেতেই পাড়ার ডাক্তারঠাকুরপোকে তলব দেওয়া হলো।

ডাক্তারঠাকুরপো - বুঝলে বৌদি, উল্টোপাল্টা খাওয়ার এতো বাজে স্বভাব রসিকদার। এইটে কন্ট্রোলে না আনলে তো সমস্যা হবেই। লোভ সামলানো কঠিন সাধন, সবাই কি পারে? নিশ্চয় গতকাল কিছু উল্টোপাল্টা খেয়েছিলো, ঠিক বলেছি বৌদি?

রসিকগিন্নী - না মানে  .....

ডাক্তারঠাকুরপো - ব্যাস ব্যাস আর বলতে হবে না। আপনার চোখের সামনে কি আর খেয়েছে। নিশ্চয় বাইরেই গপাগপ সাটিয়েছে। উফ বৌদি সিঙ্গারাটা কি ভালো বানিয়েছো গো। আর দুটো হবে?

রসিকগিন্নী - হ্যা নিশ্চয়, এইতো নাও। বলছি যে, সমস্যাটা কি বলতো? এরকমতো আগে কখনো দেখিনি। ইদানিং তো ডায়েট করছেন, স্যুপ আর ভেজিটেবল ব্যাস  .....

ডাক্তারঠাকুরপো - সেকি রসিকদা আর ডায়েট ! ধুস তুমি কি আর খেয়াল রাখছো আপিসে কি করছে? জানো না, মোড়েই বসন্ত কেবিন, এগোলেই পুঁটিরাম তারপর কত কি।

রসিকগিন্নী - এই ওকি, তুমি আঙ্গুল মটকাচ্চো কেন? তোমার আবার গালাগাল করার ইচ্ছে হলো নাকি? এরকম হলেই তো তুমি এরকম আঙ্গুল মটকাও। তোমার কি শরীরে খুব কষ্ট হচ্ছে? মাথা গরম করছো কেন? মানে ঠাকুরপোকে বলো না মাথা ঠান্ডা করে। উঠে বসবে? ও হ্যা বলছে মনে হয়। ও ঠাকুরপো একটু তুলে ধরো তো। কি বলছে বুঝতে পারছি না।

ধরাধরি করে রসিকবাবুকে তুলে ধরতেই রসিকবাবু কেটে কেটে সাড়ে চারটে গালাগাল দিলেন বজ্রনিনাদে। পঞ্চমটার বেলা গলাটা শক্তি হারিয়ে মিনমিন করে ফেলেছে। তাতে আরও রেগে বলতে শুরু করলেন, বেরো বাড়ি থেকে, আমার বাড়িতে এসে সিঙ্গারা গিলছে শুধু না, আমার পেট টিপে টিপে নাড়ি-ভুঁড়ি বের করে দেওয়ার জোগাড় করলো, তার ওপরে আমার নামে আবার উল্টোপাল্টা বকা!! বেরো বাড়ি থেকে এখুনি বেরো বাড়ি থেকে।

ডাক্তারঠাকুরপো - ঠিক আছে ঠিক আছে , ইয়ে এ এ এ এ এই যে রইলো ইয়ে তোমার সিঙ্গারা। খেলাম না পাঁচ নম্বরটা। এভাবে অপমান।

এই বলে পঞ্চম সিঙ্গারাটা ফুল ফোর্সে প্লেটে রাখতে যান ঠাকুরপো। সিঙ্গারাও অমনি ভার্টিকাল এক্সিসে স্পিন করে স্ট্রেইট রসিকবাবুর মুখে।
এহে এহে করে রসিকগিন্নী মুখ থেকে সিঙ্গারা বার করতেই দেখেন রসিকবাবুর মুখে হাসি।

রসিকগিন্নী - এএ ই কি হলো, লাগলো নাকি? হাসছো কেন? পাগল হলে নাকি?

রসিকবাবু- আরে দাঁড়াও দাঁড়াও, সিঙ্গারাটা মুখে ঠেসে ধরতো আবার।

রসিকগিন্নী - এ মানে?

রসিকবাবু- আরে ধরই না। আ আঃ আহা (গপ করে সিঙ্গারা গিলে) কি শান্তি কি শান্তি। আহা আহা কি শান্তি।

রসিকগিন্নী আর ঠাকুরপো চোখ বড়ো করে তাকিয়ে।

রসিকবাবু প্লেটে পরে থাকা ষষ্ঠ সিঙ্গারাটা মুখে তুলে নিয়ে বলতে লাগলেন, অবিচার করেছি এতদিন গিন্নী অবিচার। ডাক্তার আমাকে ক্ষমা করো। তুমি আজ আমাকে মহাপাপ করা থেকে বাঁচালে। সিঙ্গারার ওই টুপটুপে তেল আজ সাতদিন পর জিভে পড়তেই শরীরে কি শান্তি, কি স্বস্তি, কি আরাম। যেন জীবনের আসল মানে খুঁজে পাওয়া। এক বোধোদয়। জানলাম শরীরের প্রতি কি অন্যায় অবিচারটাই না করেছি। জিভ থেকে পেট সবাই অভিমান করছে। বুঝিনি। নেহাতই উপায় ছিল না তাই বিদ্রোহ করেছে। ডায়েট করেছি, স্যুপ খেয়েছি, সিদ্ধ সব্জি চিবিয়েছি। একের পর এক অন্যায়। কি পাপ কি পাপ। নাহ ডাক্তার আর নয়। গিন্নী তুমি অশ্বিনীকুমার হয়ে  ..... ইয়ে আরও কিছু সিঙ্গারা সাপ্লাই দিতে পারো? আভি ইসি ওয়াক্ত ? প্লিস?

Monday, 5 November 2018

রঙ্গমঞ্চ

কালীপুজোর পাড়া-ভোজন।
প্রথমদিন আমিষ। দ্বিতীয়দিন নিরামিষ।
অবাধ খাবার আয়োজন, তার ওপর আমিষ। পাড়ার রিকশারাজু থেকে ডাক্তার হাজরা, মণ্ডপে সবার হাজিরা।
বাঙালি কে কোন শ্লা অসময়নিষ্ঠ বলে?
বেলা বারোটায় রান্না রেডি, খাবার লোক নেই। ঠিক একটা বাজতেই, জনজোয়ার। সব বাঙালির একসাথে খিদে পায়। ফ্রি -এর খাবার পেতে এবার লাগা লাইন। খিদে এবার পেট থেকে মাথাতে। পুজোর দিনে, মণ্ডপে গালাগাল দিলে, দেবীর কোপে পড়ার ভয়। ঢোক গেলা ছাড়া নো উপায়। ইতিমধ্যে পেট ভরপেট করে দাঁত খুঁচতে খুঁচতে বেরিয়ে আসা লোকজন-এর "জিতে গেছি কাকা" টাইপ বাঁকা চাহনি। গোদের ওপর বিষফোঁড়া। এ যেন যুদ্ধ। লাইনে দাঁড়িয়ে মাথার ঘাম পায়ে পড়ে পড়ে মিনি-পুকুর। লাইন এগোয় অনুপমের কাছিমের মতো। "গুটি গুটি পায়ে আর এগোতে পারে না"। শেষে পুকুর উপচে পড়ার আগেই এক ঠেলাতে একেবারে ফ্রাইড রাইস এর কাউন্টারে। তারপরে স্বপ্নের মতো ফিফটিন মিনিটস। ততক্ষনে পেট দয়াভিক্ষা করে ক্লান্ত। তুবড়ির মতো একটা জম্পেশ ঢেঁকুর দিতেই এ হে হে ...... ফিফটি পার্সেন্ট মাল হড়হড়িয়ে বাইরে। আসলে গলার নিচে ডাউনস্ট্রিম ফ্লো করবে, সে সময়টা পায়নি বেচারা। ঢেঁকুরটা চিরকালই অবাধ্য। আইটেমগুলোকে পেটে স্টে ই যদি না করানো গেলো, তাহলে তো যুদ্ধ-এ ফেল। যাক কেউ দেখেনি। মুখ-টুক ধুয়ে বেরিয়ে পড়লেই বাঁচোয়া। আরে ওদিকে কি? ভিড় কেন? পান-সুপারি টা মিস হলো নাকি? আরে এ হে হে, এতো আরেকজন বমি টমি করে ......
তাহলে এখন বাঙালির টাইম টু এক্ট এস এ শুভানুধ্যায়ী
"আরে কেন এতো খাস? ফ্রি এর মাল দেখলেই হামলে পড়বি? একটু বুঝে খাবি তো নাকি ..... মণ্ডপের এখানে এ হে হে কি ময়লা" ....... এবার কব্জি গুটিয়ে বেরিয়ে পড়া যাক মানে মানে। হে হে সবই "এ মায়া প্রপঞ্চময় ভব রঙ্গমঞ্চ মাঝে"।

Wednesday, 31 October 2018

আসলেতে পাখি সে

টেবিল ১:
শোন্ শোন্ কন্সেন্ট্রেট করতে শেখ। সামনের কালীপুজোতে তুবড়ি প্রতিযোগিতা। নোটবুকটা বার কর দেখি। তুবড়ির মশলার মাপটা ঝালিয়ে নেওয়া যাক। চল চম্পাহাটি। চারটে কাটলেট বলে দে।

টেবিল ২:
অনিককে ফোন করে "হ্যাঁ" বলেই দাও রুমাদিদি। কবিরাজি অর্ডার করবে তো আজ। স্পেশাল ডে বলে কথা।

টেবিল ৩:
আর শোনো, কাল কিন্তু ইলেকট্রিসিটি বিলটা জমা করতে হবে। শুনছো তুমি? আরে আবার কফি অর্ডার করলে যে। উঠবে কখন?

টেবিল ৪:
একটা ব্রীজ রিপেয়ার করতে কতদিন লাগে বলুনতো বরুণবাবু? আমরা নাকি এখন দ্রুতগতির যুগে? ধুর ধুর, এখন কফিটা পেলে হয় সময়মতো।

টেবিল ৫:
পাগলা দাশু জানিস না? পড়িস নি? আচ্ছা মটন মামলেট ..... মানে ওই ওমলেট, খা। খেতে খেতে বলছি।

টেবিল ৬:
বাবার শরীরটা বিগড়েছে। এখানে এসেছি শুনেছে যখন, কাটলেট প্যাক করিয়ে নিয়ে যেতে হবেই গো।

টেবিল ৭:
শোনো তোমার এই রোজকার অভিযোগ শুনে আমি এবার ফেডাপ। আমি কি এতোই খারাপ? এবার দেখবে একদিন সম্পর্কটা এতোই তেতো হবে যে দুজনেই ভ্যানিশ হয়ে যাবো। কোল্ড কফি বলবো?

টেবিল ৮:
পলাশপ্রিয়াকে ভুলতে পারছিস না? একেবারেই না? আজকাল কোয়ালিটিতে বেড়ে গোলমাল দেখছি। নাহলে ০৪ মাসের প্রেম ভুলতে চার কাপই তো যথেষ্ট। যাক তুই দশম কাপটা ট্রাই করেই দেখ তো। কাজ হবেই। হতেই হবে। এই বাড়ির কফির ওপর ভরসাটা এতো সহজে ডাইলিউট হতে দেওয়া যায় না।

টেবিল ৯:
আজ পুরো আঠারো বছর পর তোমার সঙ্গে দেখা। কেমন আছো তুমি? ফিশ ফ্রাই এখনো তেমনি ভালোবাসো? নাকি চেহারার সাথে সাথে স্বাদও বদলেছে?

======

ধুস আড্ডা নয়, কোনো এক অদৃশ্য লেখকের ইচ্ছে হচ্ছে আর টেবিলে টেবিলে তৈরী হচ্ছে ইমোশন, কফি হাউসের স্টিমুলেশনে তাতে টপাস টপাস ফোঁটা ফোঁটা টুইস্ট।

ট্যাঁশ গরু গরু নয়, আসলেতে পাখি সে; যার খুশি দেখে এস "কফি হাউসে"।



Saturday, 27 October 2018

নাড়ু

লক্ষ্মীপুজো এলেই আবীর কোমরবেঁধে পুজোর জোগাড়ে লেগে যায়। মা-বাবা-বৌ খুশিই হয়। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের মধ্যে হালকা আধ্যাত্মিক পাঞ্চ থাকলে বাড়ির লোকজন ভরসা পায়। আবীর পুজোর বাজার করে, ঘরের ঝুল ঝাড়ে, লক্ষ্মীঠাকুর ফুল দিয়ে সাজায়, ঘরের ডেকোরেশন করে, মা-বৌ লক্ষ্মীর পা আঁকলে কোমরে হাত দিয়ে রিভিউ করে, আল্পনার ডিসাইন গুগল খুঁজে জোগাড় করে। দেখেশুনে আত্মীয়স্বজন "কি ভালো কি ভালো" বলে। বন্ধুরা হাসে, বলে, কি মেয়েদের মতো  ....... । মা গর্বভরে ছেলের মাথায় হাত বোলান। বাবা কিন্তু প্রত্যেকবারের মতোই বিরক্ত।
- আবু, তুই এবার নাড়ু এনেছিস না আবার ভুলেছিস? আবু? আবীর? শুনতে পেলি?
- বাবা, পরের বছর পাক্কা।
- আবু, প্রত্যেকবার তোর এই এক কথা  ......

মা ছেলের মাথায় হাত বোলান। ছেলের সাথে নাড়ুর কি যে এতো রাগ! ভুলে যাওয়ার ছেলে যে আবু নয়, তা মা জানেন। বৌ রিয়া জানে আজ আবীর ছাতে কাটাবে অনেকরাত অবধি। কারণ জিজ্ঞেস করলে এড়িয়ে যায়। জোর করবে এ স্বভাব রিয়ার নেই।

- তুই আবার কাঁদছিস
- কোথায় কাঁদছি?
- আমার সাথে নাটক করিস না। তোর মা-বাবা যে কি, এতোবছরেও তোকে সামলাতে পারলো না।
- সামলানোর কি আছে ? আমি কি বাচ্চা নাকি?
- আচ্ছা, তাহলে এবারেও দোকানে নাড়ু এদিক-ওদিক নাড়িয়ে কিনলি না কেন?
- উফফ, তুমি আবার  ......
- কি আবার? বল বল। চুপ করলি কেন বল।
- ও দোকানদার বাজে কোয়ালিটির নাড়ু গছাচ্ছিল, তাই  ......
- আচ্ছা, অন্য সব দোকানেই বাজে নাড়ু? আবুদাদুভাই, নাড়ুর গন্ধে তুমি আমাকে খোঁজো, তা কি আমার বুঝতে বাকি আছে। তাই না? দাদুভাই? আরে আরে ওই দেখো ছেলের চোখ অমনি ছল্ছলিয়ে  ..... কি মুশকিল .......
- ঠাম্মা, প্যাকেটের নাড়ুতে তোমার শাড়ির গন্ধ খুঁজি, নেই যে ......  এই ছায়াতে বসে তোমার ঘিয়ে মাখা তেলতেলে হাত আমার কপালে চাই সেই আগের মতো, আর পাই না ..... তোমার নরম কোলে মাথা রেখে লালকমলের গল্প শুনতে চাই, শুনি না তো আজকাল   ......  ব্যাঙ্গমাদের কথা শুনে আমার হাসি পেলে, চোখ বড়ো করে বিশ্বাস করাও না তো আজকাল  ...... পাঁচালি পড়ার সুরটা তোমার মতো কারোর নয়, কেনো বলো?   ......  ঠাম্মা, কেন ছায়া হয়ে আছো ঠাম্মা? ঠাম্মা  তুমি ফিরে এসো .......

Wednesday, 12 September 2018

একটি অদ-ভূত

গল্পের প্লট:
একটি গ্রাম, গ্রামে অন্ধকার, গ্রামে বন-জঙ্গল, গ্রামের ভীতু গ্রামবাসী, গ্রামের ভীতু গ্রামবাসীর কুসংস্কার। অর্থাৎ যুগ যুগ ধরে হেজিয়ে দেওয়া অতি পরিচিত ভূত-ভূত প্লট।

গল্পের অদ-ভূত:
একটি মহিলা।

ওনার বৈশিষ্ট্য:
লাজুক মহিলা যার মুখের অর্ধাংশই ঘোমটা ঢাকা। ইনি ওড়েন। হাত-পা না নাড়িয়েই, জাস্ট উড়তে পারেন। ওনার টার্গেট মূলতঃ পুরুষ। তবে আচমকা নিরীহ পুরুষদের ওপর চড়ে বসেন না। যথেষ্ট সতর্কীকরণ বার্তা জানিয়ে তারপরই হামলা করেন। প্রথমে ফিসফিসিয়ে তার নাম ধরে ডাকেন। তারা সাড়া দিলে ধাঁ করে কাঁধের কাছে পৌঁছে যান। এবং তখন সময় দেন। পুরুষটি যদি মুখ ঘোরায়, তবেই তাকে উনি সম্মতি বলে ধরেন। নচেৎ কি করেন, তা জানা নেই। কারণ এযাবৎ ওনার ডাকে সাড়া না দিয়ে কেউ থাকেনি। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিধারণকারিনী এই মহিলা ভূত এরপর লেসার পয়েন্টার লাইট ফেলেন ছেলেটির চোখে। ব্যাস। কোথায় যাবে। পুরুষটি আন্ডার হার কন্ট্রোল এন্ড টেকেন ইনটু হার ডেরা। এই ভূতের বিশেষত্ব হলো, ইনি নিজে চব্বিশ হাত কাপড়ে ঢাকা থাকলেও শিকার নেওয়ার সময় পরিবেশের প্রতি যথেষ্ট সচেতনতা দেখান। তাই পুরুষটির জামাকাপড় রিসাইক্লিং -এর জন্য ওখানেই ফেলে শুধু শিকারটিকেই বগলদাবা করে কেটে পড়েন।

ভূত তাড়ানোর উপায়:
গ্রামের সবাই এই মহিলা ভূত এবং তার পদ্ধতি-প্রণালী সম্পর্কে অবগত। তাই তারা প্রত্যেকে বাড়ির দেওয়ালে দেওয়ালে, ওই মহিলাকে না আসার অনুরোধ জানিয়ে দেওয়াললিখন করে রাখে। লক্ষণরেখা কনসেপ্ট। মহিলা ভূতটি শিক্ষিত, শিষ্টাচার-সমৃদ্ধ এবং ভদ্র বাধ্য। দেওয়াললিখন থাকলে উনি সে বাড়ির পুরুষদের বাড়িতে থাকা অবস্থাতে শিকার কনসিডার করেন না। কিন্তু রাস্তাতে হাতে নাতে ধরেন।

কেসটা কি:
"স্ত্রী"।
বাড়ির পুরুষদের বিনা কাপড়ে গায়েব করা ভূত তাড়াতেই হবে। এই বেমক্কা রাস্তা-আক্রমণ রুখতে এবং এই অদ-ভূত চিরতরে তাড়াতে যে পরিস্থিতি পরিবেশ তৈরী হয়, তাই নিয়েই সিনেমা "স্ত্রী"। এক বালতি পপকর্ন শেষ করেও গল্পের শেষে মাথা চুলকোতে চুলকোতে হল থেকে বেরোলেন। গল্পের “হরর” হড়হড় করে মাঝপথেই মুখ থুবড়ে পড়ল। "কেসটা কি হলো" এই নিয়েই কো-অডিয়েন্সের সাথে আলোচনা করতে করতে ওলা ধরে বেহালা পর্যন্ত পৌঁছে গেলেন। কিন্তু কিছুতেই শেষে কি হলো, কেন হলো, গভীরে গেলেন, আরো গভীরে গেলেন, কিন্তু কেসের তল খুঁজে পেলেন না।
এই হলো "স্ত্রী"।



পুনশ্চ: রাজকুমার রাও, অপারশক্তি খুরানা, অভিষেক ব্যানার্জী এবং পঙ্কজ ত্রিপাঠি একসাথে এই অদ-ভূতকে আউট এন্ড আউট কমেডি করে তুলতে পেরেছে। ওদের অভিনয় দুর্দান্ত। ডায়ালগ রাইটারকে স্যালুট।

Sunday, 9 September 2018

গুগলের থেকেও হাই স্পিড

- হ্যাল্লো
- কোথায়?
- এই তো, অটোতে। প্রচুর জ্যাম। বদ্দিপাড়াতে আটকে। বড়ো বড়ো বাস গুলো এপাশে, ওপাশে আটকে দিয়ে একেবারে স্যান্ডউইচ   .....
- বলছি যে খবর শুনেছ?
- ওহ তুমিও পেলে?
- ওহ তোমাকে কে বললো?
- আমাকে রমাদি। তোমাকে?
- গুগল।
- এহ? মানে? ওহ রামকাকার ছেলে গোগোল?
- ওহ না রে বাবা। গুগল গুগল।
- গু?
- বাদ দাও। যাই হোক, খবরটা তো দুঃখজনক। আবার শিলিগুড়িতে?
- তাই নাকি? আমি ভাবলাম দিঘা?
- সেকি! দিঘাতেও? কি বলছো? কি সব হচ্ছে গো। আমি তো পড়লাম শিলিগুড়িতে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার।
- আমি তো শুনলাম দিঘা। ওখানেই এখন তোলপাড়। রুমকির বাবা-মা সব তো ছুটেছে ওদিকেই। মেয়েটা  .....
- দীঘাতে কোন ব্রিজ বলতো? (পাশের কে-প্যাসেঞ্জের দের দিকে মুখ করে) বলছি দাদা আবার আরেকটা ভেঙেছে, এটা আবার দিঘাতে। গিন্নী জানালো। গিন্নি আমার গুগলের থেকেও হাই স্পিড। আমাদের আসলে প্রচুর রিলেটিভ আসে পাশে। খবর একেবারে সাংহাই ম্যাগলেভ এর স্পীডে একেবারে আমাদের মোবাইলের স্পিকারএ। এ হ্যালো হ্যালো তোমার কথাই বলছিলাম এই অটো-দাদাদের  ..... স্পিকারে দিচ্ছি বুঝলে? একটু বলো তো কি শুনেছ।
-  ওই, রুমকি আবার পালিয়েছে। প্রথমবার তো তবু ডায়মন্ড হারবার। হোটেলে পৌঁছনোর আগেই খপ। এবার দীঘা। তাও কোন হোটেল জানা যায়নি। বলছে দক্ষিনেশ্বরে নাকি বিয়েও সেরে ফেলেছে। তা তুমি কি সব ব্রিজ ব্রিজ করছো গো? এএএই, আমার চা টা ঠান্ডা হয়ে গেলো গো। আমি যাই, বাবা লোকনাথ শুরু হয়ে গেছে। আর আটা নিয়ে এসো মনে করে। রাখলাম।
- (ফোন কাটতে কাটতে, পাশের কে-প্যাসেঞ্জের দের দিকে মুখ করে) ওই ইয়ে মানে, আমি ভাবলাম ব্রিজ আবার  ..... ইয়ে, বলছি এখানেই নামিয়ে দিন তো দাদা। কাজ আছে। এখানেই এখানেই হ্যা। দূর মশাই, জল-কাদা যা থাকুক, থামান এখানে। নামি।  

Tuesday, 10 July 2018

মটন কষা

- আমার জিনিসগুলো কে উল্টোপাল্টা করলো মা?  ..... মা? ওমা উফফফ তুমি সারাদিন টিভিতে ওই দিদি নম্বর ওয়া   .....
- ক্কি ক্কি কি কিই বলছিস? চেঁচাচ্ছিস কেন? বাড়ি এসেই তোদের হম্বিতম্বি শুরু হয়ে যায়। তোর বাবা আসবে সেও  .....
- মা প্লিস আমার প্রশ্ন হলো, আমার ঘর এলোমেলো কেন করেছো? বইগুলো খাটের ওপর থেকে হাওয়া, জামাকাপড় গুলোও চেয়ার-এ নেই, জুতোগুলো তো দেখতেই পাচ্ছিনা। মা   ......
- খোকা  ......
- তুমি আমার কম্পিউটারও সুইচ অফ করে দিয়েছো!! আমার একটা মুভি ডাউনলোড হচ্ছিলো। একি আমার ব্যাটম্যান, ক্যাটওমেন কোথায় গেলো? মা তুমি সব ওলোটপালট করে দিয়েছো। মা  .....
- খোকা  ......
- মা তুমি শুনছো, আমি কি বলছি? আমার খিদে পেয়েছে। প্রচন্ড মাথা গরম হয়ে গেছে। তুমি আগে খেতে দাও। তারপর একটু এনার্জি গেইন করে আমি বলতে চাই যে চাইল্ড-রাইটস বলেও একটা ব্যাপার আছে। ষোলো বছর বয়সের বাচ্চারা অন্য দেশে কত কিছু করতে পারে। আমি কি আমার ঘরটুকুকে নিজের মতো করে গোছাতে পারবো না। এইটুকু  ..... যাইহোক মা, আমার যুক্তি গুলো শান দিতে খাবার প্রয়োজন। আমি কি খাবো? মা, তুমি কি শুনতে পাচ্ছো? কি খাবো? ওই ডাল আর আলু-কুমড়োর তরকারি?
- মটন কষা।
- ইয়াহু। কি বলছো মা? সিরিয়াসলি? যাক রাইটস নিয়ে কাল ফাইটস করবো। আপাতত পেট টাইটস করি। মা তাড়াতাড়ি দাও তো, একটু বাইটস নিয়ে পেটের ভিসুভিয়াসকে শান্ত করি। মা, ওমা   .....
- ক্কি ক্কি কি কিই বলছিস? চেঁচাচ্ছিস কেন? বাড়ি এসেই তোদের হম্বিতম্বি শুরু হয়ে যায়। তোর বাবা আসবে সেও  ..... দ্যাখ আনসারটা ঠিক দিলাম। এই রাউন্ডে আমি গেলে দিদি নম্বর এক আমিই  ..... যাক নিজের মতো চেঁচামেচি  না করে খেতে আয়। ডাল আর আলু-কুমড়োর তরকারি  .....

Friday, 6 July 2018

ব্ল্যাক ফরেস্ট

- ছোটোমামা, জঙ্গল জঙ্গলই তো লাগছে তাই না?
- যাক, তোরও যে তাই মনে হলো, দেখে বেশ গর্ব হচ্ছে। অবশ্য মুখেভাতে তোকে ভাতের পিস্ খাওয়াতে খাওয়াতেই বুঝেছিলাম যে এনার্জি রেডিয়েট করছে।
- তা মামা জঙ্গলে কিরকম যেন সবুজের অভাব। কচি গাছ কিছু পুঁতি?
- আলবাত, লে কে আও। হাম ইধার খেয়াল রাখতা।
- ও মামা, দ্যাখোতো ঠিক হয়েছে?
- তোফা হয়েছে। ব্ল্যাক ফরেস্ট থেকে কি সুন্দর আমাজন হয়েছে। বাহ্ তোমার হবে খোকা। শুধু একটা জিনিস  .....
- জঙ্গলে জন্তু-জানো  ......
- ইয়েসসসস। জানোয়ার। অনিমেলস মাস্ট ভায়া। এহ, কোথায় গেলি?
- এএ এই যে মামা   ......
- ব্রিলিয়ান্ট, ছেড়ে দে ছেড়ে দে  ...... এ এ এ এ এই রে। দিদি আসছে, পালা পালা।

এসব কি ঘরের মধ্যে? এহ। একি। ছোট, জামাইবাবুর গায়ে ওসব কি? ঘাস-পাতা। ওমা পিঁপড়েও নাকি ! এহ। কি রে। ওকিরে। পালাচ্ছিস কোথায়। এ কি করেছিস তোরা মামা-ভাগ্নে মিলে!  দাঁড়া দাঁড়া।
- ভাগ্নে জাস্ট পালা। টেম্পোরারি কালা মিলখা সিং হয়ে যা।
- মামা, রোববার আরসালানটা মনে থাকে যেন।
- থাকবেএএএ ......

Monday, 4 June 2018

সব একরকম ব্যালান্সড

বেলা বৌদি শুধু বলে যায়,"ওরা ভালো নেই, ওরা ভালো নেই"

অথচ,
প্রিটি জিন্টা ছবি দিচ্ছে লাঞ্চের,
মেসি বল পায়ে সেলফি তুলছে,
রশিদ খান ফাটাচ্ছে,
অর্ণব গোস্বামী চেঁচাচেছ,
নতুন মোবাইল মার্কেটে,
কমল হাসান টুইটে,
পেট্রোল পনেরো আনা ডাউন,
ফেরারিও ফেরারি মন,
রাশিয়া গ্যাস দিলো, ভারত খেলো,
ঝড় এলো (বলে)

সব তো দিব্বি। তেলে ঝালে নুনে মিষ্টিতে সব জমেছে ভালোই। সব একরকম ব্যালান্সড।
তবু বিকেলবেলা ছাতে দাঁড়িয়ে একদৃষ্টিতে জামগাছটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে বেলা বৌদির নাভিশ্বাস ওঠে। বৌদি শুধু বলে যায়,"ওরা ভালো নেই, ওরা ভালো নেই"। নাভিশ্বাস সামলাতে রোজ সন্ধ্যে হালদার ডাক্তারকে হাল ধরতে হয়। ওষুধে কাজ হয়না।
কাল অব্দি একশো পাঁচটা জাম ছিল। আজ আটটা কম। বাঁদর নেই। পাখি ঠোকরায় না। হাওয়ার দমক তো ছিলোই না। তবু জাম নেই!

জাম যায় কোথায়!
জাম যায় কোথায়!
জাম যায় কোথায়!

পাড়ার লোকজন বলে, কালের দোষ। গরমকালের। সুস্থ মানুষ পাগল হয়ে যাচ্ছে। নাহলে ওই জাম নিয়ে কেউ ভাবে .......
বেলা বৌদির ছেলে আমেরিকা থেকে চেঁচায়, জামগুলো পেড়ে খেয়ে নিলেই তো হলো। তাও দেবে না। বাড়িতে একা বসে বসে এই অবস্থা। লোকজনের সাথে কথা বললে, এদিক ওদিক ঘুরতে বেরোলে তবু যদি .......
ডাক্তার বলে,মানসিক সমস্যা বলে তো মনে হয়না। সবই তো ঠিকঠাক বলছেন, করছেন। শুধু জাম নিয়ে ......

বৌদি শুধু বলে যায়,"ওরা ভালো নেই, ওরা ভালো নেই। ওরা চুপচাপ চলে যাচ্ছে। কেউ ভালো নেই। ওরা ভালো নেই।"

Wednesday, 16 May 2018

গড়িয়াহাট এর মোড়ে

গড়িয়াহাট এর মোড়ে রক্তারক্তি কাণ্ড। 
রসিকবাবুর হাঁটুতে চোট, দোকানদারের থুতনিতে।
ভিজিটর দের কেউ কেউ হালকা আহত, কারও পা, কারও হাত, কারও নাক, কারও পেট। বাকিরা তীব্র মানসিক চাপে। 
চারিদিক থেকে চাপা উত্তেজনা। গজগজ। খসখস। ফিসফাস। ফোঁস ফোঁস।
ট্র্যাফিক পুলিশ চলে এসেছেন। 
বুঝলেন যে, গরমই ছিল। ফুলকোও বটে। আলুও চন্দ্রমুখী। নুন - চিনি যথাযথ।
তবু .......
কিছুক্ষন ভেবে হঠাৎ মুচকি হাসি দিয়ে বললেন,
"আরে সমস্যা টা আগে বলবেন তো। আরে আমার বউ ভারী করিৎকর্মা। বাড়িতে লঙ্কা গাছ লাগিয়েছে। সারা বাড়িতে শুধু লঙ্কা আর লঙ্কা। দেখুন দেখি, ব্যাগে ও রয়ে আছে বেশ কয়েক টা। এতদিন বিরক্ত হতাম। এই আজ দেখি কাজেই লাগলো। সকাল ৬ টাতে কি আর এ জিনিস এখানে চাইলেই পাবেন? যা ডিমান্ড। এই যে নিন। (বলেই, পিঠের ব্যাগ থেকে বার করলেন একটি কচি সবুজ টসটসে কাঁচা লঙ্কা।) আরে নিন মশাই নিন, লজ্জা পাবেন ন ন না ..... এই একি এই কাড়াকাড়ি করবেন না .... এই একি.... কি হচ্ছেটা কি, একি লঙ্কা কান্ড!!"



Tuesday, 20 March 2018

ভিক্টিম শেষে চড়াই

কিউট অথচ শো-অফ হীন।
পুচকে, নাদুসনুদুস, কঠিন-দৃঢ়-অভিমানী ঠোঁট। অথচ নো শো-অফ। দিব্বি আশেপাশে ঘুরে বেরায়। বদ্রি-লাভবার্ড -এর মতো দুর্লভ নয়। তা বলে কি এলেবেলে নাকি? আত্মসম্মানে বিদ্যাসাগর। কখনো খাঁচার মধ্যে দেখেছেন ওকে? হু হু বাবা।
কিন্তু এই কলকাতায় বেচারাদের মোটে কদর নেই। দাঁত থাকতে দাঁতের আর চড়াই থাকতে চড়াইয়ের মর্যাদা নেই।
ভাবুন যার চিকচিক আওয়াজে বিরক্ত হয়ে জানলা বন্ধ করছেন, একদিন তাকে আর দেখতেই পেলেন না।
এর প্রসেস অলরেডি শুরু হয়ে গেছে। আমার মুম্বাইবাসী বন্ধু জানলায় একটা চড়াই দেখবে বলে আজ হাপিত্যেশ করে। মুম্বাইতে গাছ-টাছ কেটে মানুষ নিজেদের জায়গা করে নিতে ব্যস্ত। চড়াই কি আর পুলিশ কমপ্লেইন করতে পারে? মোবাইল টাওয়ার বসানো অনেক বেশি জরুরি। চড়াইকে তো আর ফোন করতে হয়না বর-বৌ-বাচ্চাকে। ওদের উড়ে যাওয়ার পাখা আছে। চুপিচুপি শুনে রাখুন, মুখ ভেংচে চোখ উল্টে পড়ে যাবেন না যেন। আমাদের দেশে বেশ কিছু লোক চড়াই-কারি বানিয়ে খান নিয়মিত। ওই আর কি, কামোত্তেজনা- ফামোত্তেজনা বাড়াতে। আমাদের দেশের একম-অদ্বিতীয়ম-লক্ষ্যম কামোত্তেজনা। ফ্রি ফান্ডে, "তোমাকে দেখাবো নায়াগ্রা তোমাকে শেখাবো ভায়াগ্রা" এর ভিক্টিম শেষে চড়াই।
এই চড়াই-উতরাই আর সহ্য করতে না পেরে কিছু বুদ্ধিমান চড়াই বিদেশে পালিয়েছে বা পাতি মরেছে, বেঁচে গেছে। যেকটা কিউট ভারতবর্ষে পরে আছে, তাদের পোড়া কপাল।
গ্রীকদেবী আফ্রোডিট-এর ভালোবাসার প্রতীক স্বয়ং তুই।
এ যে পোড়া ভারত, চড়াই, ভালোবাসার দাম এখানে নেই।
তবু যদি অধমের দু-চার কথা শোনেন, বলি যে,
১. একটু জানলার ধারে জল রাখুন, একটু পান করে বাঁচুক বেচারা
২. পারলে একটু দানাও দিন
৩. গাছ লাগাবেন এ আর নতুন কথা কি
একটু হোক না। ক্ষতি কি।

Thursday, 15 March 2018

স্কেলটা

"টিক টিক টিক টিক"
ব্যাস ওই আবার। এখন আবার কি? এই এখুনি তো লাঞ্চ খাইয়ে এলাম। ওহো এবার বোধহয় ওনার পটি টাইম। উফফ এটা একটা লাইফ? সারাদিন শুধু  "টিক টিক টিক টিক"। এই চা দাও, এই ব্রেকফাস্ট দাও, এই শাড়ি চেঞ্জ করাও। আর পটি করানো তো যুদ্ধ। সারাদিন খেয়ে খেয়ে আর বিছানায় শুয়ে শুয়ে মোটা হচ্ছে আর শুধু "টিক টিক টিক টিক"। রোমা বলে, শাশুড়ীরা নাকি খুব ভয়ঙ্কর হয়। তারা নাকি ঝগড়া করে, তারা নাকি বৌয়ের নিন্দে করে প্রতিবেশীর কাছে! আমার প্যারালাইস্ড শাশুড়ী, তাই আমি নাকি ভালোই আছি। প্রতিবেশীর কাছে আমার নাম নিন্দে করতে পারেনা। কথা বলতে পারেনা তাই ঝগড়াও নেই। তা আমি বলি, ওসব হলেই বরং বেঁচে যেতাম। কানের কাছে সারাদিন প্রতি ঘন্টাতে "টিক টিক টিক টিক" তো আর শুনতে হতো না। কোনো শখ-আহ্লাদ-ঘুরতে যাওয়া-সিনেমা যাওয়া তো নেই জীবনে। রোমার সাথেও যে দশমিনিট কথা বলবো তার জো নেই। শুরু হবে "টিক টিক টিক টিক"। সেদিন তো "জননীর কোলে" সিরিয়ালের ঠিক ক্লাইমেক্সের টাইমেই "টিক টিক টিক টিক"। ও বলে, পঁচাশি বছরের ওর মা, তাকে নাকি আর আয়ার ভরসাতে রাখা যায় না, বয়স্কদের ওপর নাকি খালি হামলার খবর পেপারে। তাও তো খুব জোড় করে একজন আয়া রাখা হলো। ওই পনেরদিন মতো টিকেছিল। সারাদিন "টিক টিক টিক টিক" এর জ্বালায় আর রোজ মাঝরাতে আঠারোবার উঠতে গিয়ে সে আয়ার নিজেরই নাকি এখন বাড়িতে আয়ার সেবার দরকার হয়ে পড়েছে।
সারাদিন সমস্ত বাড়ির খেয়াল রেখে তারপর রাতে ওই "টিক টিক টিক টিক" আমাকে তাড়া করে বেড়ায়। এখন আর কিছু না শুধু একটু ভালো করে ঘুমোতে চাই। কতদিন যে ভালো করে ঘুম টুকু হয়নি!

ওই আবার। "টিক টিক টিক টিক"।
"দাঁড়াও দাঁড়াও, আমাকে বাথরুম থেকে তো বেরুতে দাও উফফফফ"
মাঝে মাঝে মনে হয় ওই যে স্কেলটা দিয়ে খাটের ধারে "টিক টিক টিক টিক" করে, সেটা দিয়েই মাথাতে ..... 

============================================================================

- কি হলো, উঠে পড়লে কেন?
- না ওই যে মা বোধহয়  ....
- মা? পর্ণা তুমি আমার মা কে এতো ভালোবাসতে? উনি চলে যাওয়ার পরেও  .....
- ও হ্যা। রোজ রাতে কি যে হয়। কিন্তু আজ যেন  ..... যাক ঘুমিয়ে পড়ো। আমিও  ..... এই ওটা কিসের আওয়াজ। শোনো, শুনতে পাচ্ছো। শোনো
- কোথায় পর্ণা কিচ্ছু তো নয়। তোমার মনের ভুল। শুয়ে পড়ো।
- উফফফফ ভালো করে শোনো। শোনো না। আরে এইটা স্কেলের তোবড়ানো দিকটার আওয়াজ। আমি জানবো না? এই ছ'বছর ধরে শুনছি  .....
- পর্ণা  .....

Wednesday, 21 February 2018

ককটেল

আমিষ-নিরামিষ একই ফ্রিজের একই ফ্লোরে থাকলে একটু ছোঁয়া তো লাগবেই। তাই না?
আকাশের মা- তাতে প্রবল সমস্যা। উপায় হিসেবে ভাবা হলো, আলাদা একটি পুঁচকে ফ্রিজ হবে, যাতে থাকবে নিরামিষ। এবং দুটি ফ্রিজ যেন একে ওপরের থেকে অন্ততপক্ষে এক কিলোমিটার দূরত্বে থাকে।
কিন্তু যদি নিরামিষ ফ্রিজের পাশে বসে আমিষ হাঁচি আসে?
যদি নিরামিষের ফ্রিজের ভিতরকার বাটির ওপর লাগিয়ে রাখা ভেজ-আইডেন্টিফিকেশন-নেইলপলিশ- মার্ক আচমকা উঠে যায়?
যদি নিরামিষের ফ্রিজের ওপর কোনো গেস্ট এসে মটন-বিরিয়ানি খাওয়া কব্জিটা রেখে ফেলে?

গত কয়েকমাস ধরে এই সব সম্ভাবনার কথা আকাশের মা কে বোঝাতে, উনি অবশেষে ঠিক করেছেন, একটি ফ্রিজই থাক। ওই নিরামিষের আগের দিন একটু মুছে নিলেই হবে। যতই হোক, আমিষ-নিরামিষ, খাদ্য বই আর কিছু তো নয়।

ঠিক যেমন, যে দেশে কোনো একটি সরকারী ভাষা নেই (“একটি” শব্দটির ওপর জোর দেবেন), তখন একগাদা আশেপাশের ভাষার সাথে একটু ছোঁয়াছুঁয়ি তো হবেই। তাই না?
উত্তরে-দক্ষিণে-পশ্চিমে গিয়ে কি আর বাংলা বলা যাবে? ওখানে "জল খাতা হুঁ" -এর পাঞ্চ মারতেই হবে। অর্থাৎ আমাদের দেশের লোকজনকে একটু ককটেল হতেই হয়। তাছাড়া আন্তর্জাতিক আকর্ষণ মাধ্যাকর্ষণ -এর কারণেও পাঞ্চ আজকাল একেবারে প্রায়-আবশ্যিক হয়ে উঠেছে। অমনি বলবেন, "বাজে কেন বকছেন? দক্ষিণে তো ওরা দিব্বি নিজের ভাষাতেই কথা বলে।" তা বলে। আমেরিকার রাস্তাতেও তাদের একমাথা তেল চুপচুপে চুলে ফুলের মালা লাগিয়ে ঘুরতে দেখা যায়। আপনি কি ধুতি-শাড়ি পড়েন? প্যারিসে গিয়ে পড়বেন?

ব্যাপার হলো, আপনার মন কি চায়? অন্য ভাষাকে করায়ত্ত করাতে দোষ কি? অবশ্যই নিজের ভাষাকে অপমান না করে। যারা অপমান করে, তাদের ওপর আমারও হেভি ইয়ে হয়। খুব লিখেছি, খিল্লি করেছি তাদের নিয়ে একসময়। কিন্তু এখন মনে হয় তাদের বলি,"ভালো হয়ে উঠুন তাড়াতাড়ি" কারণ "শো অফ" একটা রোগ। ভাষা আরো অনেককিছুর মতোই সেটার শিকার।
তা বাদ দিয়ে অন্য ভাষাতে অনুরাগ দোষের কি। এই দেখুন না আজকাল বাংলা লেখাতে আধুনিক লেখকরা মাঝে মাঝেই ইংরিজি ব্যবহার করেন, তাদের লেখা পড়তে ভালো লাগলেও পড়া বর্জন করবেন? (ডিসক্লেইমার: এই লেখা যা আপনি এখন পড়ছেন, তার সব কিছুই কাল্পনিক আর কেউ কোন মিল পেলে তা নিতান্তই কাকতালীয়) সাধু থেকে চলিত হয়েছিল একসময়, তা নিয়েও মহাভারত কম হয়নি। চলিত থেকে এখন ককটেলিত হয়ে গেলেও বিচলিত হবেননা। এটাই নিয়ম। Heraclitus বলেছেন change is the only constant যদি ইংরিজি না পড়তেন, সন্মান না করতেন, এই কোট টাও  জানা হতো না।

আজ সারাদিন শুদ্ধ বাংলা বলে যেতে হবে নাকি! সে তো আবার ওই "শো অফ" বা ওই সিনেমা হলে " বাবা আবার উঠে দাঁড়াতে হবে" টাইপ জাস্ট একটা দায়।
মাতৃ ভাষাটাকে দায় করে তুলবেন না।
আমি বলি কি, অন্য ভাষা কথাতে-লেখাতে পাঞ্চ হচ্ছে হোক। আপনি যেটা চান, সেটাই করুন। চয়েস আপনার। তবে মানুষকে-কুকুরকে-ভিখিরিকে-অন্ধকে যেমন অপমান করা ঠিক না, তেমনি ভাষাকেও না। নিজের ভাষাকে তো একেবারেই না।

মন দিয়ে বাংলাকে ভালোবাসছে দেখুন ওই লোকটা। রাশিয়ার পাতাল রেলে বসে অফিস ফেরত লোকটা জয় গোস্বামী পড়ছেন। 
জয় বাংলা।

জয় বাঙালি।

Friday, 16 February 2018

ট্যাটু

- দ্যাখা দ্যাখা ওটা কি ..... ওটা কি দ্যাখা
- উফফ মা ছাড়ো তো , আমি জাস্ট বাড়ি ঢুকলাম আর তুমি শুরু হয়ে গেলে।
- ঋক, দ্যাখ আমার দিকে। কেন হাত লুকোচ্ছিস! দ্যাখা হাতটা দ্যাখা।
- উফফ মা 
- একি এটা কি? এটা কি করেছিস?
- ও কিছু না। ট্যাটু। বাবাকে বলবে না কিন্তু। বলো বলবে না। প্রমিস করো।
- ট্যা?
- টু।
- মানে? ওই যেগুলো একদম সুঁচ বিঁধিয়ে  .....
- উফফ আরে এ সব কুল মা  ..... তুমি বুঝবে না  ..... আরে কি হলো? মারছো কেন? থামো থামো বলছি। উফফ মা কাম অন  ..... আরে আবার কাঁদছো কেন? আরে তুমি যে কি করো না।

********
- কে কে ওখানে? মা তুমি? কি হলো?
- লেগেছে বাবা তোর?
- আরে না না। তোমার ওই নরম হাতে লাগে নাকি। তোমারই হাতে লেগেছে দ্যাখো। আমার বাইসেপ্সে কি স্ট্রেন্থ জানো? হে হে।
- ধুস। আমি বলছি ওই যে হাতে সুঁচ ফোটালো  .... তাতে লাগেনি?
- ওহ একটু। মাইনর। তুমি আবার কাঁদছো নাকি! উফফ মা  .....
********
- এই যে এদিকে আসুন আসুন এদিকে।
- এই এরা আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে গো? ঋক কোথায়? বলো না আমরা এখানে এসেছি কেন? ইসস কি গন্ধ।
- দেখুন। বডির অবস্থা খুব খারাপ। মুখ দেখে ভয় পাবেন না। বাসটা মুখের ওপরেই  ..... মানে যাই হোক দেখুন যদি শার্ট-প্যান্ট বা বডির অন্য কোনো আইডেন্টিফিকেশন দেখে বলতে পারেন, ঋক বসু ইনি কিনা  ..... ওকি ওকি হাতটা ধরে এরকম  ..... ট্যাটুটা কি আইডেন্টিফাই করতে পারছেন? ওকি এই ওনাকে ধরুন ধরুন  ..... উনি বোধহয় ফেইন্ট হয়ে যাচ্ছেন   ..... বলছি মিস্টার বসু, সরি মানে আমাদের ডিউটি, প্লিস বলুন আপনার ওয়াইফ কি কিছু আইডেন্টিফাই করতে পারলেন? ইনি কি ঋক বসু?


Thursday, 8 February 2018

পদ্মাবত এবং টিয়া

পদ্মাবত নিয়ে এ যাবত অনেক ঘোল-শরবত হলো। ওসব নিয়ে না চাইলেও চোখের সামনে, কানের পাশে, হাতের ডগায়, মাথার আগায় যা সব চলছে, তাতে খুব চিন্তিত। না, চিন্তা দেশ নিয়ে নয়, দীপিকার মাথা নিয়েও নয়, বনশালির কুশপুতুল নিয়ে তো নয়ই। চিন্তা ওই টিয়াটিকে নিয়ে।
এ? টিয়া কোথা থেকে এলো!
সিনেমাটি না দেখে থাকলে, নিদেনপক্ষে রানী পদ্মিনীর গল্পটা না পড়ে থাকলে, নিশ্চয় ভূরু কুঁচকে এটাই ভাবছেন।
তা কেসটা এরকম।
বেশি সুন্দরী মেয়ে মানেই মেয়ের বাবারা বাই ডিফল্ট অমরেশ পুরি। এ দেশে অবশ্য তা ছাড়া উপায়ই বা কি! যাক সে অন্য প্রসঙ্গ।
তা পদ্মিনীও সুন্দরী। (সে তো দিপিকা পাডুকোনকে নাম ভূমিকা নায়িকা হিসেবে দেখেই আন্দাজ করেছেন) তাই পদ্মিনীর বাবারও মেয়েকে সামলানোর প্রবল চাপ। কারোর সাথে কথা বলা বারণ পদ্মিনীর। এখানেই এন্ট্রি টিয়ার। হ্যা পাখি। যে সে পাখি নয়, কথা বলা পাখি। তা তার সাথেই জমে ওঠে পদ্মিনীর, সরল বন্ধুত্ব। টিয়াটির বেশ চকচকে নামও দেওয়া হয়, হীরামন। এই বন্ধুত্বর চাকচিক্য দেখে, মেয়ের বাবার আবার চাপ। বোধহয় এই জন্য যে পাখিটি ছেলে। ছেলে পাখির সাথেও কথা বলা যথেষ্ট রিস্কি মনে করাতে পাখি-হত্যার হুকুম জারি হলো। ব্যাস, টিয়া অমনি জান বাঁচিয়ে ভাগ মিলখা। এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে হাত বদল হয়ে সে এবার রতন সিংহের পোষ্য।
গল্প এতদূর শুনলে, বেচারা টিয়া আর পদ্মিনীর বিচ্ছেদের দুঃখে মনটা কিরকম কিরকম ভারী হয়ে আসে শ্রোতার। হওয়ারই কথা।
তা টিয়ার হঠাৎ খেয়ে দেয়ে কাজ নেই, পদ্মিনীর রূপ নিয়ে গল্প করতে থাকে রতনের কাছে। ব্যাস রতনেরও, দিল মে লাড্ডু ফুটা। আরে বাবা, ছেলেদের হৃদয় হলো সেই ভালোবাসার তেঁতুল পাতা, সুজন-নজন আরও কতজনই আসুক না কেন, ঠিক ফিট হয়ে যায়। রতনেরও তাই। বাড়িতে অলরেডি বৌ বর্তমান, তবু লাড্ডু ফুটা তো ফুটা। এইসময় বলি টিয়ার আক্কেলটাই বা কি হ্যা? নিজে পাখি হয়ে ঝাড়ি মারলি, তার থেকে বেশি কিছু হবে না জেনে আরেকজনকে লেলিয়ে দিলি! পদ্মিনীর বাবার পাখিকেও সন্দেহ করা যে একেবারেই যুক্তিসঙ্গত, তা আর বলতে বাকি রাখে না।
এ প্রসঙ্গে বলে রাখি, মেয়ের বাবারা যদি এ লেখা পড়ছেন, একদম নোট করে নিন। কাউকে বিশ্বাস করা নয়। বাড়িতে কাক-চিল-এমনকি ভোডাফোনের কুকুরও যেন বসতে না পারে।
যাই হোক, সে টিয়াটি এমন ইয়ে, যে সে রতন সিংকে পদ্মিনীর ঠিকানা জানায়, উড়ে গিয়ে পদ্মিনীকে দেখা করার ডেট-টাইম অ্যাডভান্স জানিয়ে দেয়, মানে জিপিএস-হোয়াটস্যাপ এর কম্বো, ওই একাই হীরামন টিয়াটি। এরপর তো মহাকান্ড। সাত সমুদ্র পার করে রতন পৌঁছয়, হেব্বি ঝামেলা ঝঞ্ঝাট সামলে রতন-পদ্মর বিয়ে হয়, তাতেই কি শেষ? সাথে জীবন-যুদ্ধ সামলানো, সতীনের সাথে হাল্কা কূটকচালি ম্যানেজ করা ওসবও হয়। কিন্তু ও নিয়ে আমার গল্প নয়। কারণ ওতে টিয়া নেই। শুরুতেই বলেছি চিন্তা আমার টিয়া নিয়ে।
সুফি কবি জয়সির লেখা অনুযায়ী, ওই টিয়াই নাকি কি এক কারণে রতন -এর থেকে বহিষ্কৃত হয় এবং আরও একবার খুজলি করে, এবার একেবারে স্বয়ং আলাউদ্দিন খিলজীকে। আর তারপর তো খেল খতম, আর পয়সাও হজম হয়না। এই পোরশনটা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক আছে। মানে টিয়াটির চাপা-শয়তানি ঠিক কতদূর তা নিয়ে বিতর্ক আছে। আর এখানেই আমার চিন্তা।
প্রশ্ন হলো, চাপ তো এখনো আছে। টিয়াটি কোথায়? সে তো এখনো ফ্রি বার্ড। আরে বাবা, জানি জানি বলবেন এতো বছর হয়েছে, তো থোড়ি সে পাখি আছে নাকি। আরে বাবা, জন্মান্তর বলেও তো কথা আছে, তাই না? আর তাছাড়া তার যে বংশবৃদ্ধি হয়নি, তাই বা কে বলতে পারে। প্রেমে ভাংচি দেওয়া ইয়েরা ওই ওরই বংশধর যে নয়, তা কে বলতে পারে।
তাই আর কি, একটু চাপে। এরা আশেপাশেই ঘুরে ফিরে বেড়াচ্ছে। দেখছেনই এই এতবছর পরেও রতন-পদ্ম-খিলজী যা চাপে, তাতে আপনাদের কে বাঁচাবে।
তাই সবাই সাধু সাবধান।